একসময় মেয়েদের পড়ালেখা তো দূরে ঘর থেকে বের হওয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ ছিলো। ঘরে বসিয়ে রাখা হতো পরের ঘরে উনুন জ্বালাতে হবে তাই। সেখানে আজ নারীদের পদচারণা সর্বত্র। সমাজ-রাষ্ট ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করার দৃঢ় সংকল্প নিয়ে ওরা অঙ্গীকারবদ্ধ। বর্তমানে নারীদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করবার এত বেশি আকাঙ্ক্ষা রয়েছে বলবার মতো নয়। যদি যথাযথ সুযোগ পায় পুরো ব্যবস্থাটাই পাল্টে দিতে সক্ষম নারীরা। অনুপ্রেরণা দিতে হবে মেয়েদের এখনকার দিনে আরও বেশি করে। তবেই ওরা সমাজের উন্নতি করার স্পৃহা পাবে। আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম কত সুন্দর কবিতায় বলেছেন – ‘বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর’ একজন পুরুষ কখনো সঙ্গী ছাড়া পূর্ণতা পায় না। যদি একটি স্বাধীন দেশের উদাহরণ দেয়া যায়, তবে আমাদের বাঙালি জাতির মহানায়ক, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব না হলে টুঙ্গিপাড়ার খোকা থেকে বঙ্গবন্ধু, জাতির পিতার আজীবন নিরলস সংগ্রাম এতটা পূর্ণতা পেত না। আমাদের মহান ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধে নারী যোদ্ধাদের অবদান স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে আজীবন। যদি ধর্মের দিক দিয়ে বিবেচনা করা যায় মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর জীবনে খাদিজাতুল কুবরা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা থেকে শুরু করে স্ত্রীদের অবদান অনস্বীকার্য। এমনকি ধর্ম গ্রন্থ সংরক্ষণ এবং সংকলনে নারীদের অবদান রয়েছে। নবী যুগের অসংখ্য যুদ্ধে নারীদের অংশগ্রহণ ছিলো দেখার মতো। এই গল্প অত্যন্ত গর্বের সাথে বুক ফুলিয়ে আমরা বলে থাকি। কিন্তু একজন মেয়ে বাইক চালিয়ে যখন রাস্তা দিয়ে যায় আঁড়চোখে তাকাই ভিনগ্রহ থেকে কোনো এলিয়েন আসছে এমন করে! পর্দার দোহাই দিয়ে ধার্মিক হওয়ার চেষ্টায় তখন ফতোয়াবাজি করি। আমাদের উচিত প্রতিটি ক্ষেত্রে মেয়েদের প্রাধান্য দেয়া, সুশিক্ষিত করে তোলা।