দুই বছর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা একজন রোগীর অস্ত্রোপচারে দুটি কিডনিই কেটে ফেলায় চার চিকিৎসককে আসামি করে হত্যা মামলা হয়েছে। এই চিকিৎসকরা হলেন- হাসপাতালের ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল (৫৫), একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. ফারুক হোসেন (৪৮), চিকিৎসক মো. মোস্তফা কামাল (৪৬) ও আল মামুন (৩৩)। অস্ত্রোপচারের মাস দুয়েক পর মারা যাওয়া ওই নারীর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তার দুটি কিডনিই ফেলে দেওয়ার প্রমাণ পাওয়ার তথ্য উঠে আসার পর এই মামলা নেওয়া হয়েছে বলে শাহবাগ থানার ওসি মোহাম্মদ মামুন অর রশিদ জানিয়েছেন। তিনি শুক্রবার রাতে বলেন, ‘এখন আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’ খবর বিডিনিউজের।
কিডনি জটিলতায় ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে রওশন আরা বেগমকে ভর্তি করা হয়। অস্ত্রোপচার করে তার বাঁ পাশের কিডনি ফেলে দেওয়ার কথা বলেন চিকিৎসকরা। সেই অনুযায়ী অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে ডান কিডনিও ফেলে দেওয়া হয়। এরপর আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন রওশন আরা বেগম। পরে পরীক্ষা করে দেখা যায় তার দুই কিডনিই নেই। মাস দুয়েক ভোগার পর তিনি মারা যান।
এই ঘটনায় তার ছেলে চলচ্চিত্র পরিচালক রফিক শিকদার সে সময় চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ এনে শাহবাগ থানায় মামলা করতে যান। তার মামলা না নিয়ে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করে পুলিশ। এখন ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আসায় শুক্রবার ভোরে চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া হয়।
ওসি মামুন অর রশিদ বলেন, ‘রওশন আরা বেগমের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আসার পর রফিক শিকদারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা নেওয়া হয়েছে।’ রফিক শিকদার সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন, ‘এটা একটি হত্যাকাণ্ড। আমার মাকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এই হত্যার বিচার চাই।’
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের অতিরিক্ত পরিচালক নাজমুল করিম বলেন, ‘ঘটনার শুরুতেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত করেছিল। তদন্তে অস্ত্রোপচারে ভুল হযেছিল বলা হলেও কোনো খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না। তবে যেহেতু মামলা হয়েছে সে অনুযায়ী তদন্ত হবে।’