চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বলেছেন, আমাদের আমদানি করা ফার্নিচারগুলো কখনোই টেকসই ছিল না। কিন্তু দেশে তৈরি ফার্নিচারগুলো যথেষ্ট টেকসই ও নান্দনিক। তাই এই ফার্নিচারের প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। ফার্নিচার মেলা অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে ভূমিকা রাখছে বলে আমি মনে করি।
গতকাল সোমবার দুপুরে নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে ছয়দিনব্যাপী ১২তম চট্টগ্রাম ফার্নিচার মেলার সমাপনীর অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্যে রাখছিলেন। বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতি চট্টগ্রাম বিভাগ এ মেলার আয়োজন করে। ব্যবস্থাপনায় ছিল চিটাগাং ইভেন্টস। সমাপনী অনুষ্ঠানে একুশে পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেককে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
সিএমপি কমিশনার আরো বলেন, সরকার যেভাবে একটি ব্যবসাবান্ধব নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে চায়, সেটার ধারাবাহিকতায় সিএমপি বাণিজ্যবান্ধব পুলিশিং উপহার দেয়ার চেষ্টায় আছে। যারা বাণিজ্য করছেন, শুধু তারা নন, সকল নগরবাসীর জন্য একটি নিরাপদ নগরী গড়ে তোলার চেষ্টা করছি আমরা।
অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্যে আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেন, ফার্নিচার এখন আমাদের জীবনের অংশ হয়ে গিয়েছে। আপনারা স্লোগান দিয়েছেন-‘আমার দেশ, আমার আশা, দেশীয় ফার্নিচারে সাজাবো বাসা’। আমরা এক সময় বিশেষ করে ভালো ফার্নিচারের জন্য চীনের ওপর নির্ভরশীল ছিলাম। কিন্তু বর্তমানে সেটি আমরা কাটিয়ে উঠেছি। আপনারা যারা ফার্নিচারের ব্যবসা করেন, আপনাদের অধ্যবসায় ও ব্যবসা প্রসারণের কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। এতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে। আমার মনে হয়, আপনারা যখন এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে সংলগ্ন জিমনেশিয়ামে প্রথম মেলা করেছিলেন, তখন সেখানেও আমি উপস্থিত ছিলাম। সেই মেলার তুলনায় আজকের মেলা অনেক বড় পরিসরে এবং আরো সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আপনাদের মেলায় যদি সুন্দর সুন্দর ডিজাইনের ফার্নিচার ক্রেতা দর্শনার্থীদের দেখান, তাহলে তারা সেই ফার্নিচার কিনতে আগ্রহী হবে। যারা এখন কিনছেন না, তারা ভবিষ্যতে কেনার জন্য আগ্রহী হবেন– আমার মতে এটাই ফার্নিচার মেলার মূল উদ্দেশ্য। একটা কথা আছে, বাণিজ্যে বসতির লক্ষ্মী। অর্থাৎ বাণিজ্য যদি আপনি করেন, তবে লক্ষ্মী আপনার ঘরে আসবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ট্রাফিক উত্তর বিভাগের উপ–কমিশনারকে উদ্দেশ্য করে আজাদী সম্পাদক বলেন, এক দেশে কখনো দুই নিয়ম চলতে পারে না। ব্যাটারি রিকশার দৌরাত্ম্য এত বেড়ে গেছে যে সেগুলো এখন গলি থেকে রাজপথে উঠে এসেছে। এদের জ্বালায় আমার বাসার গলি থেকে বের হতেও পারি না, ঢুকতেও পারি না। আপনারা যদি এদিকে একটু নজর দেন, তাহলে যারা অলি গলিতে থাকেন তারা কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতি চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি সৈয়দ এএসএম নুরউদ্দিনের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মেলা কমিটির আহ্বায়ক নুরুল আজম খান, বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতি চট্টগ্রাম বিভাগের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিএমপির উপ–কমিশনার (উত্তর) মোখলেছুর রহমান, উপ–কমিশনার (উত্তর–ট্রাফিক) জয়নাল আবেদীন, বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতি আসকার দিঘি–ইউনিট সভাপতি সৈয়দ আইএম ইফতেখার উদ্দিন, আগ্রাবাদ এঙেস রোড ইউনিটের সভাপতি সাইফুউদ্দিন চৌধুরী দুলাল, বলিরহাট ইউনিটের সভাপতি মুজিবর রহমান, ফার্নিচার মেলার আহ্বায়ক কিিমটির সদস্য মোহাম্মদ জসিম, শাহিনুল হক টুটুল, মো. ইয়াছিন, মো. আবদুল মালেক ও চিটাগাং ইভেন্টসের চেয়ারম্যান মো. সাহাব উদ্দিন, ব্যবস্থাপন পরিচালক আয়েশা বেগম, চিটাগাং ইভেন্টসের সিইও মো. মনজুরুল ইসলাম রায়হানসহ প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মেলা কমিটির সদস্য মো. মহিউদ্দিন। অনুষ্ঠানে চিত্রাঙ্কনে বিজয়ী ও অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেয়া হয়। এছাড়া মেলায় অংশ নেয়া সেরা প্যাভিলিয়নগুলোকে পুরস্কৃত করা হয়।