বাছাই করা ১০ কোম্পানির প্রস্তাব বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ে

চসিকের বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ প্রকল্প

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ৬:৪৩ পূর্বাহ্ণ

বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প বাস্তবায়নে গত এক যুগে ২৫টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব নিয়ে আসে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) কাছে। এর মধ্যে একাধিক প্রতিষ্ঠানের সাথে সমঝোতা স্মারকও (এমওইউ) স্বাক্ষর করে চসিক। কিন্তু আলোর মুখ দেখেনি কোনো প্রকল্প। এ অবস্থায় নগরে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প বাস্তবায়নে ১০টি কোম্পানির প্রস্তাব বাছাই করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। গত ২৭ জানুয়ারি প্রস্তাবনাগুলো যাচাই করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে চসিকের সচিব আবু শাহেদ চৌধুরী আজাদীকে বলেন, বিভিন্ন সময়ে আমাদের কাছে যেসব প্রস্তাব এসেছিল তা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিলাম। সর্বশেষ প্রস্তাবনাগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয় বিদ্যুৎ বিভাগে পাঠিয়েছে। আশা করছি, যাচাই-বাছাই শেষে কোনো একটি প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্ত করা হবে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে বিদ্যুৎ বিভাগে পাঠানো তালিকায় থাকা কোম্পানিগুলো হচ্ছে ন্যানোটেক সলিউশন অ্যান্ড কনসাল্টেন্সি লিমিটিড, ইম্প্যাক্ট এনার্জি, ফাইভ কো-ফার্ম-এমই-এইচআইটিজেড-স্টার্টেম কনসোর্টিয়াম, অকল্যান্ড গ্রিন এনার্জি লিমিটেড, সিটি ডেডেভলপমেন্ট এনভায়নমেন্ট কোম্পানি, সোলার্স পাওয়ার লিমিটেড, সিক্স এলিমেন্ট এনার্জি, রাফা এনভায়রনমেন্টাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড এবং এসডিআইসি।
চসিক সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সাল থেকে বিভিন্ন কোম্পানি বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রস্তাব দিয়ে আসছে। পরবর্তীতে ২০১৫ সালে চট্টগ্রামসহ দেশের পাঁচটি সিটি কর্পোরেশনে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছিল বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। এর অংশ হিসেবে নগরীতে ২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনে ২০১৮ সালের ২১ অক্টোবর চসিকের সাথে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বাবিউবো)। পরবর্তীতে দুই দফা দরপত্র আহ্বান করলেও প্ল্যান্ট নির্মাণে কোনো প্রতিষ্ঠান সাড়া দেয়নি। ফলে উদ্যোগটি আটকে যায়।
এদিকে চসিকের কাছে বিভিন্ন সময়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের দেয়া প্রস্তাবনার মধ্যে সর্বশেষ আসে ২০২০ সালের ১৭ নভেম্বর। ওইদিন সোলার্স পাওয়ার লিমিটেডের অঙ্গ সংগঠন এনডিওরিং এনার্জির তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল তৎকালীন চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজনকে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রস্তাব দেয়। সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, সলিড রিকোভারড ফুয়েল (এসআরএফ) পদ্ধতিতে ৩০ একর জায়গায় প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব। এজন্য দরকার হবে আড়াই হাজার টন বর্জ্য। এসআরএফ পদ্ধতিতে কয়লা থেকে ফুয়েলের (তেল) মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৩০ শতাংশ কার্বন, ৮৫ শতাংশ নাইট্রোজেন, ৯০ শতাংশ সালফার, ৫০ শতাংশ ক্লোরিন নিঃসরণ করে কয়লার চেয়ে পানির মাধ্যমে ৪০ শতাংশ সমন্বয় সাধন করা যাবে প্রকল্পে, যা পরিবেশর জন্য উপযোগী।
এর আগে ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর চায়না পাওয়ার কোম্পানি বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ১৮০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছিল চসিককে। ওইদিন কোম্পানির ম্যানেজার হ্যানকুন তৎকালীন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের সাথে সাক্ষাৎ করে এ প্রস্তাব দেন। ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে ১০ একর জায়গা এবং দৈনিক দেড় হাজার টন বর্জ্য প্রয়োজন বলে জানিয়েছিল চায়না পাওয়ার কোম্পানি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকী ঘটছে মিয়ানমারে
পরবর্তী নিবন্ধইভিএমে ভোট নেয়ায় ব্যয় কমে অর্ধেক