ফাইনালের আশা জিইয়ে রাখল তামিমের বরিশাল

ক্রীড়া প্রতিবেদক | মঙ্গলবার , ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৫:২৭ পূর্বাহ্ণ

বিপিএলের এবারের আসরের নক আউট পর্বের সূচিতে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়। সচরাচর কোয়ালিফায়ার ম্যাচটি আগে অনুষ্ঠিত হলেও এবারে এরিমিনেটর ম্যাচটি করা হয়েছে আগে। আর তাতে একেবারে সহজ জয় তুলে নিয়ে ফাইনালে আশা জিইয়ে রেখেছে তামিম ইকবালের ফরচুন বরিশাল। বলা যায় এই ম্যাচে বরিশালের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। ম্যাচটি একেবারে একতরফাভাবে জিতেছে বরিশাল। ব্যাটেবলে চরম ব্যর্থ চট্টগ্রাম কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়ে তুলতে পারেনি। বরিশালের বোলাররা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে স্বল্প রানে আটকে রেখেছিল চট্টগ্রামের ইনিংস। আর পরে ব্যাটাররা সে রান তাড়া করে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় সহজেই। বিশেষ করে বরিশালের ক্যারিবীয়ান অলরাউন্ডার কাইল মেয়ার্সের অল রাউন্ড নৈপূন্যে সহজ জয় তুলে নিয়ে ফাইনালের পথেই থাকল বরিশাল। বিপিএলের এলিমিনেটর ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৭ উইকেটে উড়িয়ে ফাইনালের লড়াইয়ে টিকে রইল ফরচুন বরিশাল।

মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে টসে জিতে চট্টগ্রামকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রন জানায় বরিশাল অধিনায়ক। দ্বিতীয় ওভার থেকেই বিপর্যয় শুরু চট্টগ্রামের। দলের খাতায় ৪ রান যোগ হতেই ফিরেন দলটির সবচাইতে সফল ব্যাটার তানজিদ হাসান তামিম। একাদশে ফেরা ইমরানউজ্জামান তিনে নেমে ১৩ বল খেলে করেন কেবল ৭ রান। জশ ব্রাউন চেষ্টা করছিলেন দলকে টানার। কিন্তু তিনিও পারেননি বেশিদূর যেতে। ২০ রানে মেয়ার্সের বলে একটি সুযোগ দেওয়া ব্রাউন বিদায় নেন ২৪ বলে ৩৪ রান করে। চট্টগ্রাম আরেকটি বড় ধাক্কা খায় যখন টম ব্রুস ফিরে যান ১১ বলে ১৭ রান করে। এরপর দায়িত্ব ছিল সৈকত আলি ও অধিনায়ক শুভাগত হোমের ওপর। কিন্তু দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার পারেননি সময়ের দাবি মেটাতে। জেমস ফুলারকে ফ্লিক করে ছক্কা মারতে গিয়ে সৈকত ১১ রান করে ফিরতি ক্যাচ দেন তাইজুলকে। শুভাগত প্রথম বলেই জীবন পান ক্যাচ নেওয়ার সময় ম্যাককয় পিছলে পড়ায়। এরপর ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু থেমে যান ১৬ বলে ২৪ রান করে। মেয়ার্সের লেগ কাটারে উপড়ে যায় তার স্টাম্প। চট্টগ্রামের শেষ ভরসা ছিল রোমারিও শেফার্ড। তবে চাপের মধ্যে নিজের সহজাত ব্যাটিং তিনি করতে পারেননি। জেমস ফুলারের বলে ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার বিদায় নেন ১৬ বলে ১১ রান করে। এরপর লোয়ার অর্ডাররা কিছুটা লড়াই করে ১৩৫ রানে নিয়ে যান দলকে। স্বল্প পুঁজি, তবুও বরিশালের শুরুটা ছিল অস্বস্তিময়। মৌসুমে প্রথমবার ওপেন করার সুযোগ পেয়ে সৌম্য সরকার প্রথম ওভারেই উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন। পরের ওভারের প্রথম বলে সুযোগ দিয়েছিলেন তামিমও। কিন্তু আল আমিন হোসেনের বলে থার্ডম্যান সীমানায় ক্যাচ নিতে পারেননি সৈকত আলি। উল্টো চার হয়ে যায় তা। জীবন পেয়ে ওই ওভারে আরও দুটি চার মারেন তামিম। এরপর দুই প্রান্ত থেকেই রানের যে ফোয়ারা ছুটতে থাকেন তামিম এবং মেয়ার্স তাতে বাঁধ দিতে পারেনি চট্টগ্রাম। শুভাগতর এক ওভারে তিন ছক্কা দুই চারে ২৬ রান নিয়ে চট্টগ্রামকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন মেয়ার্স। আগের তিন ম্যাচে ৪৬, ৪৮ ও ২৫ রানের ইনিংসের পর মেয়ার্স এবার পেলেন হাফ সেঞ্চুরির দেখা। ২৫ বলে অর্ধশত রান করেন মেয়ার্স। এরপরই অবশ্য বিলাল খানের বলে আউট হয়ে যান তিনি। তবে ততক্ষণে ম্যাচের উত্তেজনা একরকম শেষ। দশম ওভারেই শতরান পেরিয়ে যায় বরিশাল। তামিমমেয়ার্সের জুটিতে আসে ৫৪ বলে ৯৮ রান। বাকি সময়টায় ধীরেসুস্থে খেলে দলকে জয়ের দিকে এগিয়ে নেন তামিম ইকবাল। ১১ বছর পর বিপিএলে ফিরে ডেভিড মিলার কিছুটা ব্যাটিং অনুশীলন সেরে নেন কোয়ালিফায়ার ম্যাচের আগে। ১৩ বলে ১৭ করে বিদায় নেন মিলার। মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে কাজ শেষ করেন তামিম। তখনো ৩১ বল বাকি। ৪৩ বলে ৫২ রান করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন তামিম। টুর্নামেন্টের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে চারশ ছুঁয়ে বরিশাল অধিনায়ক। তামিমের রান এখন ৪৪৩। ম্যান অব দা ম্যাচ হয়েছেন কাইল মেয়ার্স।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএনএইচটি হোল্ডিং নাসিরাবাদ এলামনাই স্পোর্টস কার্নিভালের ফাইনাল অনুষ্ঠিত
পরবর্তী নিবন্ধআহমদিয়া পাড়া জনকল্যাণ সংস্থার অলিম্পিক ফুটবল টুর্নামেন্ট সম্পন্ন