ভারতীয় উপমহাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন আন্দোলন, সংগ্রাম, শিল্প-সাহিত্য, ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে সবকিছুতেই পটিয়া অগ্রগামী জনপদ হিসেবে ভূমিকা রেখে চলেছে।
সম্পদের ভাণ্ডার পটিয়া। বীর ও গুণীদের চারণভূমিও এ পটিয়া। তারপরও কেবল নেতৃত্বের অভাবে পটিয়া ছিল একটি অনুন্নত জনপদ। বিষয়টি অনুধাবন করেছিলেন জননেতা হুইপ সামশুল হক চৌধুরী। আগ্রহী হলেন পটিয়ার সংসদীয় আসনে নির্বাচন করার। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দলীয় মনোনয়নও পেলেন সামশুল হক চৌধুরী। আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে জয় করলেন গণমানুষের ভালবাসা। সংসদ সদস্য হিসেবে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হলেন। এরপর থেকে পটিয়ার উন্নয়নের জোয়ার বইতে শুরু করে। ‘আমি পটিয়ার, পটিয়া আমার’- স্লোগানকে সামনে রেখে তৈরি করেন তিনি পটিয়ার উন্নয়ন রূপকল্প। লক্ষ্য ও পরিকল্পনা- পটিয়ায় সুষম বণ্টন, মানুষের সমতা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
সংসদ সদস্য হয়ে সামশুল হক চৌধুরী দিনরাত চব্বিশ ঘণ্টা ছুটে গেছেন গ্রাম থেকে গ্রামে। ছুটে গেছেন গণমানুষের কাছে। পটিয়াকে সাজানোর লালিত স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে নেমে পড়েন উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে। প্রথমেই ফোকাস করলেন কৃষি খাতকে। কৃষকদের জন্য তাঁর প্রতিষ্ঠিত পটিয়া ফাউন্ডেশন থেকে হাতে নিলেন সেচ প্রকল্প। যাতে চাষাবাদের জন্য সেচের কোনো অসুবিধা না হয়। কৃষকদেরকে দিলেন ফসল কাটার মেশিন হারভেস্টর। শুধু সরকারিভাবে নয়, নিজের কষ্টার্জিত অর্থ এবং পারিবারিক ব্যবসা বাণিজ্য থেকে আয়ের টাকাও তিনি পটিয়া ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ব্যয় করেছেন পটিয়ার উন্নয়নে। এই ফাউন্ডেশন থেকে বিভিন্ন উৎসব, পূজা, ঈদে, ভর্তি পরীক্ষার সময় ফ্রি বাস সার্ভিস চালু করেছেন। সামর্থ্যহীন মানুষের বিয়ে শাদীতেও বাড়িয়ে দিয়েছেন সহযোগিতার হাত।
দুর্যোগে দিয়েছেন ত্রাণসামগ্রী। মুজিব শতবর্ষে একশজন মানুষকে হুইল চেয়ার দিয়েছেন যারা চলাচল করতে পারেন না। নারীদের স্বাবলম্বী করতে দেয়া হয়েছে সেলাই মেশিনের প্রশিক্ষণ। গত ২২ মার্চ অনুষ্ঠিত তিনদিনব্যাপী ‘পটিয়া উৎসব-২০২২’ এ ২ শ’ জনকে দেয়া হয়েছে ভ্যানগাড়ি। সাথে প্রত্যেকজনকে মূলধন হিসেবে দেয়া হয়েছে ১০ হাজার টাকা। যাতে করে তারা এই মূলধন দিয়ে শাকসবজি বিক্রিসহ ছোটখাট ব্যবসা করে পরিবার চালাতে পারে। স্বাবলম্বী হতে পারে। এ ধরনের অনেক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ পটিয়া ফাউন্ডেশন নিয়েছে; বাস্তবায়ন করেছে এবং করছে। ২০১১ সালে হুইপ সামশুল হক চৌধুরী জনতার মুখোমুখি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেছেন। এটি উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের জন্য একটি উদাহরণ। এই পটিয়াতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চট্টগ্রাম বিভাগীয় পর্যায়ের জনসভা করেছেন অত্যন্ত সফলভাবে।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানও পটিয়াকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাও পটিয়াকে দুই হাতে ঢেলে দিয়েছেন সামশুল হক চৌধুরীর কর্মদক্ষতা ও নেতৃত্বগুণ দেখে। চট্টগ্রাম বিভাগের অন্যান্য উপজেলা থেকে তুলনামূলকভাবে পটিয়ার উন্নয়ন চোখে পড়ার মত। সামশুল হক চৌধুরী কেবল পটিয়ার উন্নয়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেননি। সূদুরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তিনি নির্মাণ করেছেন বাইপাস সড়ক। যাতে করে পটিয়া যেন জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্নভাবে অবদান রাখতে পারে। এই বাইপাস সড়ক কক্সবাজারগামী তথা দক্ষিণ চট্টগ্রামের যাত্রীদের দুর্ভোগ অনেকাংশে লাঘব করেছে। এখন কর্ণফুলী নদীতে বঙ্গবন্ধু টানেলের সাথে যোগাযোগ সহজতর করার জন্যে নির্মাণ করা হচ্ছে সংযোগ সড়ক। এই সংযোগ সড়ক হয়ে গেলে পুরো দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষ খুব সহজেই বঙ্গবন্ধু টানেলের সাথে যুক্ত হতে পারবে।
সামশুল হক চৌধুরীর উন্নয়ন পরিকল্পিত উন্নয়ন এবং টেকসই উন্নয়ন। এ পর্যন্ত পটিয়াতে সম্পন্ন হয়েছে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ, যা সত্যিকার অর্থেই বিস্ময়ের। একজন আদর্শ জননেতা ভবিষ্যতের কথা, আগামী প্রজন্মের কথা চিন্তা করেই উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নে বিশ্বের রোল মডেল। বাংলাদেশকে তিনি এক অনন্য মাত্রায় নিয়ে গেছেন তাঁর দক্ষ নেতৃত্বে। আমরা মনে করি এক্ষেত্রে পটিয়াও একটি মডেল। উন্নয়ন অনেক জায়গায় হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী সব জায়গায় উন্নয়নের বরাদ্দ দিয়েছেন। কিন্তু দক্ষ নেতৃত্বের অভাবে অনেক জায়গায় তা যথার্থভাবে প্রতিফলিত হয়নি। আমরা পটিয়াকে সাজানোর জন্য পটিয়া ফাউন্ডেশন এবং হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর সাথে কনসাল্ট করে ২০৩০ সালে কেমন পটিয়া দেখতে চাই তার একটা রূপকল্প দাঁড় করিয়েছি।
পটিয়ার উন্নয়নকে তিনভাগে ভাগ করে এগুতে চাই আগামীর উন্নয়ন রূপকল্প ধরে। আমাদের মূল ফোকাস শিক্ষা। কারিগরি শিক্ষা এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করা আমাদের প্রধান লক্ষ্য। দক্ষিণ চট্টগ্রামে কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নেই। এই পাবলিক বিশ্ববিদ্যলয়ের জন্য পটিয়া ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সরকারের বিভিন্ন জায়গায় প্রস্তাব করেছি। কাজও শুরু করেছি। একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এই পটিয়ায় স্থাপন করতে চাই। যাতে করে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি পটিয়া একটি শিক্ষানগরী হিসেবে গড়ে উঠবে। যেন দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষ শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়। এটাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।
বৃহত্তর পটিয়ায় যুগোপযোগী আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছি আমরা। আমাদের অধিকাংশ রাস্তা হয়ে গেছে। এখন একটা গ্রামের সাথে আরেকটা গ্রামের সহজ যোগাযোগ স্থাপন করতে চাই। প্রয়োজনীয় গণপরিবহনের অভাব এর প্রধান অন্তরায়। এজন্য গ্রামীণ অর্থনীতিও বিস্তৃত হতে পারছে না। যেমন কোনো একটা মানুষ মালিয়ারা থেকে শোভনদণ্ডী যেতে চাইলে তাকে একবার সিএনজিতে উঠতে হয়, একবার বাসে উঠতে হয় অথবা রিকশায় উঠতে হয়। এটা একটু কষ্টদায়ক ও সময়সাপেক্ষ। বিভিন্ন ইউনিয়নের সাথে ইউনিয়নের সহজ ও সাশ্রয়ী সংযোগ স্থাপন করতে আমরা পটিয়ায় ইলেকট্রিক কোস্টার বা বাস সার্ভিস চালু করতে চাই। এ লক্ষ্যে চাইনিজ একটি কোম্পানির সাথে কথা চালিয়ে যাচ্ছি। এটা পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপেও হতে পারে। সরকারি উদ্যোগেও হতে পারে। বেসরকারি উদ্যোগেও হতে পারে। কিন্তু আমরা চাই পটিয়াতে একটি স্মার্ট কার্ড নির্ভর যাতায়াত ব্যবস্থা গড়ে তুলতে, যেটি হবে সম্পূর্ণ দূষণমুক্ত ইলেকট্রিক বাস ব্যবস্থা।
পটিয়ার অনেক মানুষ প্রবাসে থাকেন। সেইসব প্রবাসীদের জন্য একটি প্রবাসী কার্ড চালু করার পরিকল্পনাও আমাদের আছে। যাতে করে তাদের পরিবার থানা, কোর্ট, মেডিকেলসহ সব জায়গায় যেন প্রায়োরিটি সার্ভিস পেতে পারে। একইভাবে বীর মুক্তিযোদ্ধা, সিনিয়র নাগরিকদের জন্য এই প্রায়োরিটি কার্ড ব্যবস্থা চালু করতে চাই।
পটিয়ায় এক হাজার আসন বিশিষ্ট অত্যাধুনিক শেখ কামাল অডিটোরিয়াম নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। প্রথম উপজেলা হিসেবে পটিয়া পৌরসভাকে ওয়াসার মাধ্যমে শতভাগ সুপেয় পানি সরবরাহের কাজও চলমান রয়েছে।
স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে বেশকিছু যুগান্তকারী পদক্ষেপ হাতে নেয়া হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে পটিয়া হাসপাতালকে শীঘ্রই ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হচ্ছে। পাশাপাশি পটিয়ায় একটি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ স্থাপনে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামে একটা পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ নেই। পটিয়া হচ্ছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের হৃদপিণ্ড। পটিয়াতে এই দুটি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা গেলে পুরো দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসী সুবিধা পাবে। খরনার দিকে যদি এ দুটি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা হয় তাহলে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা, রাঙ্গুনিয়ার লোকজন সহজেই সেবা নিতে পারবে। আমরা শুধু পটিয়া নিয়ে ভাবছি না। আমাদের ভাবনায় রয়েছে পুরো দক্ষিণ চট্টগ্রামের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। পটিয়া ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গরিব লোকজন যাতে নূ্্যনতম খরচে চিকিৎসা সেবা পায় তার জন্য আমরা কমিউনিটি ডায়গনোস্টিক সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী দু’বছরের মধ্যে এটি করার পরিকল্পনা রয়েছে। আজকের বাস্তবতায় আমরা উপলব্ধি করি, রোগ নির্ণয় এখন বড় চ্যালেঞ্জ। রোগ নির্ণয় করতে সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আর্থিকভাবেও। প্রতিবছর আমরা এই ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে দশলাখ টাকা ভর্তুকি দেব এবং এটি হবে বাংলাদেশের প্রথম উদ্যোগ। যেখানে পটিয়া ফাউন্ডেশনের সাথে স্থানীয় শিল্পপতিরা অবদান রাখতে পারবেন।
চিত্তবিনোদনের জন্য দক্ষিণ চট্টগ্রামে কোনো বিনোদন কেন্দ্র নেই। হাইদগাঁওয়ের বিশাল একটা অঞ্চল আছে যেটাকে আমরা বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত করার জন্য একটা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। সে লক্ষ্যে সরকারি এবং বেসরকারিভাবে কাজও শুরু করছি। ৫০ থেকে ১শ’ একর জায়গায় একটি আধুনিক থিম পার্ক গড়ে তোলা হবে যাতে করে মানুষ পাহাড়ি এই অঞ্চলের সৌন্দর্যটা উপভোগ করতে পারবে। হবে কর্মসংস্থানও। হাইদগাঁওয়ের বিস্তীর্ণ অঞ্চল দৃষ্টিনন্দন এবং মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে বিভিন্ন ক্যাবল কার, মিউজিক্যাল ফাউন্টেনের সাথে এডভেঞ্চার ট্যুরিজম চালুর উদ্যোগ নেয়া হবে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ সম্পর্কে এ অঞ্চলের মানুষকে আরো বেশি জানানোর জন্য, এ অঞ্চলের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস তুলে ধরার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও মিনি মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে। নতুন পৌরসভাকে এঙটেনশন করে পটিয়ার বাইপাসের দু’ধারে পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন করা হবে। এটি হবে বাংলাদেশের প্রথম স্মার্ট পৌরসভা। জাইকা অথবা দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সাথে সমীক্ষা করে এটি গড়ে তোলা হবে।
এই অঞ্চলের দীর্ঘদিনের দাবি পটিয়াকে জেলা ঘোষণা করা। আমাদেরও বাস্তবতার কাছে ফিরে যেতে হবে। হয়ত বা আমরা জেলা ঘোষণা করতে পারবো না। কিন্তু চট্টগ্রাম যেহেতু একটা বিশাল জেলা এবং এত বড় জেলায় এত কম রিসোর্চে কাজ করা আমরা মনে করি সুষম উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটা বিশাল বাধা। চট্টগ্রামে দক্ষিণ জেলা নামে একটি জেলা প্রতিষ্ঠা করে পটিয়াতে হেড কোয়ার্টার স্থাপনের দাবিতে জনমত গঠন এবং বিভিন্ন সভা সমাবেশ করার ক্ষেত্রে পটিয়া ফাউন্ডেশন অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। পটিয়া হেডকোয়ার্টার হয়ে গেলে উন্নয়ন ও জনআকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়ে যাবে।
১২শ কোটি টাকার বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও হুইপের আন্তরিক প্রচেষ্টায়। এটা হয়ে গেলে পটিয়ার মালিয়ারা-বাকখাইন জুড়ে বিশাল একটি এলাকা কৃষিকাজের আওতায় চলে আসবে। তখন অঞ্চলটা স্মার্ট এগ্রিকালচার জোনে পরিণত হবে, যাতে তথ্য প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করা যাবে। যেহেতু এখানে খাল বিল সবই আছে তাতে করে একটি পূর্ণাঙ্গ এগ্রিকালচার জোন এবং এগ্রিকালচাল রিসার্চ সেন্টার গড়ে তুলতে চাই।
ভেনিস নগরীতে খালের মাধ্যমে সেখানকার মানুষ বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করে। আমরাও খাল খনন শেষে কিছু ছোট ছোট বোট চালু করে খালের নেটওয়ার্কিং ব্যবস্থা চালু করতে চাই। যাতে এক গ্রামের মানুষ আরেক গ্রামে খালের নেটওয়ার্কিং ব্যবহার করে সহজেই যাতায়াত করতে পারে। পণ্য আনা নেয়াও করতে পারবে। এটি চালু করা গেলে সড়কের উপর থেকে চাপ কমে আসবে।
আমাদের বর্তমান সরকার ক্রীড়াবান্ধব সরকার। আমাদের হুইপও ক্রীড়াপ্রেমী। আমরা বিভিন্ন একাডেমি চালু করতে চাই যাতে করে ব্যাপকভাবে খেলোয়াড় তৈরি হয়। খেলাধুলার জন্য একটি মিনি স্টেডিয়াম গড়ে তোলা হচ্ছে। এই মিনি স্টেডিয়ামের সাথে ইনডোর গেইমিং ফ্যাসিলিটি রাখতে চাই। যাতে থাকবে ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস থেকে শুরু করে আরো আধুনিক নানা ইভেন্ট।
অন্যদিকে পটিয়া সাংস্কৃতিকভাবে একটি অগ্রগামী জায়গা। এখানে প্রীতিলতা সাংস্কৃতিক কমপ্লেঙ আছে। পাশাপাশি আমরা গ্রামীণ সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণের জন্য ইউনিয়নভিত্তিক পটিয়া ফাউন্ডেশন প্রতিবছর একটা বরাদ্দ দেবে যাতে করে সারা বছর সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড চালু থাকে। সাংস্কৃতিক এই চর্চার মধ্য দিয়ে জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদ, মাদক এগুলো থেকে যুব কিশোর সমাজ মুক্ত থাকবে। অন্যদিকে তথ্য ও প্রযুক্তি ডিজিটাল বাংলাদেশের সাথে সমন্বয় রেখে বিভিন্ন ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, নার্সিং এবং কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো চালু হয়ে গেলে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এ ব্যবস্থাও হাতে নিতে চাই।
পটিয়ায় পরিবেশবান্ধব তিনটি মিনি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে। এগুলো হচ্ছে জিরি ও কুসুমপুরা এলাকা, শ্রীমাই ও খরনা এলাকা, মালিয়ারা ও বাকখাইন এলাকা। এই তিনটি বিশেষায়িত শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সাথে আমরা প্রস্তাব রাখব। অন্যদিকে পটিয়ার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়নের কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থাকে জোরদার করা হবে। সিসিটিভির আওতায় নেয়া হবে সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহকে।
আমরা আসলেই ভাগ্যবান। হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর মত একজন উন্নয়নবান্ধব নেতা পেয়েছি। তাঁর সাথে আমাদের পটিয়ার গর্ব এস আলম গ্রুপের সাইফুল আলম মাসুদ, ড. আহমেদ কায়কাউসের মত বিভিন্ন সেক্টরে পটিয়ার যেসব গুণী আছেন, তাঁরা পটিয়ার উন্নয়নের ব্যাপারে যথেষ্ট আন্তরিক। তাঁদের ভূমিকা প্রশংসার দাবিদার। পটিয়া ফাউন্ডেশন এক্ষেত্রে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। তাঁদের সকলকে কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি। তাঁদের সহযোগিতা ও সমর্থন ছাড়া পটিয়ার উন্নয়নকে এগিয়ে নেয়া সহজ হতো না। পটিয়ার কৃতীসন্তানদের নিয়ে একটি ফোরাম গঠন করার চিন্তা-ভাবনা চলছে। সেই ফোরাম ও পটিয়া ফাউন্ডেশন যৌথভাবে পটিয়ার উন্নয়নে কাজ করবে। উন্নয়ন যেন টেকসই উন্নয়ন হয়, সেই লক্ষ্যে আমাদের কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে। পরিশেষে বলতে চাই- সুষম উন্নয়ন, সমন্বিত উন্নয়নের মাধ্যমে পটিয়া হবে বাংলাদেশের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ একটি উপজেলা। এটাই আমাদের মূল ভিশন এবং মিশন। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
লেখক : চেয়ারম্যান, পটিয়া ফাউন্ডেশন।