ফাইয়াজের রিমান্ড বাতিল, শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর আদেশ

| সোমবার , ২৯ জুলাই, ২০২৪ at ৬:১৯ পূর্বাহ্ণ

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার মধ্যে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পুলিশ সদস্য গিয়াস উদ্দিন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ১৭ বছরের কিশোর হাসনাতুল ইসলাম ফাইয়াজকে অবশেষে শিশু হিসেবে ঘোষণা করে তার রিমান্ডের আদেশ বাতিল করেছে আদালত। গতকাল রোববার বিকালে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল৩ এর বিচারক রোকসানা বেগম হ্যাপীর আদালত এ আদেশ দেয়। খবর বিডিনিউজের।

শনিবার মহানগর হাকিম শান্তা আক্তার এই শিশুর পক্ষে জন্মসনদ, এসএসসি ফলাফল, নম্বরপত্র দেখালেও তাকে আরো ছয়জনের সঙ্গে সাত দিন রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দিয়েছিলেন। গতকাল আদালত সেই রিমান্ডের আদেশ বাতিল করে ফাইয়াজকে শিশু হিসেবে গণ্য করে গাজীপুরে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে।

তার আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ফাইয়াজকে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে আমরা ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন দায়ের করি। বিষয়টি নজরে আসলে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য হাকিম মো. হাসিবুল হক রিমান্ড বিষয়ে পুনরায় বিশেষ শুনানির ব্যবস্থা করেন। সংশ্লিষ্ট অপর একজন হাকিম আজ রিমান্ড বাতিল করে দেন।

এদিকে ফাইয়াজকে রিমান্ডে নেওয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একটি রিটের শুনানিতে বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাই কোর্ট বেঞ্চে এ তথ্য দেওয়া হয়। উচ্চ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, ফাইয়াজকে রিমান্ডে নেওয়া হবে না।

পরে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরসেদ বলেন, ফাইয়াজকে রিমান্ডে নেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে শিশু আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

হাই কোর্টের বিষয়টিও নিম্ন আদালতের নজরে আসে জানিয়ে আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা শিশু আদালতে শিশু আইন২০১৩ এর ২১ ধারা অনুযায়ী ফাইয়াজকে শিশু ঘোষণা করে শিশু আইনের সুযোগসুবিধা প্রদানের আবেদন করি। আদালত আমাদের আবেদন গ্রহণ করে তাকে শিশু হিসেবে ঘোষণা করেন। পরে গাজীপুরে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর আদেশ দেন।

তিনি আরও বলেন, জন্মনিবন্ধন ও এসএসসির সার্টিফিকেট অনুসারে ফাইয়াজের বয়স ১৭ বছর তিন মাস আট দিন। যাত্রাবাড়ী থানার এ মামলায় আদালতে ফাইয়াজের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আমরা বয়সের কারণে রিমান্ড বাতিলের আবেদন করি। এ মামলাটি শিশু আদালতে প্রেরণের অনুরোধ করি। তবে, আদালত তখন অপারগতা প্রকাশ করেন।

জন্মনিবন্ধন অনুসারে, হাসনাতুল ইসলাম ফাইয়াজের জন্ম ২০০৭ সালের ১৯ এপ্রিল। ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ঢাকার শামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে পাস করেছে সে। সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় মাতুয়াইল হাসপাতালের বিপরীত পাশে এক পুলিশ সদস্যকে মেরে ঝুলিয়ে রাখার মামলায় ১৭ জন আসামির মধ্যে ১৬ নম্বর আসামি এ শিক্ষার্থী।

পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে লাশ গুম ও এই কাজে সহায়তাসহ তার মোটরসাইকেল চুরির মামলায় আসামি হিসেবে ২৭ জুলাই ঢাকার নিম্ন আদালতে হাজির করা হয় ফাইয়াজকে। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা অন্য আসামিদের সঙ্গে ফাইয়াজকেও ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম শান্তা আক্তারের আদালত প্রত্যেক আসামির সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকোটা সংস্কার আন্দোলনের সব কর্মসূচি প্রত্যাহার
পরবর্তী নিবন্ধবিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রসহ ৯ জন একদিনের রিমান্ডে