সুদানের দারফুরের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ক্রেইনিকে গোষ্ঠী সংঘর্ষে অন্তত ১৬৮ জন নিহত ও ৯৮ জন আহত হয়েছে। বাস্তুচ্যুতদের নিয়ে কাজ করা একটি গোষ্ঠীর মুখপাত্র রোববার এ কথা জানান বলে জানিয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলটিতে এটাই সর্বশেষ এ ধরনের সহিংসতার ঘটনা। চলতি শতকের প্রথম দশকের শুরুর দিকে আরব মিলিশিয়া ও সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের সংঘাতে বাস্তুচ্যুত অসংখ্য মানুষের বাস ওই অঞ্চলে।
যাযাবর ওই আরব মিলিশিয়ারা জানজাউইড নামে পরিচিত। ওই সংঘাতে প্রায় ২৫ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছিল, মারা পড়েছিল ৩ লাখ, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে সুদানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরের নামে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করেছিল। চলতি মাসের শুরুর দিকে আলি কুশাইব নামে পরিচিত বশিরের এক সহযোগীর বিচার শুরুও হয়েছে।
জানজাউইড দারফুরের ওই অঞ্চল থেকে অন্যদের সরিয়ে সেটি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ দ্য কোঅর্ডিনেশন কমিটি ফর রিফিউজি অ্যান্ড ডিসপ্লেসড পিপলের। তারা অঞ্চলটিতে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী ফেরত পাঠানোরও আহ্বান জানিয়েছে, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে সেখান থেকে শান্তিরক্ষী প্রত্যাহার শুরু হয়। সংঘাতের ব্যাপারে মন্তব্য জানতে আরব গোষ্ঠীগুলোর মুখপাত্রদের ফোন করা হলেও তারা সাড়া দেননি। ব্যক্তিগত বিবাদের জের থেকে শুক্রবার আরব যাযাবর ও মাসালিত কৃষকদের মধ্যে সহিংসতা বেধে যায় বলে একাধিক বেসরকারি সংস্থা জানিয়েছে।
কোঅর্ডিনেশন কমিটি পুড়ে যাওয়া একাধিক ভবনের ছবি প্রকাশও করেছে। দারফুর বার অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে সর্বশেষ সংঘাতে ২০ হাজারের মতো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সংঘাতের এই উত্তেজনা কাছাকাছি শহর এল জেনিইনাতেও ছড়িয়ে পড়েছিল, শহরটির কর্তৃপক্ষ পরে সূর্য ডোবার পরপরই সব দোকানপাট বন্ধের নির্দেশও দেয়।
বশির পরবর্তী অন্তবর্তী সরকার ও দারফুরে লড়াইরত কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে ২০২০ সালের অক্টোবরে চুক্তি হওয়ার পর থেকেই দারফুরে সহিংসতার মাত্রা বাড়তে দেখা যাচ্ছে। সংঘাতে কেবল গতবছরই ৪ লাখ ৩০ হাজারের মতো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, বলছে দাতা সংস্থাগুলো। ওই চুক্তি জনগণের জীবনে বা দারফুর রাজ্যের নিরাপত্তায় যে কোনো ইতিবাচক প্রভাবই ফেলেনি, তাই দেখাচ্ছে, শনিবারের বিবৃতিতে বলেছে দারফুর বার অ্যাসোসিয়েশন।