করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবায় পার্বত্য চট্টগ্রামের দুটি জেলা সদর হাসপাতালে স্থাপন করা হচ্ছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট। প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে এ দুটি অক্সিজেন প্লান্ট বসানো হচ্ছে।
সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে এই অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপনের প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকছে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (এইচইডি)। এ দুটি জেলা সদর হাসপাতালে অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপনে এরইমধ্যে প্রশাসনিক অনুমোদন দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ২৫ নভেম্বর মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের নির্মাণ অধিশাখার উপ-সচিব মুহাম্মদ শাহাদত খন্দকারের স্বাক্ষরে জারিকৃত এক আদেশে এ অনুমোদনের তথ্য জানানো হয়। বান্দরবান ও খাগড়াছড়িসহ দেশের ১৩টি জেলা সদর হাসপাতালে এই অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপন বাবদ সবমিলিয়ে ৪৩ কোটি ৪২ লাখ ২৯ হাজার ৯৩৬ টাকার (প্রাক্কলিত) প্রশাসনিক অনুমোদনের কথা বলা হয়েছে আদেশে। এর মধ্যে ১০০ শয্যার বান্দরবান সদর হাসপাতালের জন্য প্রাক্কলিত হিসেবে ৩ কোটি ২৮ লাখ ৩৫ হাজার ৬১৪ টাকা এবং ১০০ শয্যার খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালের জন্য ৩ কোটি ৬৫ লাখ ৩৯ হাজার ৬৯৮ টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে।
বান্দরবান সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১০০ শয্যার বান্দরবান সদর হাসপাতালে আইসিইউ সুবিধা নেই। ছিল না সেন্ট্রাল অক্সিজেন সুবিধাও। আইসিইউ ও অক্সিজেন সুবিধা না থাকায় উপসর্গযুক্ত ও করোনা আক্রান্ত জটিল রোগীদের প্রত্যাশিত চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব হয়নি হাসপাতালে। সামান্য জটিলতা দেখা দিলেই ওই রোগীকে রেফার করতে হয়েছে চট্টগ্রাম শহরে। এরপরও হাসপাতালটিতে উপসর্গযুক্ত ও করোনায় আক্রান্ত ৮ শতাধিক রোগীকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. অংসুই মারমা।
তিনি বলেন, করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গযুক্ত রোগীদের একটি কমন জটিলতা শ্বাসকষ্ট। রোগীর শরীরের অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে গেলে দ্রুত অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে হয়। কিন্তু সদর হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সুবিধা ছিল না। জটিল রোগীদের জন্য আইসিইউ সুবিধাও নেই। যার কারণে করোনার চিকিৎসায় আমাদের বেগ পেতে হয়েছে। অন্তত অক্সিজেন সাপোর্টটা নিশ্চিত করতে পারলেও রোগীদের অনেক উপকার হয়। বিষয়টি আমরা মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছি। এখন সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট হচ্ছে। এটি স্থাপন হলে পুরো জেলার বিশাল সংখ্যক রোগী জরুরি মুহূর্তে এর সেবা পাবেন। অনেক রোগীকে হয়তো প্রাণে রক্ষা করা যাবে।
প্লান্টটি স্থাপনে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এসে এসেসমেন্ট করে গেছেন জানিয়ে সিভিল সার্জন ডা. অংসুই মারমা বলেন, জায়গাও চিহ্নিত হয়েছে। কাজ শুরু হলে ৩ সপ্তাহের মধ্যে প্লান্টটি স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হবে বলে আমাদের জানানো হয়েছে।