দীর্ঘদিন পর শত কোটি টাকার ৫ সরকারি বাড়ি দখলমুক্ত

খুলশীতে দিনভর অভিযান

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১৬ নভেম্বর, ২০২২ at ৭:১২ পূর্বাহ্ণ

বাপ-দাদার কেউ একজন সরকারি চাকরি করতেন। বরাদ্দ পেয়েছিলেন সরকারি বাড়ি। চাকরি শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু স্বজনেরা বাড়ি ছাড়েননি। আবার কেউ কেউ সরকারি বাড়িতে ঢুকে বসবাস শুরু করেছেন। বছরের পর বছর গেলেও এসব বাড়ি থেকে তাদের উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি। অবশেষে গতকাল নগরীর খুলশী এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে অন্তত ১শ কোটি টাকা দামের ৫টি সরকারি বাড়ি অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন-সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সহায়তায় এসব বাড়ি উদ্ধার করা হয়।
জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, খুলশী এলাকার জালালাবাদ মৌজায় সরকারের পরিত্যক্ত ৫টি বড় বাড়ি রয়েছে। আবাসন অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন বাড়িগুলো দীর্ঘদিন ধরে দখলে ছিল। এর মধ্যে কোনো বাড়ি যার নামে বরাদ্দ ছিল সরকারি সেই কর্মকর্তা চাকরি থেকে অবসরে গেছেন। কেউ কেউ জীবিতও নেই। অথচ তাদের স্বজনেরা বাড়িটি দখল করে বসবাস করছিলেন। কেউ কেউ বরাদ্দের ধার ধারেননি। বাড়িতে ঢুকে বসবাস শুরু করেছেন। বছরের পর বছর চেষ্টা করেও তাদের উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি।
খুলশী থানাধীন খুলশী নয়া শহর এলাকার উক্ত বাড়িগুলোতে গতকাল দিনভর অভিযান পরিচালনা করা হয়। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুকের নেতৃত্বে গণপূর্ত বিভাগ, সরকারি আবাসন অধিদপ্তর, বিদ্যুৎ বিভাগ, কর্ণফুলী গ্যাস এবং নগর পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত শতাধিক সদস্যের একটি টিম সকাল ৯টায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে। বিকাল ৩টা পর্যন্ত টানা অভিযান চালিয়ে ৫টি বাড়ি উদ্ধার করা হয়। চট্টগ্রামের পরিত্যক্ত সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা বোর্ডের সাম্প্রতিক সভায় সরকারি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ওই সিদ্ধান্তের আলোকে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট নিয়োগ করা হয়। পরিত্যক্ত বাড়ি নং ৭১ (খুলশী), জমির পরিমাণ ৮+১১=১৯ শতক। পরিত্যক্ত বাড়ি নং ৭২ (খুলশী), জমির পরিমাণ ১০ শতক। পরিত্যক্ত বাড়ি নং ৭৩ (খুলশী), জমির পরিমাণ ৮ শতক। পরিত্যক্ত বাড়ি নং ৭৪ (খুলশী), জমির পরিমাণ ৮ শতক।
পরিত্যক্ত বাড়ি নং ৭৬ (খুলশী), জমির পরিমাণ ১৬ শতক। পরিত্যক্ত বাড়ি নং ৮৯ (খুলশী), জমির পরিমাণ ১০.৮৫ শতক। হাউজ প্লট নং ২৪৫ (খুলশী), জমির পরিমাণ ৫৭ শতক। পাঁচটি সরকারি বাড়িতে মোট জমির পরিমাণ ১১৯.৮৫ শতক বা ৭১.৯১ কাঠা। খুলশী এলাকায় প্রতি কাঠা জায়গার দাম আকৃতি ভেদে এক থেকে তিন কোটি টাকা। জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পাঁচটি সরকারি বাড়ির উক্ত ভূমির দাম গড়ে ১শ কোটি টাকার কাছাকাছি হবে বলে জানিয়েছেন।
উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী পূষণ চক্রবর্তী, উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম, সৌরজিত বড়ুয়া, পুলিশের এসআই নরুল আফসারের নেতৃত্বে শতাধিক পুলিশ সদস্য অংশ নেন। উচ্ছেদ শেষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক পাঁচটি বাড়ি গণপূর্তের প্রতিনিধির কাছে বুঝিয়ে দেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার
পরবর্তী নিবন্ধবায়েজিদ থেকে ১২ মামলার আসামি মোকাম্মেল গ্রেপ্তার