গোলাম রব্বান প্রয়াত হয়েছেন ক’দিন হয়ে গেল, কিন্তু তাঁকে নিয়ে পত্র পত্রিকায় কেউ কিছু লিখেছেন বলে শুনিনি, নিজে চোখেও দেখিনি। অথচ তিনি ছিলেন রাজনীতির ভিতরের মানুষ, কর্মীসভায় যুক্তিপূর্ণ বক্তৃতা করতে পারতেন। তবে সবচেয়ে স্বচ্ছন্দ ছিলেন টেবিলটকে, ঘরোয়া আলোচনায়। তীক্ষ্ণবুদ্ধির অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন মানুষ ছিলেন।
আমাদের ভুলো মন, আমরা ভুলতে অভ্যস্ত, ভুলে থাকতে পারলেই বাঁচি। আমাদের জাতেরও একটা বদনাম আছে, বলা হয় বাঙালি বিস্মৃতিপরায়ণ জাতি। গোলাম রব্বান ১৯৬৬-৬৭ মেয়াদে চট্টগ্রাম জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন এম আর সিদ্দিকী সাহেবের ভগ্নিপতি রাউজানের কাজী আবু জাফর। কিন্তু তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়ে চলে যাওয়ায় রব্বান ভাইকেই পুরো টার্ম সাধারণ সম্পাদকের কাজ চালিয়ে নিতে হয়।
ষাটের দশকে চট্টগ্রামে দু’টি মিথ্যা মার্ডার কেস নিয়ে খুব মাতামাতি হয়েছিলো। একটা হচ্ছে ‘আলিমুল্লা মার্ডার কেস’। স্টেডিয়ামে আইয়ুব-ফাতেমা জিন্নার প্রজেকশন মিটিংয়ে মারামারি লেগে গেলে আলিমুল্লা চৌধুরীর মাথা ফেটে যায়। সেই ঘটনায় যে মামলা হয় তারই নাম ‘আলিমুল্লা মার্ডার কেস’। এম এ আজিজ, ইসহাক মিয়া, আবদুল্লাহ আল হারুন, ইদরিস আলমসহ আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগের অনেক নেতা কর্মীকে উক্ত মামলায় আসামী করা হয়েছিলো।
দ্বিতীয় মার্ডার কেসটা হলো ‘মনসুর মার্ডার কেস’। মধ্য ষাটের কোনো এক নিদাঘ অপরাহ্ন বেলায় ইউসুফ ভাই, রব্বান ভাই চট্টগ্রাম কলেজ থেকে আন্দরকিল্লা এসেছিলেন। জেনারেল হাসপাতালের সম্মুখবর্তী আন্দরকিল্লার রাস্তায় এন এস এফ নেতা মনসুরের সাথে তাদের দেখা হয়ে যায়। এন এস এফ-ছাত্রলীগ অহি নকুল সম্পর্ক তখন, মনসুরের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি শুরু হয়ে যায়। তা থেকে মনসুর ছুরি চালাতে চাইলে রব্বান ভাই রাস্তার পাশের ডাবওয়ালা ছিলো, তার কাছ থেকে দা নিয়ে মনসুরকে আঘাত করেন। সেই ঘটনা থেকে ইউসুফ ভাই, রব্বান ভাইকে আসামী করে ‘মনসুর মার্ডার কেস’ দায়ের করা হয়। বর্তমানে বিখ্যাত পরিবেশ বিজ্ঞানী মহেশখালীর ড. আনসারুল করিমও সে সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। আনসারুল করিম আওয়ামী লীগের নেতা, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ। তিনি মহেশখালী থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন। মনসুর লাঠি দিয়ে আঘাত করলে ইউসুফ ভাইয়ের মাথা ফেটে যায়। মনসুর সেই সময়ের প্রভাবশালী মুসলিম লীগ নেতা নওশা মিয়ার ছেলে। যাই হোক, এই মনসুর মার্ডার কেস সূত্রেও আমরা রব্বান ভাইকে মনে রাখতে পারতাম।
মুক্তিযুদ্ধে রব্বান ভাই বেশ উজ্জ্বল, গৌরবমন্ডিত ভূমিকা পালন করেন। সবচেয়ে সাহসী ভূমিকা পালন করেন পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের প্রতিরোধ যুদ্ধে।
মুক্তিযুদ্ধে তিনি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের হরিনায় ১নং সেক্টরের সদর দপ্তরে মেজর জিয়া ও ক্যাপ্টেন রফিকের সঙ্গে কাজ করতেন। মেজর মিয়া প্রথম দু’মাস ও ক্যাপ্টেন রফিক পরবর্তী সাত মাস ১নং সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন। আমাদের চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়েই গঠন করা হয়েছিলো এক নম্বর সেক্টর। গোলাম রব্বান সেনাবাহিনীর আস্থাভাজন ছিলেন, ছাত্রদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তো ছিলোই, কেন না তিনি ছাত্রনেতা ছিলেন। তো হরিনায় ছাত্রদের যে ক্যাম্প যাকে ইয়থ ক্যাম্প বলা হতো, রব্বান ভাইকে তার সঙ্গে লিয়াজোঁ রক্ষার দায়িত্ব দিয়েছিলেন জিয়া এবং রফিক।
কিন্তু ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদেরকে নিয়ে যখন বি.এল.এফ. (পরবতীকালে মুজিব বাহিনী) নামে পৃথক বাহিনী গঠিত হলো, তখন মণি ভাই (শেখ ফজলুল হক মণি), মান্নান ভাই (এম এ মান্নান) এবং ইউসুফ ভাই (এম এম ইউসুফ) রব্বান ভাইকে মুজিব বাহিনীতে নিয়ে আসলেন। কিন্তু মুজিব বাহিনীতে এসেও তিনি মুক্তিযুদ্ধের মূলধারায় থাকতে পারলেন না। মণি ভাই যেন তাঁকে নির্বাসন দণ্ড দিয়ে বনবাসে পাঠালেন। যাঁদের সঙ্গে তিনি রাজনীতি করতেন, যুদ্ধে তাঁদের সঙ্গে তিনি থাকতে পারলেন না। তাঁকে পাঠানো হলো পার্বত্য চট্টগ্রাম মুক্ত অভিযানে যার পোষাকি নাম ‘অপারেশন ঈগল’।
চট্টগ্রামের তিনজন বড়ো নেতা অপারেশন ঈগলে ছিলেন- ছালেহ ভাই (আবু ছালেহ), মহিউদ্দিন ভাই (মহিউদ্দিন চৌধুরী) এবং রব্বান ভাই। অপারেশন ঈগল ছিলো একটি ছদ্ম সামরিক অভিযান। যার উদ্দেশ্য ছিলো খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান এই তিনদিক থেকে অভিযান চালিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামকে মুক্ত করা এবং চট্টগ্রামকে ঘিরে ফেলা, যাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। বিএলএফ-এর চার কমান্ডারের মধ্যে সবার আগে মণি ভাইয়ের নাম আসে। তিনি ছিলেন পূর্বাঞ্চলের কমান্ডার, যার মধ্যে আমাদের চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামও অন্তর্ভুক্ত ছিলো । মণি ভাই নিজেই বেছে নিয়েছিলেন চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম, বিএলএফ দিয়ে এই অঞ্চল দখল করবেন এই ছিলো তাঁর পরিকল্পনা।
ওদিকে বিএলএফ-এর চিফ ইনস্ট্রাক্টর জেনারেল সুজন সিং উবানও ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেনদরবার করে বিএলএফ দিয়ে চট্টগ্রাম ও পাবর্ত্য চট্টগ্রাম বিজয়ের জন্য তাঁর এখতিয়ারে নিয়েছিলেন। কিন্তু গেরিলা বিশেষজ্ঞ উবান ভারতীয় সেনাবাহিনীর মনস্তত্ত্ব ঠিক বুঝতে পারেন নি। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিজয় যখন তাঁর হাতের মুঠোয় এসে গিয়েছিলো, তাঁর প্রিয় যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মণিকে নিয়ে চট্টগ্রাম বিজয় অভিযানের জন্য মনে মনে তৈরি হচ্ছিলেন, তখনই ভারতীয় সেনাবাহিনী ছোঁ মেরে চট্টগ্রাম দখলের এখতিয়ার তাঁর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়। হতোদ্যম উবান ও মণি ভাইয়ের মাথার চুল ছেঁড়া ছাড়া আর কোন উপায় ছিলো না।
ফলে চট্টগ্রাম বিজয় অভিযানে যুক্ত থাকতে পারলে ছালেহ ভাই, মহিউদ্দিন ভাই ও রব্বান ভাই- যুদ্ধে তাঁদের শৌর্য বীর্য দেখানোর যে সুযোগ পেতেন তা আর পাননি। এখানেই তাঁরা চট্টগ্রামের বিএলএফ কমান্ডারদের থেকে পিছিয়ে পড়েন। তিব্বতের আধ্যত্মিক নেতা দালাই লামা, যিনি পরে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন, তাঁর অনুগত তিন হাজার দুর্ধর্ষ গেরিলা যাদেরকে নিয়ে ভারতীয় বাহিনীর স্পেশাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্স গঠিত হয়েছিলো, তাঁদেরকে নিয়েই জেনারেল উবান অপারেশন ঈগল এর পরিকল্পনা করেছিলেন। দোহাজারিতে তাঁদের দেখে মানুষ মাউন্টেন ডিভিশন মনে করেছিলো। রব্বান ভাই তিন কলামে বিভক্ত অপারেশন ঈগলের মধ্যম কলাম বা রাঙামাটিগামী ব্রিগেডের ডেপুটি কমান্ডার ছিলেন। উত্তর কলাম বা খাগড়াছড়িগামী ব্রিগেডের ডেপুটি কমান্ডার ছিলেন আমার বন্ধু রণবিক্রম ত্রিপুরা; দক্ষিণ কলাম তথা বান্দরবানগামী ব্রিগেডের ডেপুটি কমান্ডার ছিলেন লোহাগাড়ানিবাসী কেপিএম এর ইঞ্জিনিয়ার ছিদ্দিক আহমদ।
অপারেশন ঈগল এত গোপনীয় অভিযান ছিলো যে, এ সম্পর্কে জানা লোকের সংখ্যা খুব কম এবং মুক্তিযোদ্ধারাও কজন জানেন আমি জানিনা। ছিদ্দিক ভাই ‘মুক্তি সংগ্রাম থেকে মুক্তিযুদ্ধে যাত্রা’ শিরোনামে লেখা তাঁর একটি ক্ষুদ্র পুস্তিকায় প্রথম অপারেশন ঈগল সম্পর্কে আলোকপাত করেন। এই বইটি ঢাকায় আজিজ সুপার মার্কেটের বেইজমেন্টে অবস্থিত রবিউল হোসেন কচির ‘স্বরাজ প্রকাশনী’ থেকে প্রকাশিত হয়।
ছিদ্দিক ভাই’র পর আমি লেখা আরম্ভ করি এবং রব্বান ভাইর অনুরোধে আমিও একটি ছোট বই লিখি। এরপর অপারেশন ঈগল নিয়ে এদিক ওদিক মৃদু আলোচনা হতে শোনা যায়। রব্বান ভাই কক্সবাজার জেলার অন্তঃপাতী চকরিয়া উপজেলার ভেওলামানিকচর গ্রামে ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মৃত জেবর মুল্লুক ও মাতা মৃত হাফেজা খাতুন। তিনি ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এম. এ ডিগ্রি লাভ করেন। পাকিস্তানি স্বৈরাচারী শাসক গোষ্ঠীর চোখ রাঙানিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যে কজন হাতে গোণা ছাত্রলীগ নেতা চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের রাজনীতিকে প্রতিষ্ঠিত করতে চরম ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছিলেন গোলাম রব্বান তাদের মধ্যে প্রথম সারিতে ছিলেন। ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন, ছাত্রদের ১১ দফা আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান সর্বোপরি ‘৭১ এর অসহযোগ আন্দোলনে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে ১৯৬৭ সালে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ফলে দীর্ঘদিন কারাভোগ করেন। তিনি ১৯৬৬-৬৭ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীকালে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কক্সবাজার জেলার প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কক্সবাজার জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রথম জাতীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।
১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করতে গিয়ে তাঁকে চরম নির্যাতনের শিকার হতে হয়। সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসন আমলে তিনি প্রায় তিন বৎসর বিশেষ ক্ষমতা আইনে কারাভোগ করেন। ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ ডিসেম্বর হাইকোর্টের রিটে মুক্তি লাভ করেন। ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দের ৩ নভেম্বর আওয়ামী লীগের ডাকে হরতাল পালনের সময় বি.এন.পি’র সন্ত্রাসীদের হাতে নিমর্মভাবে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে ডান হাত ভেঙ্গে গিয়ে দীর্ঘ দিন পঙ্গু হাত নিয়ে তাঁকে চলাফেরা করতে হয়েছিল।
এস এম ইউসুফের প্রসঙ্গ বাদ দিয়ে রব্বান ভাই এর আলোচনা সম্পূর্ণ হতে পারে না। ১৯৬৫-৬৬ খ্রিষ্টাব্দের দিকে কোন এক অলস মধ্যাহ্নে ইউসুফ ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য আমি ও আমার বন্ধু ছাত্রলীগ নেতা মনসার নুরুল ইসলাম ঘাটফরহাদবেগে ছাত্রলীগ নেতা সালাউদ্দিন ভাইয়ের (সালাউদ্দিন মাহমুদ) মাটির ঘরে যাই। সেখানে গিয়ে ইউসুফ ভাই, মোখতার ভাই, রব্বান ভাই, নজরুল ভাই (মগনামার নজরুল ইসলাম চৌধুরী, যিনি পরে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন) এবং সালাউদ্দিন ভাইকে একসঙ্গে বসে গল্পগুজব করতে দেখি। তখন সিটি-ডিষ্ট্রিক্ট ভাগ হয়নি। সেটা হয় ৭০ সালের নির্বাচনের মনোনয়ন ঘোষিত হওয়ার পর। ছাত্রলীগের উপর্যুক্ত নেতাদের সকলেই ছিলেন ডিস্ট্রিক্ট গ্রুপের, এম এ আজিজের অনুসারী। তখন আমি তাঁদের মধ্যে চমৎকার হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক দেখেছি। ৭০ এর মনোনয়নের পর সেই সম্পর্ক ভেঙে চুরে কোথায় চলে গেল। মোখতার ভাই একদিকে, ইউসুফ ভাই ও রব্বান ভাই আরেকদিকে। নজরুল ভাই কক্সবাজারে চলে যান। সালাউদ্দিন ভাই ইউসুফ ভাই ও রব্বান ভাইকে অনুসরণ করে সিটি গ্রুপে চলে গেলেন। জেএমসেন হলের সম্মেলনে হাশেম ভাই ও ছাবের ভাই যেবার জেলা ছাত্রলীগের যথাক্রমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হলেন, সেবার ইউসুফ ভাই সালাউদ্দিন ভাই ও সুলতান ভাইকে (সুলতান উল কবির চৌধুরী) দিয়ে পাল্টা প্যানেল দিয়েছিলেন। সালাউদ্দিন ভাই সভাপতি আর সুলতান ভাই সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী হয়েছিলেন।
চকরিয়ার বড়ইতলী নিবাসী গোলাম কাদের ডেপুটির বংশধর সালাউদ্দিন ভাই চকরিয়া ও কক্সবাজারের অনেককিছুতে প্রথম। তিনি চকরিয়ার প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান, কক্সবাজার জেলা পরিষদের প্রথম চেয়ারম্যান এবং চকরিয়ার সংসদ সদস্যও ছিলেন। বেশ বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন তাঁর। তিনিও ইউসুফ ভাই ও রব্বান ভাইয়ের অনুসারী।
ইউসুফ ভাই ছিলেন রব্বান ভাইয়ের ঘনিষ্ঠতম বন্ধু। আমি বলি ইউসুফ ভাই কায়া, রব্বান ভাই ছায়া। ইউসুফ ভাই যাতে প্রস্ফুটিত হতে পারেন সেজন্য রব্বান ভাই নীরবে কাজ করে গেছেন। মোমবাতি যেমন আমাদের আলো দেয়ার জন্য নিজে পুড়ে পুড়ে নিঃশেষ হয়ে যায়, রব্বান ভাইও তাই। ইউসুফ ভাই যে চট্টগ্রাম থেকে জাতীয় নেতৃত্বের আসনে অধিষ্ঠিত হতে পেরেছেন এতেই রব্বান ভাই’র সুখ ও স্বস্তি। তাঁর কথা খুব বেশি মানুষ জানলো না। সেজন্য আমি বলি গোলাম রব্বান একজন Unsung Hero বা অবিন্দিত নায়ক। যার ওপর কখনো পাদ প্রদীপের আলো পড়েনি। যার বন্দনাগীতে মুখরিত হয়নি কোনো রাজপথ, জনপদ। রব্বান ভাই আপনাকে সালাম।
লেখক : সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা, সাংস্কৃতিক সংগঠক