দ্বিতীয়বারের মতো আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক)। চমেক শিক্ষক সমিতির ব্যবস্থাপনায় ‘শেয়ারিং নলেজ, কেয়ারিং লাইফ’ স্লোগানে তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলন শুরু হচ্ছে আজ। চমেক শাহ আলম বীর উত্তম অডিটোরিয়ামে আগামী শনিবার পর্যন্ত এ সম্মেলন চলবে।
গতকাল দুপুরে চমেক শিক্ষক মিলনায়তনে আয়োজিত মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে আয়োজকদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। আজ বৃহস্পতিবার শুরু হলেও সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে কাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। অতিথি হিসেবে থাকবেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর আবুল বাশার মো. খুরশীদ আলম, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডা. ইসমাইল খান।
মিট দ্যা প্রেসে আয়োজকরা জানান, আন্তর্জাতিক এ সম্মেলন ঘিরে চমেক ক্যাম্পাসে দেশি–বিদেশি চিকিৎসকের মিলন মেলা বসবে। ১ হাজার ২৫০ জন চিকিৎসক এ সম্মেলনে অংশ নেবেন। এর মাঝে কলকাতার প্রখ্যাত অর্থোপেডিক সার্জন ডা. রাজিব রমনসহ ভারত, আমেরিকা, ইংল্যান্ড ও বাহরাইন থেকে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ১০ জন চিকিৎসক এ সম্মেলনে যোগ দেবেন।
সম্মেলনে একটি স্টেট অব আর্ট লেকচার, প্রয়াত তিনজন বরেণ্য শিক্ষক প্রফেসর এল এ কাদেরী, প্রফেসর সৈয়দা নূরজাহান ভূঁইয়া, প্রফেসর মাহতাব উদ্দিন হাসান স্মরণে তিনটি মেমোরিয়াল লেকচার, ৬টি প্লেনারি সেশন, ২টি আন্তর্জাতিক হাইব্রিড সেশন, বিদেশি বিশেষজ্ঞদের ১৫টি উপস্থাপনা, দেশের বরেণ্য চিকিৎসকদের ৪৪টি নিবন্ধ এবং বিভিন্ন বিষয়ের গবেষণালব্ধ ১০০টি ফ্রি পেপার ও ৪৪টি পোস্টার উপস্থাপিত হবে। এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ের ওপর সর্বশেষ গবেষণালব্ধ জ্ঞান সম্পর্কে চট্টগ্রামসহ দেশের প্রখ্যাত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সম্মেলনে অভিজ্ঞতা বিনিময় করবেন। জুনিয়র চিকিৎসকরাও এতে উপকৃত হবেন। যা রোগীদের সেবায় সর্বাধুনিক চিকিৎসা ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।
মিট দ্যা প্রেসে সম্মেলনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন চমেক উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. হাফিজুল ইসলাম, ইউরোলজি বিভাগের প্রধান ও চমেক শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মনোয়ার–উল হক শামীম, মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ও সম্মেলন কমিটির সভাপতি ডা. অনিরুদ্ধ ঘোষ, নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. নোমান খালেদ চৌধুরী, সম্মেলন কমিটির সদস্য সচিব ও গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এরশাদ উদ্দিন আহমেদ, চমেক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. প্রণয় দত্ত। অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সৌমেন সরকার, প্রোগ্রাম ম্যানেজম্যান্ট কমিটির সদস্য সচিব ডা. জি এম তৈয়ব আলী, ফার্মাকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মাসুদ রানা, মেডিসিন বিভাগের কনসালটেন্টে ডা. আবুল ফয়সাল চৌধুরী প্রমুখ।
চিকিৎসকরা বলেন, প্রতিনিয়ত নতুন নতুন তথ্যজ্ঞান সংযুক্ত হচ্ছে চিকিৎসা বিজ্ঞানে। তাছাড়া চিকিৎসাশাস্ত্র শুধুমাত্র উপসর্গভিত্তিক ব্যবস্থাপনায় সীমাবদ্ধ নেই। মলিকুলার পর্যায়ে আজ নেনো টেকনোলজির প্রয়োগ চিকিৎসা শাস্ত্রকে অনেক বেশি কার্যকর করে তুলেছে। এখন রোগ হওয়ার পূর্বে বিভিন্ন জিনগত তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে সম্ভাব্য রোগ সম্বন্ধে আগাম ধারণা পাওয়া যায়। উন্নত বিশ্বে এই ধরনের বিষয় নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম চলমান। এমনকি চমেকের সাবেক শিক্ষার্থী এবং ফ্যাকাল্টিরা এ ধরনের নানা গবেষণাকর্মে চমকপ্রদ সাফল্য লাভ করেছেন। করোনা মহামারিতেও চমেক শিক্ষকদের অনেক প্রবন্ধ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
