বন্দরে এই প্রথম ১শ টনের ক্রেন

যুক্ত হলো দুটি, এল ৫০ টনের আরো দুটি আগামী মাসের শুরুতে মূল অপারেশনে

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১৬ অক্টোবর, ২০২১ at ৯:৫৩ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরের ইকুইপমেন্ট বহরে যুক্ত হয়েছে ১০০ টন ধারণক্ষমতার দুটি ক্রেন। চট্টগ্রাম বন্দরের ইতিহাসে এত বেশি ধারণক্ষমতার ক্রেন এই প্রথম যুক্ত হলো। একই সাথে ৫০ টন ধারণক্ষমতার দুটি ক্রেনও বহরে যুক্ত হয়েছে। সম্প্রতি বন্দরে পৌঁছা ক্রেন চারটির টেস্টিং কমিশনিং শুরু হয়েছে। আগামী মাসের শুরুতে এগুলো মূল অপারেশনে যুক্ত হবে। অপরদিকে ৯০০ কোটি ব্যয়ে চারটি কী গ্যান্ট্রি ক্রেনসহ ১০৪টি ইকুইপমেন্টও আসতে শুরু করছে। আগামী ডিসেম্বর থেকে মার্চের মধ্যে চারটি কী গ্যান্ট্রি ক্রেনসহ অনেকগুলো ইকুইপমেন্ট বন্দরের বহরে যুক্ত হবে। নতুন এসব ইকুইপমেন্ট বহরে যুক্ত হলে বন্দরের স্বাভাবিক উৎপাদনশীলতা বেড়ে যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার চট্টগ্রাম বন্দরে বর্তমানে ১৪টি কী গ্যান্ট্রি ক্রেনসহ সর্বসাকুল্যে ১২৫টি ইকুইপমেন্ট রয়েছে। এসব ইকুইপমেন্টের অনেকগুলোরই আয়ুষ্কাল ফুরিয়ে গেছে। এতে করে বন্দরের সার্বিক কার্যক্রমে নানাভাবে সংকটের সৃষ্টি হচ্ছে। বহু ইকুইপমেন্টই কাজের সময় বিগড়ে গিয়ে বিপত্তি ঘটাচ্ছে। বন্দরের কার্যক্রম বাড়ার সাথে সাথে ইকুইপমেন্টের প্রয়োজনীয়তা এবং গুরুত্ব প্রতিদিনই বাড়ছে। এই অবস্থায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ৯শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪টি কী গ্যান্ট্রি ক্রেনসহ সর্বমোট ১০৪টি ইকুইপমেন্ট কেনার বড় একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। চারটি কী গ্যান্ট্রি ক্রেন ছাড়াও এই প্রকল্পের আওতায় ১০০ টন ধারণক্ষমতার ২টি, ৫০ টন ধারণক্ষমতার ২টি, ৩০ টন ধারণক্ষমতার ২টি, ২০ টন ধারণক্ষমতার ১২টি, ১০ টন ধারণক্ষমতার ২৩টি মোবাইল ক্রেন, ১১টি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন (আরটিজি), ২১টি ফোর-হাই স্ট্র্যাডেল ক্যারিয়ার, ৬টি টু-হাই স্ট্র্যাডেল ক্যারিয়ার, ৪টি রীচ স্টেকার (লোড), ২টি কন্টেনার মোভার, ৪টি ভেরিয়েবল রীচ ট্রাক (৪৫ টন), ২টি লগ হ্যান্ডলার-স্টেকার, ৪টি ফর্ক লিফট ট্রাক (২০ টন), ১টি ম্যাটেরিয়াল-মাল্টি হ্যান্ডলার (৩৫ টন), ২টি লো বেড ট্রেইলার, ২টি হেভী ট্রাক্টর-পাওয়ার রয়েছে।
উক্ত ১০৪টি ইকুইপমেন্টের মধ্যে শুধুমাত্র ৪টি কী গ্যান্ট্রি ক্রেন কেনার জন্যই খরচ হবে আড়াইশ’ কোটিরও বেশি টাকা। এই চারটি গ্যান্ট্রি ক্রেন বন্দরের বহরে যুক্ত হলে নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনাল (এনসিটি) পুরোপুরি গ্যান্ট্রি ক্রেনের আওতায় চলে আসবে। বন্দরে কন্টেনার হ্যান্ডলিংয়ের ক্ষেত্রে কী গ্যান্ট্রি ক্রেনই সর্বাপেক্ষা আধুনিক এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি হিসেবে বিবেচিত। অপরদিকে বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে ৮৪ টন ধারণক্ষমতার ৩টি মোবাইল ক্রেন রয়েছে। এগুলোই বন্দরের ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা বেশি ধারণক্ষমতার ক্রেন। নয়া ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ প্রকল্পের আওতায় দুইটি ১০০ টন ধারণক্ষমতার ক্রেন কেনা হয়েছে। ইতোমধ্যে এই দুইটি ক্রেনের চালান চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। ক্রেন দুইটি টেস্টিং করা হচ্ছে। এই দুইটি ক্রেন চট্টগ্রাম বন্দরের ইকুইপমেন্ট বহরের ইমেজ বাড়ানোর ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখবে। ৫০ টন ধারণক্ষমতার দুইটি ক্রেনও একই সাথে চট্টগ্রামে পৌঁছেছে। অন্যান্য ইকুইপমেন্টগুলোও আগামী মাস থেকে আসতে শুরু করবে। ডিসেম্বর থেকে মার্চের মধ্যে কী গ্যান্ট্রি ক্রেনসহ অনেকগুলো ইকুইপমেন্ট বন্দরে এসে পৌঁছাবে বলেও সূত্র জানিয়েছে। উল্লেখ্য, একটি কী গ্যান্ট্রি ক্রেন তৈরি করতে নয় মাসের মতো সময় লাগে। অর্ডার কনফার্ম করার পরই কেবল এসব ক্রেন তৈরির কার্যক্রম শুরু হয়। চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য অর্ডার দেয়া চারটি কী গ্র্যান্ট্রি ক্রেনের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে বলেও সূত্র জানিয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চিফ ইঞ্জিনিয়ার (যান্ত্রিক) মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম বলেন, ৪টি ক্রেন এসে গেছে। এর মধ্যে ১০০ টন ধারণক্ষমতার দুটি এবং ৫০ টন ধারণক্ষমতার দুটি ক্রেন বন্দরের বহরে যুক্ত হয়ে গেছে। তবে এগুলো মূল অপারেশনে যুক্ত হবে আগামী মাসের শুরুতে। সবগুলো ইকুইপমেন্টই এসে যাবে। পাইপ লাইনে রয়েছে। এগুলো বন্দরের ইকুইপমেন্ট বহরকে অনেক বেশি শক্তিশালী এবং সমৃদ্ধ করবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাম্প্রদায়িক শক্তিকে প্রতিরোধের আহ্বান কাদেরের
পরবর্তী নিবন্ধএক ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ