জাতীয় সংসদের হুইপ ও চট্টগ্রামের পটিয়ার থেকে তিনবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরীকে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে অব্যাহতি প্রদান করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত সোমবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সচিব মো. মাহবুব হোসেন স্বাক্ষরিত এক আদেশে বলা হয়, ‘হুইপ সামশুল হকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতার কোনও প্রমাণ না পাওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।’ দুদক সূত্রে জানা গেছে, ওই অব্যাহতিপত্রটি ওই দিনই মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক, দুদক চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব, দুদক পরিচালক (পর্যবেক্ষণ ও বিশারদ) সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগে পাঠানো হয়েছে। অব্যাহতিপত্রের একটি কপি হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর বরাবরেও প্রেরণ করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে বিভিন্ন পত্রিকায় (আজাদী ছাড়া) করা সংবাদের উপর ভিত্তি করে এবং দুদকে বিভিন্ন ব্যক্তির করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন হুইপ সামশুল হক চৌধুরী সহ আরো অনেক সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছিলেন। দীর্ঘ প্রায় চার বছর অনুসন্ধান করে হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর নামে হওয়া সংবাদ এবং অভিযোগের সত্যতার কোনও প্রমাণ এবং হুইপের নামে–বেনামে কোনও অবৈধ সম্পদ পাওয়া যায়নি। অভিযুক্ত অন্য এমপিদের দুদক জিজ্ঞাসাবাদ করলেও হুইপ সামশুল হক চৌধুরীকে দুদক কখনো জিজ্ঞাসাবাদ করেনি।
এর আগে গত এপ্রিলে হুইপের বিরুদ্ধে অবৈধ আয়ের অভিযোগ তোলা পুলিশ পরিদর্শক সাইফ আমিনকে আদালত সাজা প্রদান করেছে। তার বিরুদ্ধে হুইপ আদালতে ‘মিথ্যা’ তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে মামলা করেন। এই ব্যাপারে হুইপ সামশুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমি দেশের আদালত, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দুদক যে কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ও তদন্ত করতে পারে। তবে সত্যতা নিশ্চিত হওয়া ছাড়া অনুসন্ধানের শুরুতেই মিডিয়ায় প্রকাশ করলে সমাজে সম্মানিত ব্যক্তিদের পারিবারিক, রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে সম্মানহানি হয়। তারপরেও আমি দুদককে সুষ্ঠু অনুসন্ধানের জন্য সাধুবাদ জানাই। যারা এই সব মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে ষড়যন্ত্র করেছে তাদেরকে মহান আল্লাহ হেদায়েত করুন। সত্যের জয় হয়। আমার বেলায়ও সত্যের জয় হয়েছে।’
হুইপ সামশুল হককে দুদকের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়ায় পটিয়ার সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম. শামশুজ্জামান বলেন, ‘দীর্ঘদিনের অবহেলিত–বঞ্চিত পটিয়ায় গত ১৪ বছরে হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে যে পরিমাণ উন্নয়ন হয়েছে তা কল্পনাতীত। এই উন্নয়ন করতে গিয়ে যারা পটিয়ার উন্নয়নকে মেনে নিতে পারেননি তারা হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে নানা রকম ষড়যন্ত্র করেছেন। দুদকে হুইপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও এদের ষড়যন্ত্রের অংশ। দেরিতে হলেও আল্লাহ তায়ালা তাদের ষড়যন্ত্রের জবাব দিয়েছেন। পটিয়ার সাধারণ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে হুইপ সামশুল হক চৌধুরী সবসময় এইসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেছেন। তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ ক্ষেত্রে সত্যের জয় হয়েছে। এতে পুরো পটিয়াবাসী খুশি। দুদকের অনুসন্ধানে অব্যাহতি প্রমাণ করে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একজন সৎ ও যোগ্য জনপ্রতিনিধি।’