নগর ভবন চট্টগ্রামের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকবে বলে মনে করেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। আইকনিক নগর ভবনের একটি ফ্লোরকে চট্টগ্রামের ইতিহাস ঐতিহ্য সম্বলিত জাদুঘর করে রাখারও ঘোষণা দেন তিনি। বলেন, চট্টগ্রাম পৌরসভা থেকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠার ইতিহাস, যারা এ কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান, প্রশাসক, মেয়র ও কাউন্সিলর ছিলেন সবাইকে সেখানে উপস্থাপন করা হবে। যেন একজন লোক নগর ভবনে প্রবেশ করে সমগ্র চট্টগ্রাম সম্পর্কে জানতে পারে।
গতকাল সোমবার দুপুরে নগর ভবনের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করে এসব কথা বলেন তিনি। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) নিজস্ব অর্থায়নে তিনটি বেইসমেন্টসহ ২১ তলা বিশিষ্ট ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছে। মেয়র বলেন, আগামী জানুয়ারি–ফেব্রুয়ারির মধ্যে নগর ভবন দৃশ্যমান হবে। এ সময়ে অন্ততপক্ষে নগর ভবনের পাঁচ–ছয়তলা কাজ শেষ করে কর্পোরেশনের অফিস টাইগারপাস থেকে এখানে নিয়ে আসব। মেয়র বলেন, নগর ভবন নির্মাণের জন্য এত বিশাল যে জায়গা দেখছেন তা আগে ছিল না। পেছনে দুটো বিল্ডিং ছিল। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর সেগুলো নিয়ে নিয়েছি। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে এই নগর ভবন নির্মাণ করছি।
তিনি বলেন, স্থায়ী নগর ভবন না থাকায় বিদেশি অতিথিরা আসলে আমাদের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হতো। নাগরিকদেরও সেবা প্রদান বিঘ্নিত হতো। এজন্য নিজস্ব ফান্ডে নগর ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। এ ভবনে নাগরিকরা স্বাচ্ছন্দ্যে সেবা নিতে পারবেন।
২০১০ সালের ১১ মার্চ নগর ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। এরপর চসিকের দুজন মেয়র এবং একজন প্রশাসক দায়িত্ব পালন করলেও অর্থ সংকট, মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না পাওয়াসহ বিভিন্ন জটিলতায় সেই উদ্যোগ থমকে ছিল। অবশেষে রেজাউল করিম চৌধুরী চসিকের নিজস্ব ফান্ড থেকে নগর ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেন। ধাপে ধাপে নির্মাণ করা হবে পুরো ভবন। প্রথম ধাপে ২৮ কোটি ৮০ লাখ টাকায় বেইসমেন্টসহ তিনটি ফ্লোর করা হবে।
চসিকের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ৩৮ হাজার ৪৯০ বর্গফুট বা ৫৩ দশমিক ৪৫ কাঠা জায়গায় নগর ভবন নির্মাণ করা হবে। প্রণয়ন নামে একটি কনসালটেন্ট ফার্ম ‘আইকনিক’ এ ভবনের নকশা করেছে। ভবনের উপরে থাকবে সিটি ক্লক। ভবনের তিন পাশে সাজানো বাগান থাকবে। নির্মাণ করা হবে ফোয়ারা। থাকবে মাল্টিপারপাস হল, কনফারেন্স হল ও ব্যাংকুয়েট হল।
গতকাল নির্মাণকাজ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন, কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী, হাসান মুরাদ বিপ্লব, শৈবাল দাশ সুমন, মো. ইলিয়াছ, মো. আবদুস সালাম মাসুম, আতাউল্লা চৌধুরী, রুমকি সেনগুপ্ত ও প্রধান প্রকৌশলী শাহীন–উল ইসলাম চৌধুরী।