নারায়ণগঞ্জ জেলা হেফাজতে ইসলামের আমির ও হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা আবদুল আউয়াল পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন। তিনি জেলা আমিরের পদে আর থাকবেন না বলে জানিয়েছেন। তবে হেফাজতে ইসলামের একজন কর্মী হিসেবে তিনি সংগঠনে থাকবেন। হরতাল ইস্যুতে মহানগর নেতাদের অতি বাড়াবাড়ি ও পরদিন দোয়া মাহফিল ভিন্ন স্থানে করার অভিযোগ এনে আমিরের পদে থাকতে অনীহা আবদুল আউয়ালের।
গতকাল মঙ্গলবার পদত্যাগের বিষয়টি তিনি নিজেই বাংলানিউজকে জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে কেন্দ্রে পদত্যাগের বিষয়টি তিনি মৌখিকভাবে জানিয়ে দিয়েছেন এবং প্রয়োজন হলে লিখিতভাবে পদত্যাগপত্র দেবেন বলেও জানান তিনি। তিনি জানান, গত ২৮ মার্চ হরতালের দিন সকালে মসজিদে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, ডিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছুটে আসেন। পরে পুলিশ মসজিদের গেটের সামনে গাড়ি দিয়ে ব্যারিকেড দিয়ে রাখে। আইন-শৃক্সখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আমাকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন মিছিল বের করতে চাইলে অ্যাকশনে যাবে। তখন আমি সবার জানমালের স্বার্থে মসজিদের গেটের বাইরে যেতে বারণ করি। কারণ আমাদের তো অস্ত্র নেই। কিন্তু মহানগরের অতি উৎসাহী নেতারা মিছিল করতে চেয়েছিল। যদি সেদিন মিছিল করতে গিয়ে আমাদের ওপর হামলা হতো তখন তো এ আবদুল আউয়ালকে দোষারোপ করা হতো।
‘এ কারণে আমাদের উপর অনেকেই ক্ষুব্ধ। তারা আজ ডিআইটি মসজিদে বাদ আছর দোয়া না করে দেওভোগে করেছে। কারণ আমাকে তো বাদ দিয়েই দিয়েছে। তাই আমি আর দল করবো না। ভবিষ্যতে আর নেতৃত্ব দেবো না। মসজিদ-মাদ্রাসা নিয়েই থাকবো। আমার এখন বার্ধক্য, তাই আমি ভবিষ্যতে আর নেতৃত্বে থাকবো না।’
সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলাকালে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড, সানারপাড়, মাদানীনগর, শিমরাইল উত্তপ্ত থাকলেও নারায়ণগঞ্জ শহর ছিল একেবারে শান্ত। ভোর থেকে শহরের ডিআইটি জামে মসজিদের সামনে হেফাজত নেতারা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। তবে সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে একে একে নেতাকর্মীরা চলে যান।
শহরের ডিআইটি এলাকায় ভোর সকাল থেকে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা রেলওয়ে ডিআইটি মসজিদের ভেতরে অবস্থান নেন। ভোর থেকেই ডিআইটি মসজিদে পুলিশ, বিডিআরসহ আইন-শৃক্সখলা বাহিনী ঘিরে রাখে। সকাল ৭টার দিকে পুলিশ বেষ্টনীর মধ্যেই হেফাজতের নেতাকর্মীরা মসজিদের বারান্দা ও আঙিনার মধ্যে হরতালের পক্ষে স্লোগান দেন।
পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মসজিদে ঢুকে হেফাজতের জেলার সভাপতি মাওলানা আব্দুল আউয়ালের সঙ্গে কথা বলেন। পরে মসজিদের ভেতরে কিছু নেতাকর্মী অবস্থান নেন এবং বাকিরা বের হয়ে বাড়ি ফিরে যান।