প্রার্থিতার দৌড়ে এগিয়ে জনসন ও সুনাক

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পদ

| শনিবার , ২২ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:৩৮ পূর্বাহ্ণ

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের পদত্যাগ ঘোষণার পর তার উত্তরসূরি হওয়ার সম্ভাবনাময় প্রার্থীদের মধ্যে প্রথমেই উঠে এসেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাকের নাম। ট্রাস দায়িত্ব নেওয়ার ছয়সপ্তাহ পর গত বৃহস্পতিবার পদত্যাগ ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই এ পদ নিয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। সময়ও খুব কম। এক সপ্তাহের মধ্যেই হবে কনজারভেটিভ দলের নেতা নির্বাচন। ট্রাসের জায়গায় যারা আসতে চান তারা এই দৌড়ে নামার জন্য প্রয়োজনীয় ১০০ কনজারভেটিভ আইনপ্রণেতার সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করছেন।

জনমত জরিপগুলোতে এরই মধ্যে কনজারভেটিভ পার্টির জনপ্রিয়তায় ধস নামতে দেখা গেছে। জাতীয় নির্বাচন হলে দল বিপর্যয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে। তাই সেপথে না গিয়ে দলীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বেছে নেওয়া হচ্ছে, যিনি জিতবেন তিনি হবেন ছয় বছরের মধ্যে যুক্তরাজ্যের পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী। বিজয়ী প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হতে পারে আগামী সোমবার কিংবা শুক্রবারে। এদিকে প্রধানমন্ত্রী পদের দৌড়ে নামার ঘোষণা দিয়েছেন হাউজ অব কমন্সের নেতা পেনি মর্ডান্ট। সম্ভাবনাময় প্রার্থীদের মধ্যে মর্ডান্টই প্রথম আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে নিশ্চিত করলেন যে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামছেন।

কিন্তু তারপরও সাবেক প্রধানমন্ত্রী জনসন, যিনি মাত্র মাস তিনেক আগেই ক্ষমতা থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন, তার নামই আবার সামনের সারিতে উঠে এসেছে। পাশাপাশি শোনা যাচ্ছে ঋষি সুনাকের নাম। ব্রিটিশ কনজারভেটিভ পার্টির (টোরি) বেশ কয়েকজন আইনপ্রণেতা জনসনেরই প্রধানমন্ত্রী পদে ফিরে আসা উচিত বলে ইতোমধ্যে মত প্রকাশ করেছেন। ওদিকে, ঋষি সুনাকের নাম সামনের সারিতে উঠে আসারও বেশি কিছু কারণ আছে। সাবেক অর্থমন্ত্রী হিসাবে তার অর্থনৈতিক সংকট সামাল দেওয়ার অভিজ্ঞতা আছে। তাছাড়া, গতবারের কনজারভেটিভ দলের নির্বাচনে সুনাক বেশিরভাগ এমপিরই ভোট পেয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত বিজয়ী ট্রাস হলেও তার সঙ্গে সুনাকের ভোটের ব্যবধান ছিল কম। সুনাকের প্রতি এমপিদের যে আস্থা আছে সেটিই তাকে এবারও জয়ের পথে নিয়ে যেতে পারে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

সম্ভাবনাময় কোন কোন প্রার্থী এ পর্যন্ত কতজন কনজারভেটিভ এমপি’র প্রকাশ্য সমর্থন পেয়েছেন তার একটি তালিকা দিয়েছে বিবিসি। প্রথমেই আছেন ঋষি সুনাক। তিনি পেয়েছেন ৫৬ এমপির সমর্থন। এরপরই আছেন বরিস জনসন। তিনি পেয়েছেন ৩৩ এমপির সমর্থন। তৃতীয় অবস্থানে আছেন পেনি মর্ডান্ট। তিনি পেয়েছেন ১৭ এমপির সমর্থন।

যেভাবে হবে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন : যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি এবার দ্রুতই নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ করতে চায়। তাই নতুন নেতা বেছে নেওয়া হয়ে যেতে পারে আগামী সোমবারের মধ্যেই। আর তা করার জন্য পার্লামেন্টের অন্তত ১০০ জন সদস্যের সমর্থন আছে এমন প্রার্থীরাই শুধু নেতৃত্ব প্রতিযোগিতায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন বলে নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে, নেতৃত্ব প্রতিযোগিতার জন্য দলটি থেকে সর্বোচ্চ তিন জন প্রার্থী হতে পারবেন। কারণ, হাউস অব কমন্সে টোরি দলের মোট ৩৫৭ জন এমপি আছেন। সোমবারের মধ্যে যদি মাত্র একজনও ওই পরিমাণ সমর্থন যোগাড় করতে পারেন, তাহলেও তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সরাসরি ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও পরবর্তী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হয়ে যাবেন। আবার যদি সোমবারের মধ্যে দুইজন প্রয়োজনীয় সমর্থন জোগাড় করতে পারেন, তাহলে ওইদিনই কনজারভেটিভ এমপিদের ভোট হবে। আর তিনজন প্রার্থী হলে সেক্ষেত্রে সবচেয়ে কম এমপির ভোট যিনি পাবেন তিনি প্রতিযোগিতা থেকে বাদ পড়বেন। এরপর বাকি দুই প্রার্থীর মধ্যে পছন্দের প্রার্থীকে তার নির্দেশসূচক ভোট দেবেন কনজারভেটিভ এমপিরা। এরপর কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যরা অনলাইনে ভোট দেবেন। এই ভোটে যিনি জয়ী হবেন তিনিই হবেন পার্টির নেতা এবং নতুন প্রধানমন্ত্রী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাঠজুড়ে কৃষকের স্বপ্ন
পরবর্তী নিবন্ধবারইয়ারহাটে একজনকে ১৮ মাসের কারাদণ্ড জরিমানা