বাংলাদেশের বায়ুমণ্ডলে মিথেন গ্যাসের ‘রহস্যময়’ ধোঁয়া শনাক্ত করেছে একাধিক আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা। মিথেন একটি গ্রিনহাউস গ্যাস, যা কার্বন ডাই অক্সাইডের তুলনায় বায়ুমণ্ডলে তাপমাত্রা এক শতাব্দী কালব্যাপী ৩০ গুণ বেশি ধরে রাখতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকা দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ। নিউইয়র্কভিত্তিক আর্থিক ও ডেটাসেবা প্রদানকারী এবং মিডিয়া কোম্পানি ব্লুমবার্গ তাদের একটি প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বায়ুমণ্ডলে শনাক্ত এই গ্যাসকে ‘রহস্যময়’ বলে উল্লেখ করেছে। গতকাল ৮ এপ্রিল) প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্রান্সের কোম্পানি কায়রোস এএএস চলতি বছর বাংলাদেশের উপরে ১২টি সর্বোচ্চ মিথেন নিঃসরণের হার শনাক্ত করেছে। জিএইচসিএসএটি নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠানের প্রেসিডেন্ট স্টিফেন জার্মেইন জানিয়েছেন, তারা বাংলাদেশের বায়ুমণ্ডলে মিথেন গ্যাসের ধোঁয়া শনাক্ত করেছেন। খবর বাংলানিউজের।
স্টিফেন জার্মেইন বলেন, এটি আমাদের দেখা সবচেয়ে শক্তিশালী টেকসই নির্গমন। এর উৎস সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত হতে পারছি না। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির ডেটা বিশ্লেষণকারী প্রতিষ্ঠান ব্লুফিল্ড টেকনোলজিসও বাংলাদেশের উপরে এই গ্যাস শনাক্ত করেছে। কোম্পানিটির প্রতিষ্ঠাতা যোতম এরিয়েল বলেন, আমাদের বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে পৃথিবীতে সর্বোচ্চ মিথেন নিঃসরণকারী দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে এটা দেখা যায়। বাংলাদেশের পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের একটি সাক্ষাৎকারের উদ্ধৃতি দিয়ে ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বিষয়টি সম্পর্কে সচেতন। মন্ত্রী বলেন, এটি সম্ভবত ধান ক্ষেত থেকে আসছে। যখন কৃষকরা তাদের ক্ষেত সেচের পর ভাসিয়ে দেন, তখন জলাবদ্ধ মাটির ব্যাকটেরিয়া বিপুল পরিমাণ গ্যাস তৈরি করতে পারে। আরেকটা উৎস হচ্ছে ল্যান্ডফিল গ্যাস। আমরা এটি কমিয়ে আনার চেষ্টা করছি। মিথেন গ্যাসের ছড়িয়ে পড়ার হার যদি কঠোর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনা না যায়, তাহলে জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধ করার জন্য বর্তমানে যেসব লড়াই সংগ্রাম চলছে, তাতে খুব একটা ফল পাওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।