টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শুরুটা করেছে পাকিস্তান তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্ব্বী ভারতকে হারিয়ে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে পাকিস্তান এবারই প্রথম হারের স্বাদ দিতে পেরেছে ভারতকে। আগের ১২ ম্যাচের সবকটিতেই জয় ভারতের। ভারতের বিপক্ষে ক্রিকেট ম্যাচটা কেবল মাঠে সীমাবদ্ধ থাকেনা পাকিস্তানের। দু’দেশের বেলায় এটি কেবল একটি ক্রিকেট ম্যাচ নয়। এর সাথে জড়িয়ে থাকে অনেক কিছু। রাজনীতি, হুমকি, ধমকি আরো কত কি। চিরশত্রুর বিপক্ষে প্রতিশোধের মিশনে সফল পাকিস্তান। আজ আবার মাঠে নামছে পাকিস্তান। এবার প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। আর এই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটাকেও প্রতিশোধের ম্যাচ হিসেবে দেখছে পাকিস্তান। প্রশ্ন জাগতে পারে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আবার প্রতিশোধ কেন ? তারও অবশ্য একটি বিশেষ কারণ রয়েছে। এ মাসের শুরুতে পাকিস্তান সফরে গিয়েছিল নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দল। খেলার কথা ছিল ৫টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। ম্যাচের দিন ঠিক ম্যাচের আগ মুহুর্তে হোটেল থেকে বের হয়নি নিউজিল্যান্ড। তোলা হয় নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ। যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ে পাকিস্তানের মাথার উপর। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খোদ ইমরান খান ফোন করেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীকে। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। সিরিজ বাতিল করে দেশে ফিরে যায় নিউজিল্যান্ড দল। আর তাতে বেজায় চটেছেন পাকিস্তানের ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান রমিজ রাজা। তিনি তার ক্রিকেটারদের বলে দিয়েছেন বিশ্বকাপের ম্যাচে যেন এই অপমানের প্রতিশোধ নেয় তারা নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে। তাই সেদিক থেকে আজকের ম্যাচটি পাকিস্তানের জন্য প্রতিশোধের এক ম্যাচ। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৮ টায়।
ভারতকে হারিয়ে দারুণভাবে বিশ্বকাপ শুরু করেছে পাকিস্তান। দলের অধিনায়ক ভারত বধের পর সতীর্থদের বলে দিয়েছেন জয় উপভোগ করো, তবে হাওয়ায় ভাসিওনা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ড কঠিন একটি দল। সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ সময় কেটেছে তাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। দু’দলের সবশেষ সিরিজেও জয় নিউজ্যিলান্ডের। গত বছরের ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ড সফরে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজটি স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড জিতে নিয়েছিল ২-১ ব্যবধানে। যদিও পরিসংখ্যানের দিক থেকে এগিয়ে পাকিস্তান। দু’দলের ২৪ মোকাবেলায় ১৪টি জয় পাকিস্তানের। ১০টি ম্যাচ জিতেছে নিউজিল্যান্ড। তাছাড়া বিশ্বকাপে খেলতে আসার আগে বাংলাদেশের কাছে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছে কিউইরা। যদিও সে দলে বিশ্বকাপ স্কোয়াডের কেউ ছিলেন না। তবে পাকিস্তান যে দারুণ প্রস্তুতি নিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে এসেছে তার প্রমাণ তারা দিয়েছে প্রথম মাচে ভারতকে ১০ উইকেটে উড়িয়ে দিয়ে। তাছাড়া নিজেদের হোম গ্রাউন্ড খ্যাত আরব আমিরাতের শারজাহ স্টেডিয়ামে খেলবে পাকিস্তান নিজেদের চেনা কন্ডিশনে। তাই এই ম্যাচেও জয় ছাড়া আর কিছু ভাবতে নারাজ পাকিস্তান।
অপরদিকে নিউজ্যিলান্ড ম্যাচটাতে প্রতিশোধের কিছু না দেখলেও জয় দিয়ে শুরু করার বিকল্প কিছু ভাবছেনা। কারণ, এবারের বিশ্বকাপে আজই প্রথম ম্যাচে মাঠে নামবে কিউইরা। ওয়ানডে বিশ্বকাপের গত আসরে ফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে খালি হাতে ফেরা কিউইদের লক্ষ্য এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতা। আর মিশনে প্রথম প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। যারা এরই মধ্যে নিজেদের জাত চিনিয়েছে। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং সবদিক থেকে দারুণ ব্যালেন্সড একটি দল পাকিস্তান। সাথে বাবর আজমের নেতৃত্ব দলটাকে দিয়েছে অন্য মাত্রা। অপরদিকে নিউজিল্যান্ড দলটিও অভিজ্ঞ আর তারুণ্যের মিশেলে ঠাসা। কেননা উইলিয়ামসনের নেতৃত্বে দলে রয়েছে মার্টিন গাপটিল, কনওয়ে, ফার্গুসন, গ্লেন ফিলিপসের মত ব্যাটসম্যানরা। দলে রয়েছে ট্রেন্ট বোল্ট এবং টিম সাউদির মত দুই বারুদ ছড়ানো বোলার। নিশাম, শোধিদের স্পিনও বেশ ঘুরতে পারে। তাই ম্যাচটিও যে আজ বারুদ ছড়াবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। এখন দেখার বিষয় পাকিস্তানের প্রতিশোধের আগুনে নিউজিল্যান্ড পুড়ে নাকি কিউইরা জল ঢেলে দেয় পাকিস্তানের সেই আগুনে।