বঙ্গবন্ধু টানেলে বেপরোয়া গতির যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় একটি প্রাইভেট কারের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। এতে ৫ আরোহী অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন। ঘটনার পর রাত সাড়ে ১০ টায় টানেল কর্তৃপক্ষ ঘাতক বাসটি জব্দ ও ক্ষতিগ্রস্ত প্রাইভেট কারটি উদ্ধার করেছে। গতকাল রাত সাড়ে ৮ টায় বঙ্গবন্ধু টানেলের ভেতর এ দুর্ঘটনা ঘটে। বাস চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে।
দুর্ঘটনার শিকার প্রাইভেট কার আরোহী তৌসিফ জুনায়েদ আলম (২৮) জানান, পতেঙ্গা প্রান্ত দিয়ে রাত সাড়ে ৮ টায় পরিবারের বাবা–মাসহ ৫ সদস্য টানেল দেখতে আসেন। টানেলের ভেতর প্রবেশ করার পর হঠাৎ পেছন থেকে একটি যাত্রীবাহী বাস তাদের গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে চেপে দেয়। এরপর বাস যাত্রীরা নেমে আমাদের উদ্ধার করলেও বাস চালক ও হেলপার পালিয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, আমাদের যেভাবে ধাক্কা দিয়েছে, আমরা আল্লাহর রহমতে বেঁচে গেছি। রাঙ্গাদিয়া পুলিশ ফাঁড়ির এস আই আবুল বাশার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, টানেলের ভেতর চট্টমেট্রো জ ১১১৭৬০ যাত্রীবাহী বাস চট্টমেট্রো গ১১– ৫৯০১ প্রাইভেট কারকে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বঙ্গবন্ধু টানেলের ফায়ার এন্ড সেফটি ইনচার্জ জানান, দুর্ঘটনার পর গাড়ি দুটি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে কেউ হতাহত হয়নি। টানেলে ভোর ৬ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত ১৬ ঘণ্টায় ১১ হাজার ৪৭২ টি গাড়ি চলাচল করেছে। টোল আদায় হয়েছে ২৬ লক্ষ ০৩ হাজার ০৫০ টাকা। টোল প্লাজার ইনচার্জ মো. বেলায়েত হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এদিকে নগর পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া দৈনিক আজাদীকে বলেন, টানেল সাধারণ কোনো সড়ক কিংবা সেতু নয়। টানেলে কোন গাড়ি চলবে, কোন গাড়ি চলবে না, সেটি বলা আছে। জনগণের টাকায় নির্মিত ১০ হাজার কোটি টাকার টানেলে নিয়মিত দুর্ঘটনা হবে, এটি মানা যায় না। এর জন্য অবশ্যই টানেল ম্যানেজমেন্ট কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে। কিছুদিন আগে একটি প্রাডো গাড়িকে মাত্র ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। টানেলে দুর্ঘটনার কারণে ক্ষতি মেরামতের জন্য যে অর্থ ব্যয় হবে, সেই অর্থ কে বহন করবে? টানেল তো শুধু আমাদের দেশে হয়েছে তা নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টানেল আছে। কাজেই আমাদের গাড়ি চালকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এখন আপনি গতিসীমা নির্ধারণ করে দিলেন, এই গতিসীমা কে নজরদারি করবে। সবার আগে আমাদের সভ্য হতে হবে। টানেলের ব্যবহার জানতে হবে। একইসাথে প্রশাসনকে অবশ্যই দোষী গাড়ি চালক কিংবা মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে।