পবিত্র রমজান শুরুর আগেই নগরীর ছোট–বড় সবগুলো শপিংমল এবং মার্কেট বর্ণিল আলোকসজ্জায় সেজে উঠেছে। গত কয়েকদিন ধরেই নগরীর নামীদামী শপিং মল এবং মার্কেট গুলোতে আসন্ন রমজানকে সামনে রেখে আলোকসজ্জার কাজ শুরু করা হয়েছে। গতকাল সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সন্ধ্যা হওয়ার সাথে সাথেই বর্ণিল আলোকসজ্জায় সেজে উঠে নগরীর অভিজাত শপিং মল ও মার্কেটগুলো।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামীকাল রবিবার প্রথম রমজান। অন্যান্য বছরের মতো এবার বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে রমজান মাসজুড়ে নগরীর শপিংমল ও মার্কেট গুলোতে আলোকসজ্জার ব্যাপারে ব্যবসায়ীদেরকে তেমন কড়াকড়িভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়নি। যার কারণে এবার প্রতিটি অভিজাত শপিংমল এবং মার্কেটগুলো রমজান শুরুর আগেই চোখ ধাধানো উজ্জ্বল আলোয় সেজে উঠেছে।
এই ব্যাপারে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিতরণ দক্ষিণাঞ্চল চট্টগ্রামের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (উত্তর) শহীদুল ইসলাম মৃধা আজাদীকে বলেন, রমজানে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে আমাদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি আছে। বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে মসজিদে মসজিদে ইমামদের কাছে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে খুতবা দেয়ার জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের এই চিঠিতে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে ৫টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার ব্যাপারে ইতোমধ্যে আমাদের সাব স্টেশন গুলো সংস্কার করা হয়েছে। সঞ্চালন লাইনের দুইপাশে গাছের ডাল–পালা কাটা হয়েছে। প্রতিটি ডিভিশনে নির্বাহী প্রকৌশলীসহ অন্যান্য প্রকৌশলীদের রোস্টার করে দেয়া হয়েছে। আমরা যারা তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীরা আছি আমরা থাকবো খুলশী গ্রিড সিস্টেম কন্ট্রোল থেকে মনিটরিং করবো। সব মিলে রমজানে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার ব্যাপারে আমাদের প্রতিটি ডিভিশনে প্রস্ততি নেয়া হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে চিঠিতে যে ৫টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সেই নির্দেশনা সমূহ হল-‘লোডশেডিং এড়াতে এসির তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার ওপরে রাখা, প্রয়োজনের সময়ই কেবল আলো বা বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি চালু রাখা, দিনের বেলায় প্রাকৃতিক আলো ব্যবহার করা, অপ্রয়োজনীয় লাইট বা ফ্যান বন্ধ রাখা, এনাজি সেভিং বাল্ব ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার।’
মার্কেট বা শপিং মল গুলোকে আলোকসজ্জার ব্যাপারে কড়াকাড়ি আরোপ না করায় বিশেষ করে পবিত্র রমজানকে স্বাগত জানিয়ে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে মাসব্যাপী ক্রেতা সাধারণের দৃষ্টি আকর্ষনে লক্ষ্যে মার্কেট গুলোকে অপরুপ সাজে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।
গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নগরীর অভিজাত শপিং মল–সানমার ওশান সিটি, সেন্ট্রাল প্লাজা, ইউনেস্কো সেন্টার, বালি আর্কেড, টেরিবাজারের সব গুলো মার্কেট, রেয়াজুদ্দিন বাজার তামাকুমন্ডি লেইনের সব গুলো মার্কেট আলোকসজ্জায় সেজে উঠেছে।
এবার পবিত্র রমজানের শুরু থেকেই চট্টগ্রামের ঈদের বাজার সরগরম উঠবে এমনটাই আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। প্রতি বছরই রমজানের শুরু থেকেই ক্রেতায় গমগম হয়ে ওঠে নগরীর ঐতিহ্যবাহী টেরিবাজার, রেয়াজ উদ্দিন বাজার, হকার মার্কেটসহ অন্যান্য মার্কেট ও শপিং মল গুলো।
ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নগরীর শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহি টেরিবাজার, রেয়াজুদ্দিন বাজার, হকার মার্কেটসহ অভিজাত শপিং মল গুলো পুরো রমজান জুড়ে ক্রেতা সাধারনকে আকৃষ্ট করার জন্য আগে ভাগেই ঈদের পণ্যে ভরপুর করে তুলেছে।
টেরিবাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, টেরিবাজারে প্রায় দুই হাজার ছোট–বড় দোকান আছে। এখানে শুধু থান কাপড় নয়, নারীদের সব ধরনের শাড়ি, থ্রি–পিচ, টু–পিচ, শার্ট, পাঞ্জাবিসহ সব ধরনের কাপড়, গহনা, জুতা থেকে শুরু করে যাবতীয় জিনিসের দোকান রয়েছে। পাইকারি মার্কেট হিসেবে সারা বছরই কেনাকাটা থাকে এ মাকের্টে। ঈদের সময়টাতে উপচে পড়া ভিড় জমে ক্রেতাদের। তবে রজমানের শুরু থেকেই হাজার হাজার ক্রেতার সমাগমে সরগরম হয়ে উঠে। একই অবস্থা নগরীর রেয়াজুদ্দিন বাজার, হকার মার্কেট, চট্টগ্রাম শপিং কমপ্লেঙ, নিউ মার্কেট, স্যানমার শপিং কমপ্লেঙ, ভিআপি টাওয়ারসহ ছোট–বড় গুলো মার্কেটগুলোতে।