দীর্ঘদিন উত্তাপ ছড়ানোর পর কমছে নিত্যপণ্যের বাজার। মূলত আন্তর্জাতিক বাজারে ভোগ্যপণ্যের দাম নিম্নমুখী হওয়ার জেরে খুচরা পর্যায়ে এর প্রভাব পড়ছে বলছেন ব্যবসায়ীরা। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ বছর চাহিদার তুলনায় ভোগ্যপণ্যের আমদানি বেশি হয়েছে। এর প্রভাবে পাইকারীতে প্রায় সব ধরনের ভোগ্যপণ্যের দাম গত এক মাস ধরে কমছে। চাল, ডাল, চিনি, তেল, আদা, রসুন, পেঁয়াজ ও আটা–ময়দার দাম কমতির দিকে রয়েছে। তবে কেবল বেড়েছে গরম মসলা ও হলুদের দাম। ভোক্তারা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে যেভাবে পণ্যের দাম কমেছে, সে হারে খুচরাতে পণ্যের দাম কমেনি।
গতকাল নগরীর বেশ কয়েকটি খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। ২ লিটার ৩৫৬ টাকা, ৩ লিটার ৫৩৫ টাকা এবং ৫ লিটার তেল বিক্রি হচ্ছে ৮৬০ টাকায়। অপরদিকে বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়। এছাড়া ভারতীয় ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়। মশুর ডাল চিকন দানা বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা এবং মোটা দানা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। চীনা আদা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২০০ টাকা, রসূন বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায় এবং ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা, প্যাকেটজাত আটা প্রতি কেজি ৫৫ টাকা, ময়দা ৬৫ টাকা, গুড়ো হলুদ প্রতি কেজি ৩০০ টাকা, হাটহাজারীর মিষ্টি গুড়ো মরিচ ৬০০ টাকা, ঝাল গুড়ো মরিচ ৫৮০ টাকা, ধনে গুড়ো ৩০০ টাকা, এলাচ প্রতি কেজি ১ হাজার ৮০০ টাকা, দারচিনি প্রতি কেজি ৫০০ টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ৭০০ টাকা, গোল মরিচ ৮০০ টাকা, জিরার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২৫০ টাকায়। অন্যদিকে জিরাশাইল চাল কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, নাজিরশাইল সিদ্ধ ৮০ টাকা, মিনিকেট আতপ ৬৫ টাকা, মোটা সিদ্ধ চাল ৫৫ টাকা, কাটারি সিদ্ধ ৮৮ টাকা, পাইজাম আতপ ৭২ টাকা, কাটারি আতপ ৯০ টাকা এবং চিনিগুড়া চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়।
কাজীর দেউরি এলাকার ভান্ডার স্টোরের খুচরা বিক্রেতা মো. মিজানুর রহমান জানান, পাইকারী বাজারে দাম কমার কারণে গত এক মাস ধরে খুচরা বাজারে দুই একটি পণ্য ছাড়া সব পণ্যেরই দাম কমছে। তবে কেবল বাড়তির মধ্যে রয়েছে– গরম মসলার আইটেম ও গুড়ো হলুদ। বেসরকারি চাকরিজীবী আশরাফুল মারুফ বলেন, গত এক বছরে প্রতিটি নিত্যপণ্যের বাজার অনেক বেশি বেড়ে গেছে। এখন কিছুটা কমছে। তবে যে হারে বেড়েছে, সে হারে কিন্তু কমছে না। এই কমাটা অনেকটা মন্দের ভালোর মতো। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, কয়েক মাস ধরে ভোগ্যপণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার নিম্নমুখী। কিন্তু আমাদের দেশের পাইাকারী ব্যবসায়ীদের আন্তর্জাতিক বাজার বাড়ার সাথে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। কিন্তু যখন কমে যায়, তখন কমাতে চান না। এখন খুচরা পর্যায়ে বেশ কিছু পণ্যের দাম কমছে, তবে এটি ঠিক থাকে সেটি দেখার বিষয়। কারণ দেখা যাবে, ব্যবসায়ীরা আবার কোনো একটি অজুহাত দাঁড় করিয়ে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। তবে এই ধরণের অস্থিরতা নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে থামানো যাবে। প্রশাসন বাজার মনিটরিং করলে ব্যবসায়ীরা সতর্ক থাকে।