দুই সপ্তাহ পরে আবার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রিজার্ভের পরিমাণ ২৯ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার হওয়ার হালনাগাদ তথ্যের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর আগে গত ৮ মে আকুতে মার্চ–এপ্রিলের আমদানি ব্যয়ের জন্য ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের বিল পরিশোধের পর ৭ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ৩০ বিলিয়নের নিচে নেমে গিয়েছিল। এর তিন দিন পর বাজেট সহায়তার অংশ হিসেবে বিশ্ব ব্যাংকের দেওয়া ঋণের ৫০৭ মিলিয়ন ডলার যোগ হওয়ায় রিজার্ভ ফের ৩০ বিলিয়নের উপরে উঠে। এরপর রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করার কারণে আবার তা কমছে। আমদানি দায় মেটাতে গিয়ে চলতি মে মাসের ২৪ দিনে রিজার্ভ থেকে কমেছে প্রায় এক বিলিয়ন (৯৯ কোটি ৬৪ লাখ) ডলার। খবর বিডিনিউজের।
গত জুলাই থেকে আমদানি নিয়ন্ত্রণ শুরু করার যে উদ্যোগ বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়েছে, তা এখনও অব্যাহত রয়েছে। এতে নতুন ঋণপত্র (এলসি) খোলার হার কমে আসলেও পুরনো দায় পরিশোধ অব্যাহত থাকায় গড়ে প্রতি মাসে এখনও সাড়ে ৬ বিলিয়ন ডলার খরচ হচ্ছে আমদানিতে।
চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল সময়ে এলসির বিপরীতে পরিশোধ করা হয়েছে ৬২ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের ২০২১–২২ এর চেয়ে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ কম। এ হিসাবে গড়ে এখনও প্রতিমাসে ৬ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হচ্ছে আমদানি দায় পরিশোধ বাবদ।
অন্যদিকে গত ১০ মাসে নতুন এলসি খোলা হয়েছে ৫৬ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের এই সময়ের চেয়ে ২৬ দশমিক ৮০ শতাংশ কম। গত ১০ মাসে গড়ে নতুন এলসি খোলা হচ্ছে প্রতিমাসে ৫ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলার।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের চলমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জন্য গত জানুয়ারিতে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ প্রস্তাব অনুমোদনের সময়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) পূর্বাভাস দিয়ে বিবৃতিতে বলেছিল, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০২২–২৩ অর্থবছরের শেষ নাগাদ ৩০ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে আসবে। অবশ্য ২০২৩–২৪ অর্থবছর শেষে তা আবার ৩৪ বিলিয়ন ডলারের ঘরে পৌঁছাবে বলে আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাটি।
রিজার্ভের পতনের এসময়ে তাল মিলিয়ে দর হারিয়েছে টাকা। এক বছরের ব্যবধানে ২৫ শতাংশের মতো অবমূল্যায়নে আন্তঃব্যাংকে ডলারের সবশেষ দর উঠেছে ১০৮ টাকা ৬৩ পয়সা। খোলা বাজারে তা ১১০ টাকার বেশি।