‘তোরা দেখে যা আমিনা মায়ের কোলে/ মধু পূর্ণিমারই সেথা চাঁদ দোলে/ যেন ঊষার কোলে রাঙ্গা রবি দোলে/ কুল-এ- মখলুকে আজি ধ্বনি ওঠে কে এলো ঐ/ কলেমা শাহাদাতের বাণী ঠোঁটে কে এলো ঐ/ খোদার জ্যোতি পেশানিতে ফোটে কে এলো ঐ/ আকাশ গ্রহ তারা পড়ে লুটে কে এলো ঐ/ পড়ে দরুদ ফেরেশতা বেহেশতে সব দুয়ার খোলে/ মানুষে মানুষে অধিকার দিল যে জন/ ‘এক আল্লাহ ছাড়া প্রভু নাই’ কহিল যে জন/ মানুষের লাগি চির দীন বেশ ধরিল যে জন/ বাদশাহ ফকিরের এক শামিল করিল যে জন/ এল ধরায় ধরা দিতে সেই সে নবী/ ব্যথিত মানবের ধ্যানের ছবি/ আজি মাতিল বিশ্ব- নিখিল মুক্তি- কলরোলে।’
আজ ১২ রবিউল আউয়াল। বিশ্বমানবতার আনন্দ-উৎসবের মাস। এই দিনে আরবের মরু প্রান্তরে মা আমিনার কোল আলো করে এসেছেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)। আবার এই দিনে তিনি পৃথিবী ছেড়ে চলে যান। দিনটি যথাযথযোগ্য মর্যাদায় দেশব্যাপী উদযাপন করা হবে। প্রায় দেড় হাজার বছর আগে হযরত মুহম্মদ (সা.) পবিত্র নগরী মক্কায় রবিউল আউয়াল মাসে জন্মগ্রহণ করেন। মুসলিম উম্মাহর কাছে এ দিনটি ঈদে মিলাদুন্নবী হিসেবে পরিচিত। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে যথাযথ মর্যাদায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন করা হবে। চট্টগ্রামে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে জশনে জুলুস হবে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে গতবারের মতো এবারও সীমিত পরিসরে সম্পন্ন করা হবে। আজ সকাল ৮টায় বিবিরহাটের জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন আলমগীর খানকাহ থেকে জশনে জুলুস বের হবে। জুলুসে নেতৃত্ব দেবেন দরবারে আলিয়া কাদেরিয়া সিরিকোট শরিফের হযরত সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ (মজিআ)। এক সময় গোটা আরব অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। তারা আল্লাহকে ভুলে গিয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়েছিল। আরবের সর্বত্র দেখা দিয়েছিল অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা। এ যুগকে বলা হতো আইয়ামে জাহেলিয়াত। এই অন্ধকার যুগ থেকে মানবকুলের মুক্তি, তাদের আলোর পথ দেখাতে আল্লাহ তাআলা রাসুলুল্লাহকে (সা.) প্রেরণ করেন এই ধরাধমে। মহানবী অল্প বয়সে আল্লাহর প্রেমে অনুরক্ত হন এবং প্রায়ই হেরা পর্বতের গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকতেন। পঁচিশ বছর বয়সে তিনি বিবি খাদিজা নামের এক ধনাঢ্য মহিলার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
মাত্র ৪০ বছর বয়সে তিনি নবুয়তপ্রাপ্ত হন। আল্লাহ তাআলার নৈকট্য লাভ করেন। পবিত্র কোরআন শরীফে বর্ণিত আছে, ‘মহানবীকে সৃষ্টি না করলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পৃথিবীই সৃষ্টি করতেন না’। এসব কারণে এবং তৎকালীন আরবের বাস্তবতায় এদিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক বেশি। বাংলাদেশসহ বিশ্ব মুসলিম সমপ্রদায় এ দিনটি ঈদে মিলাদুন্নবী হিসেবে পালন করে। ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। দিবসটি সরকারি ছুটি। সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র করবে। ইলেকট্রনিক মিডিয়া দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে অনুষ্ঠান প্রচার করবে।
আহলা দরবার শরীফ : বোয়ালখালীর আহলা দরবার শরীফে আজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে কোরআন তেলাওয়াত, কেরাত, হামদ, নাত ও মহানবীর (সা.) জীবনী আলোচনা।