প্রবীণদের সেবাই হোক আমাদের অঙ্গীকার

ফারজানা আজিম | শনিবার , ১৩ নভেম্বর, ২০২১ at ৭:০৬ পূর্বাহ্ণ

পহেলা অক্টোবর পালিত হলো আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস। জাতিসংঘ আন্তর্জাতিকভাবে দিবসটি প্রতি বছর পহেলা অক্টোবর পালনের সিদ্ধান্ত নেন ১৯৯০ সালে। প্রবীণদের সুরক্ষা এবং অধিকার নিশ্চিন্তের পাশাপাশি বার্ধক্যের বিষয়ে বিশ্বব্যাপী গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৯৯১ সাল থেকে এ দিবসটি পালন করা শুরু হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করা হয়। আমাদের দেশে বেড়েছে প্রবীণ মানুষের সংখ্যা, গড় আয়ু বাড়লেও বেশির ভাগেরই বাড়েনি কার্যকর কর্মকাল। ফলে প্রবীণদের অনেককেই দীর্ঘসময় বেকার থাকতে হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ‘অবহেলা নয়, প্রবীণদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে হবে। তাই উন্নত দেশ ও জাতি গঠনে নবীনের শক্তির সাথে প্রবীণের অভিজ্ঞতার সমন্বয়ের ভীষণ জরুরি।’
যুদ্ধ-বিগ্রহ দুর্ভিক্ষ কমে যাওয়াসহ নানা কারণে বেড়েছে মানুষের গড় আয়ু তাই বিশ্বব্যাপী বেড়েছে প্রবীণ জনগোষ্ঠী সংখ্যা। এ বয়সে এসে অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়েন। প্রবীণদের বিরাট একটা অংশ একাকীত্ব হওয়ার পাশাপাশি কর্মহীন হয়ে পড়েন। বার্ধক্য হল জীবনচক্রের শেষ ধাপ। বয়স বাড়ার সাথে সাথে অভিজ্ঞতা বাড়লেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। দুর্বল স্বাস্থ্য আর উপার্জন হীন একজন প্রবীণ সবার কাছে অবহেলিত উপেক্ষিত ও দুর্ব্যবহারের শিকার হয়। তাদের ভরণ পোষণ, সেবা যত্ন, চিকিৎসা ও আবাসন সমস্যা দেখা দেয়। হতাশা, বিষণ্নতা ও নিঃসঙ্গতায় চলে প্রবীণদের জীবন। প্রবীণদের সুরক্ষা ও অধিকার নিশ্চয়তার জন্য বিশ্বব্যাপী গণসচেতনতা সৃষ্টির প্রয়োজন। কালের প্রবাহের আবর্তিত মানব জীবনকাল স্থায়ী নয়। আজকে প্রবীণ একদিন নবীন ছিলেন, বর্তমানের নবীনরাই ভবিষ্যতের প্রবীণ। প্রবীণরাই নবীনদের জন্ম দিয়েছেন, প্রতিপালন করে বড় করেছেন। এভাবেই গড়ে উঠেছে সমাজ ও সভ্যতা। নবীনদের সুনাম-সুখ্যাতি ও আলোকিত হওয়ার ক্ষেত্রে অনন্য অবদান রয়েছে প্রবীণদের। যারা আজ নবীন বর্তমানে তাদের সমস্ত সাফল্য ও অর্জনের মধ্যে আছে প্রবীণের অস্তিত্ব। তাই তাদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন, মমতা ও সেবার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করা যাবে প্রবীণের অধিকার। স্বাস্থ্য সেবায় প্রবীণদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। দাদা-দাদী নানা-নানি যিনি হোন না কেন তাদের সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন করতে হবে। বদলে ফেলতে হবে দৃষ্টিভঙ্গি তাহলে বদলে যাবে সমাজ। তবেই ভালো থাকবে আমাদের প্রবীণরা। আর এই চর্চা শুরু করতে হবে পরিবার থেকেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসমপ্রীতির মেলবন্ধন আরো সুদৃঢ় হওয়া উচিত
পরবর্তী নিবন্ধ‘ডায়াবেটিস সেবা নিতে আর দেরী নয়’ ডায়াবেটিক রোগীর খাদ্য ব্যবস্থাপনা