দুই বছর বন্ধ থাকার পর চট্টগ্রাম থেকে চলতি আমন মৌসুমে আতপ চাল সংগ্রহে বরাদ্দ দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। যার পরিমাণ ১৫ হাজার ৮০৭ মেট্রিক টন। এছাড়া চট্টগ্রামের তিন উপজেলা থেকে ৮০৬ মেট্রিক টন সিদ্ধ চালও সংগ্রহ করা হবে। এদিকে এবার চট্টগ্রাম মহানগর ও উপজেলা থেকে ৬ হাজার ১৪৭ মেট্রিক টন আমন ধানও সংগ্রহ করা হবে। এর মধ্যে ‘কৃষকের অ্যাপস’– এর মাধ্যমে পাঁচ উপজেলা থেকে সরাসরি প্রান্তিক চাষি থেকে ৩ হাজার ১৫৮ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে।
চট্টগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে এখনো ধান–চাল সংগ্রহ শুরু হয়নি। তবে আতপ ও সিদ্ধ চালের লক্ষ্যমাত্রা চালকল ভিত্তিক বিভাজন করা হয়েছে। আগামী ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে বিভাজন অনুযায়ী চাল সরবরাহে মিল মালিকদের চুক্তি করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এছাড়া অ্যাপস এর মাধ্যমে ধান সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি অভ্যন্তরীণ আমন সংগ্রহ মৌসুমে (২০২৩–২০২৪) সারা দেশ থেকে দুই লাখ মেট্রিক টন আমন ধান, চার লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল ও এক লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহ করবে সরকার। প্রতি কেজি ধান ৩০ টাকা, সিদ্ধ চাল ৪৪ টাকা এবং প্রতি কেজি আতপ চালের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৩ টাকা। সরকারিভাবে গত ২৩ নভেম্বর থেকে সংগ্রহ শুরু হয়েছে। চলবে ২০২৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
চট্টগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুমাইয়া নাজনীন আজাদীকে বলেন, এখনো সংগ্রহ শুরু হয়নি। কারণ চট্টগ্রামে তো এখনো ধান কাটা শেষ হয়নি। মাত্র ২০ পার্সেন্ট মত কাটা হয়েছে। ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চুক্তি করার সময় আছে। তিনি বলেন, কয়েকটি উপজেলা থেকে অ্যাপসের মাধ্যমে ধান সংগ্রহ করা হবে। সেটারও প্রক্রিয়া চলছে। কৃষকরা নিবন্ধন করছেন। নিবন্ধন শেষ হলে লটারির মাধ্যমে যারা ধান দিতে পারবেন তাদের চূড়ান্ত করা হবে।
সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক (চলতি দায়িত্ব) মো. ফখরুল আলম আজাদীকে বলেন, সরকার মাঝখানে দুই বছর আমন সংগ্রহ মৌসুমে আতপ চাল সংগ্রহ বন্ধ রেখেছিল। এ বছর চট্টগ্রামে আবারও বরাদ্দ দিয়েছে। বরাদ্দ মিল মালিকদের মধ্যে বিভাজন করা হয়েছে। তারা চুক্তি করছেন।
আতপ চালের বরাদ্দ : চট্টগ্রাম থেকে ১৫ হাজার ৮০৭ মেট্রিক টন আতপ চাল (আমন) সংগ্রহ করার বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে ফটিকছড়ি উপজেলা থেকে এক হাজার ৮২১ মেট্রিক টন, রাউজান উপজেলা থেকে ৬৭৯ মেট্রিক টন, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা থেকে ৪ হাজার ৮৮৮মেট্রিক টন, লোহাগাড়া উপজেলা থেকে ১৮৫ মেট্রিক টন, পটিয়া উপজেলা থেকে ১ হাজার ৩৩৫ মেট্রিক টন, বাঁশখালী উপজেলা থেকে ১ হাজার ৫০৭ মেট্রিক টন, হাটহাজারী উপজেলা থেকে ২৬২ মেট্রিক টন, চন্দনাইশ উপজেলা থেকে ২৬৬ মেট্রিক টন, সাতকানিয়া উপজেলা থেকে ৫৭১ মেট্রিক টন, মীরসরাই উপজেলা থেকে এক হাজার ৪০৫ মেট্রিক টন এবং কর্ণফুলী উপজেলা থেকে সংগ্রহ করা হবে ১০৯ মেট্রিক টন আতপ চাল। এছাড়া নগরের পাঁচলাইশ থানা ৮৮ মেট্রিক টন, পাহাড়তলী থানায় ৫৩৪ মেট্রিক টন, চান্দগাঁও থানায় ২ হাজার ৭৩০ মেট্রিক টন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
তিন উপজেলা থেকে সংগ্রহ করা হবে সিদ্ধ চাল : তিন উপজেলা থেকে চাল সংগ্রহের ৮০৬ মেট্রিক টন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে সীতাকুণ্ড থেকে ২৬৬, ফটিকছড়ি থেকে ৪১৬ ও পটিয়া থেকে সংগ্রহ করা হবে ১২৪ মেট্রিক টন।
ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা : চালকল মালিকদের মাধ্যমে সন্দ্বীপ থেকে ৫৫৩ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে। এছাড়া মীরসরাই থেকে ৭২১ মেট্রিক টন, সীতাকুণ্ড থেকে ২১৮ মেট্রিক টন, ফটিকছড়ি থেকে ৭৯৪ মেট্রিক টন, হাটহাজারী থেকে মেট্রিক টন ৩১৪, রাউজান থেকে ৪৩১ মেট্রিক টন, রাঙ্গুনিয়া থেকে ৫৫৯ মেট্রিক টন, বোয়ালখালী থেকে ১৬৫ মেট্রিক টন, পটিয়া থেকে ৩৮৫ মেট্রিক টন, চন্দনাইশ থেকে ২৯৯ মেট্রিক টন, সাতকানিয়া থেকে ৪৩৪ মেট্রিক টন, লোহাগাড়া থেকে ৪০০ মেট্রিক টন, বাঁশখালী থেকে ৫৫৯ মেট্রিক টন, আনোয়ারা থেকে ২৬৮ মেট্রিক ও কর্ণফুলী উজেলা থেকে ৪৭ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে মীরসরাই, পটিয়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা, ফটিকছড়ি ও রাউজান উপজেলা থেকে অ্যাপসের মাধ্যমে সরাসরি প্রান্তিক চাষি থেকে ধান সংগ্রহ করা হবে।