খাগড়াছড়িতে গতকাল রোববার বজ্রপাতে মা–ছেলেসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাঙামাটিতে মৃত্যু হয়েছে স্কুলছাত্রীর। এ সময় একই পরিবারের ৪ জনসহ ৬ জন আহত হয়েছেন।
খাগড়াছড়িতে ৪ জনের মৃত্যু : খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি জানান, খাগড়াছড়িতে বজ্রপাতে মা–ছেলেসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল ভোরে দীঘিনালার মাটিরাঙা ও রামগড়ে এই ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয়েছেন দুজন।
দীঘিনালার মেরুং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদা বেগম লাকি জানান, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বৃষ্টির সাথে বজ্রপাত হয়। এ সময় মধ্য বেতছড়ির গোরস্থান এলাকার ছাদেক মিয়ার বাসায় বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এতে তার বসতঘরে আগুন লাগে এবং ঘরের ভেতরে থাকা হাসিনা বেগম (৩০) ও তার ৮ বছরের সন্তান হানিফ মিয়া আগুনে অঙ্গার হয়ে যায়। হাসিনার আরেক সন্তান হাবিজ (১১) ঘরের বাইরে থাকায় বেঁচে যায়। পরে দীঘিনালা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিভিয়ে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. জাহিদ বলেন, ভোরে বৃষ্টির সময় বজ্রপাত হয়। পরে কান্নার শব্দ শুনে এসে দেখি আগুনে বসতঘর পুড়ছে। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। দীঘিনালা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা পংকজ বড়ুয়া বলেন, বজ্রপাতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ সময় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং মা ও শিশুর লাশ উদ্ধার করেন।
দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরুল হক বলেন, সকাল সাড়ে ৫টার দিকে বজ্রপাতে মা–সন্তান নিহত ও বসতঘর আগুনে পুড়ে যায়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার হাজাপাড়া এলাকায় গতকাল ভোরে বজ্রপাতে গনজ মারমা নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। পাড়ার কার্বারী চাইলাফ্রু মারমা বলেন, বজ্রপাতের সময় গরুঘরে গরু আনতে গিয়ে তার মৃত্যু হয়।
বজ্রপাতে জেলার মাটিরাঙার বেলছড়ি ইউনিয়নের শশী কার্বারী পাড়ায় এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তার নাম সমিকা ত্রিপুরা (২৬)।
মাটিরাঙা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃষ্ণ কমল দে বলেন, ঘরে ঘুমানো অবস্থায় ভোরে বজ্রপাতে সমিকা ত্রিপুরা গুরুতর আহত হন। পরে তাকে মাটিরাঙা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ সময় তার দুই সন্তান আহত হয়।
রাঙামাটিতে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু : রাঙামাটি প্রতিনিধি জানান, রাঙামাটির কাউখালী উপজেলায় বসতঘরে প্রার্থনারত অবস্থায় বজ্রপাতে এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় তার মা, দাদা–দাদি ও মামা আহত হয়েছেন। গতকাল সকাল ৬টার দিকে উপজেলার ফটিকছড়ি ইউনিয়নের মানিকছড়ি পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত অর্শা চাকমা (১৫) বর্মাছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী। সে মানিকছড়ি এলাকার অরুণ চাকমার মেয়ে। আহতরা হলেন অর্শার মা রঙ্গিলা চাকমা, দাদা যদু কুমার চাকমা, দাদি বনলতা চাকমা ও মামা স্বপন চাকমা। ঘটনার সময় তারা সবাই প্রার্থনারত অবস্থায় ছিলেন।
কাউখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজীব চন্দ্র কর ও ফটিকছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উষাতন চাকমা ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।