পদ খালি নাই তবুও দেয়া হল দায়িত্ব

চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগ

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৬ জানুয়ারি, ২০২২ at ৬:১২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের স্থায়ী একটি পদে অস্থায়ীভাবে (দৈনিক ভিত্তিক) কর্মরত এক চিকিৎসককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এতে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ীভাবে কর্মরত চিকিৎসকগণের মাঝে। তাদের দাবি, পদোন্নতির মাধ্যমে স্থায়ীদের মধ্য থেকে যোগ্যতার ভিত্তিতে পদটি পূরণ করা হোক।
তাছাড়া যে পদে ওই চিকিৎসককে দায়িত্ব দেয় হয় সে পদে ১৫ বছর ধরে একজন চিকিৎসক কর্মরত আছেন। অর্থাৎ পদ শূন্য না থাকলেও দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এতে প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি হয়েছে। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম এ দায়িত্ব প্রদান করলেও বিষয়টি সম্পর্কে প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরীর সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদ ‘স্বাস্থ্য কর্মকর্তা’। সংস্থাটির ১৯৮৮ সালের অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী, এ পদে দুইজনকে নিয়োগ দেয়া যাবে। এর মধ্যে একজন হবেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (প্রিভেন্টিভ) এবং অপরজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (কিউরেটিভ)। ২০০৬ সাল থেকে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (প্রিভেন্টিভ) পদে কর্মরত আছেন ডা. মোহাম্মদ আলী। তবে গত ৩ জানুয়ারি একইপদে ডা. দীপা ত্রিপুরাকে নিজ পদের অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে অফিস আদেশ জারি করেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহীদুল আলম। যা গতকাল জানাজানি হয়।
জানা গেছে, ডা. দীপা ত্রিপুরা এখনো স্থায়ী হননি চসিকে। অথচ নিয়োগবিধি অনুায়ী, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা পদটি পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণযোগ্য। এক্ষেত্রে সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বা মেডিকেল অফিসার পদে পাঁচ বছরের চাকরি এবং কোনো স্বীকৃতি বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠান থেকে এমপিএইচ ডিগ্রি অর্জন করতে হবে। এর আগে ডা. দীপাকে চসিক পরিচালিত জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার থেকে ইনচার্জের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়। সেটা নিয়েও অসন্তুষ্টি আছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা না করে অস্থায়ীভাবে কর্মরত একজন চিকিৎসককে হেলথ অফিসারের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। হেলথ অফিসার হিসেবে একজন কর্মরত আছেন, তার পোস্টে আরেকজনকে কিভাবে দায়িত্ব দিল বুঝে আসছে না। বিষয়টি আমি প্রধান নির্বাহীকে কমপ্লেইন করেছি। নিয়ম অনুযায়ী, বিভাগের প্রধান হিসেবে আমার সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত ছিল। বিষয়টি মেয়র মহোদয়ের নলেজেও দিয়েছি। আমি চাই বিষয়টি সুন্দরভাবে সুরাহা করা হোক।
তিনি বলেন, একজন অস্থায়ী চিকিৎসককে ইনচার্জ করা হলো। তার উপর হেলথ অফিসার করা হলে প্রশাসনিক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। বর্তমানে স্বাস্থ্য বিভাগে সুন্দরভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এ অবস্থায় প্রশাসনিক কোন জটিলতা সৃষ্টি হোক তা চাই না। বর্তমানে চিকিৎসকরা সন্তুষ্টি নিয়ে কাজ করছেন, তাদের মধ্যে যেন অসন্তুষ্টি ছড়িয়ে না পড়ে। অস্তুষ্টি দেখা দিলে বিভাগ চালাতে সমস্যা হবে।
জানতে চাইলে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম দৈনিক আজাদীকে বলেন, যে পদে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সে পদ পূরণের জন্য যে ডিগ্রি থাকা দরকার তা স্থায়ীদের মধ্যে নাই। তাই অস্থায়ী থেকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। পদ শূন্য না থাকার পরও দায়িত্ব দেয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বলেন, আমাদের কাছে যে দরখাস্ত করেছে সেখানে পদটি খালি আছে বলেছে। তাই খালি পদে স্ব-বেতনে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বিষয়গুলো মেয়র মহোদয়ও জানেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডিজিটাল সার্ভের পর আর কোনো জরিপের প্রয়োজন নেই : ভূমিমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধদেশ নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না : প্রধানমন্ত্রী