কাতার বিশ্বকাপের শুরুতেই অঘটনের শিকার জার্মানি। জাপানের কাছে হারটা চারবারের চ্যাম্পিয়নদের বড় ধাক্কা দিয়েছে। স্পেনের বিপক্ষেও সে ধাক্কা সমলাতে পারেনি। অনেকটা সময় নিজেদের খুঁজে ফিরল। গোল হজম করে আরও কোণঠাসা হয়ে পড়ল। স্পেন শিবিরে তখন নকআউটে পর্বের হাওয়া। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া জার্মানরা এরপরই ঘুরে দাঁড়াল। বদলি খেলোয়াড় নিকলাস ফুয়েলখুগের গোলে বিশ্বকাপে টিকে থাকার আশা একটু উজ্জ্বল হলো চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। আল বাইত স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি ১–১ গোলে ড্র হয়েছে। স্পেনের গোলটিও আসে বদলি খেলোয়াড় আলভারো মোরাতার পা থেকে। এই ম্যাচ থেকে ১ পয়েন্ট পেলেও গ্রুপের শেষ ম্যাচে জার্মানির সমীকরণ অবশ্য খুব একটা পাল্টাচ্ছে না। কোস্টারিকার বিপক্ষে তাদের জিততে তো হবেই। সঙ্গে তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য ম্যাচের দিকেও। ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে আছে স্পেন। ৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে জাপান। তাদের সমান পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে কোস্টারিকা। ১ পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে জার্মানি। স্পেন এই ম্যাচে শুরুতেই গোল পেতে পারত।
ডি–বক্সের বাইরে থেকে দানি ওলমোর বুলেট গতির শট গোলরক্ষক মানুয়েল নয়ারের হাতে লেগে ক্রসবারে বাধা পায়। বেঁচে যায় জার্মানি। ৩৪ মিনিটে ওলমোর পাস বক্সে পেয়েও উড়িয়ে মারেন ফেররান তরেস। লাইন্সম্যান যদিও তোলেন অফসাইডের পতাকা। পাঁচ মিনিট পর আন্টোনিও রুডিগার হেডে বল জালে পাঠালে উল্লাসে মাতে জার্মানি। কিন্তু ভাগ্য খারাপ তাদের। ভিএআরে অফসাইডের সিদ্ধান্তে থেমে যায় তাদের উদযাপন। প্রথমার্ধে কোন দলই গোল না পাওয়ায় দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে দুই দলই সমানতালে আক্রমণ করতে থাকে। যদিও নিশ্চিত সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না কেউ। এই অর্ধের শুরুতে এগিয়ে যেতে পারত জার্মানি। তবে জসুয়া কিমিখের জোরাল শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকিয়ে দেন উনাই সিমোন। ম্যাচে এই প্রথম কর্নার পায় জার্মানরা। বদলী হিসেবে মাঠে নামার আট মিনিটের মাথায় এগিয়ে নেন দলকে মোরাতো । বাঁ দিক থেকে জর্দি আলবার পাস বঙে পেয়ে দুর্দান্ত এক ফ্লিকে গোলটি করেন অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের এই ফরোয়ার্ড। বিশ্বকাপের ইতিহাসে ষষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে বদলি নেমে গোল করলেন মোরাতা। স্পেনের হয়ে প্রথম। দুই মিনিট পর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণও নিতে পারত তারা। কিন্তু ওলমোর পাস বক্সের বাইরে ফাঁকায় পেয়ে উড়িয়ে মারেন মার্কো আসেনসিও। বল ধরে জায়গা বানিয়ে শট নিতে পারতেন তিনি। কিন্তু অসাধারণ কিছুর চেষ্টায় দলকে হতাশ করেন রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড। পিছিয়ে পড়া জার্মানি ৭২ ও ৭৪ মিনিটে ভালো দুটি আক্রমণ করে। কিন্তু ব্যর্থতার জাল ছিঁড়তে পারেনি তারা। আগের মিনিটেই বদলি নামা ফুয়েলখুগের উদ্দেশ্যে ডান দিক থেকে ছয় গজ বঙের মুখে বল বাড়ান জামাল মুসিয়ালা। কিন্তু স্পেনিশ ডিফেন্ডার রদ্রি সেটা ঠেকিয়ে দেন। পরেরটিতে ১৯ বছর বয়সী মুসিয়ালা ওয়ান–অন–ওয়ানে গোলরক্ষক সিমোন বরাবর শট নেন। ফলে হতাশ হতে হয় তাদের। ম্যাচে ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠা জার্মানি ৮৩ মিনিটে পায় সাফল্যের দেখা। ঝড়ের বেগে ডি–বক্সে ঢুকে মুসিয়ালার থেকে বল ধরে জোরাল শটে গোল করে সমতা ফেরান ভার্ডার ব্রেমেনের ফরোয়ার্ড ফুয়েলখুগ। যেন স্বস্তি ফিরে আসে জার্মান শিবিরে।