কথায় আছে না- শেষ ভালো যার সব ভালো তার। বাংলাদেশ আজ শেষটা রাঙাতে নামছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। যে লক্ষ্য নিয়ে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলতে গিয়েছিল টাইগাররা দুটি ম্যাচ জিতে তার কিছুটা পূরণ হয়েছে। তবে জিততে পারতো আরো একটি ম্যাচ। কিন্তু হাতের মুঠোয় থাকা ম্যাচটিতে ভারতের কাছে হেরেছে ৫ রানে। সে ম্যাচটা জিতলে আজ হয়তো সেমিফাইনালে খেলতো বাংলাদেশ। তবে শেষ চারের আশা যে এখনো একেবারে শেষ হয়ে গেছে তা কিন্তু নয়। তবে সেটা অনেক জটিল সমীকরণ। বাংলাদেশ আপাতত শেষটা রাঙাতে চায়। আর শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। তাদেরও সেমিফাইনাল ঝুলছে অনেক যদি, কিন্তুর উপর। নিজেদের প্রথম ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কাছে হারের পর জিম্বাবুয়ের কাছে হেরে সেমিফাইনাল থেকে একরকম ছিটকে পড়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু নেদারল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে আবার সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছে পাকিস্তান। তবে সেটাও কঠিন এক সমীকরণ। তারপরও পাকিস্তান প্রাণপণ চেষ্টা চালাবে একই সাথে দুটি লক্ষ্য পূরণে। আর তা হচ্ছে ম্যাচ জেতা এবং রান রেট বাড়িয়ে নেওয়া।
পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ বরাবরই আন্ডারডগ হিসেবে খেলতে নামে। এবারও যে তার ব্যতিক্রম হচ্ছে তা কিন্তু নয়। বিশ্বকাপের আগে নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে দুবারই হেরেছে বাংলাদেশ পাকিস্তানের কাছে। তাছাড়া শক্তি, সামর্থ্য আর সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স সব মিলিয়ে বেশ এগিয়ে পাকিস্তান। পরিসংখ্যানও কথা বলছে পাকিস্তানের পক্ষে। দুদলের ১৭ মোকাবেলায় পাকিস্তান জিতেছে ১৫ বার। দুটি জয় টাইগারদের। তার উপর পাকিস্তান এই টুর্নামেন্টে দুই ম্যাচে হেরে আহত সিংহে পরিণত হযেছে। কাজেই তারা যে বাংলাদেশের উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই বলে বাংলাদেশও কি ছেড়ে কথা বলবে? যেহেতু চাপটা বেশি থাকবে পাকিস্তানের উপর তাই বাংলাদেশের জন্য সেদিক থেকে একটা ভালো সুযোগ রয়েছে। এখন সেটাকে কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ। যদিও বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্সের পারদটা কেবলই নিম্নমুখী। বিশেষ করে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের চরম হতাশাজনক পারফরম্যান্স কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। যদিও দলের কোচ শ্রীধরন শ্রীরাম ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন করে পাকিস্তানের বিপক্ষে নামতে বলেছেন শিষ্যদের।
পুরো টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে চরম ব্যর্থ ইয়াসির আলী রাব্বি। তাই পাকিস্তানের বিপক্ষে তার খেলার সম্ভাবনা কম। তার জায়গায় ফিরতে পারেন সৌম্য সরকার। ফিরতে পারেন মেহেদী হাসান মিরাজ কিংবা নাসুম আহমেদ। সে ক্ষেত্রে আগের ম্যাচের চার পেসারের তত্ত্ব থেকে বেরিয়ে আসতে পারে বাংলাদেশ। তিন পেসার এবং দুই স্পিনার নিয়ে মাঠে নামার সম্ভাবনা রয়েছে পাকিস্তানের বিপক্ষে। পাকিস্তানের বোলিং লাইন বেশ শক্তিশালী। বিশেষ করে পেসাররা রয়েছেন দুর্দান্ত ফর্মে। পাশাপাশি শাদাব খান এবং মোহাম্মদ নেওয়াজের স্পিনও কম ভয়ংকর নয়। আর এখনো ঘুমিয়ে থাকা পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমের ব্যাট যদি জেগে উঠে তাহলে পরিস্থিতি আরো কঠিন হতে পারে। কাজেই কঠিন প্রতিপক্ষকে মোকাবেলা করার সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামতে হবে বাংলাদেশকে। দলের কোচ এবং অধিনায়কের চাওয়া কেবলই স্বাভাবিক ক্রিকেটটা খেলা। নিজেদের সেরাটা কিভাবে দেওয়া যায় সেটাই ভাবতে বলেছেন ক্রিকেটারদের।
সবচাইতে বড় কথা ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ থেকে শিক্ষাটা নিতে হবে বেশ ভালোভাবে। কারণ বড় দলগুলোর বিপক্ষে সুযোগ বারবার আসবে না। যখনই আসবে তখনই সেটাকে কাজে লাগাতে বললেন দলের কোচ। পাকিস্তানের বিপক্ষে ওপেনিংয়ে ফিরতে পারেন সৌম্য সরকার। সেক্ষেত্রে লিটন দাসকে নেমে যেতে হতে পারে ওয়ান ডাউনে। যদিও ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে ওপেনিংয়ে নেমে দারুন ব্যাটিং করেছেন তিনি। সে ম্যাচে দুর্ভাগ্যজনক রান আউটটি না হলে হয়তো ম্যাচই জিতিয়ে দিতেন লিটন। নিজেদের শেষ ম্যাচটি এখন রাঙানোর পরিকল্পনা নিয়েই আজ মাঠে নামবে বাংলাদেশ। সাকিবের আশা ম্যাচটা জিতেই তারা হাসিমুখে দেশে ফিরতে পারবেন।