বোরো ধান পুরোদমে ঘরে তুলতে আরও ১০–১৫ দিন সময় লাগবে। কিন্তু এর আগেই ব্রীধান–৮৮ জাতের ধান পেকে গেছে। এতে আগাম বোরো ধান ঘরে তুলতে পারছেন কৃষকরা। তীব্র রোদ, এরপরও থেমে নেই রাঙ্গুনিয়ার কৃষকদের বোরো ধান কাটা। আগাম বোরো ধান ঘরে তুলতে পারায় খুশি কৃষকরাও। ধানের উৎপাদন বরাবরের মতো রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা কৃষি বিভাগের।
সরেজমিনে চট্টগ্রামের শস্যভাণ্ডার খ্যাত রাঙ্গুনিয়ার গুমাইবিলে গিয়ে দেখা যায়, সোনালী ধানে ভরে গেছে মাঠ। কেউ ধান কেটে ঘরে আনছেন, কেউ কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। গুমাইবিলে এবার মধ্যমেয়াদী ব্রি ধান–৮৮ জাতের চাষাবাদ বেশি হওয়ায় কৃষকরা দ্রুত বোরো ধান কাটতে পারছেন। ইতোমধ্যে বিলের চন্দ্রঘোনা, মরিয়মনগর, ব্রহ্মোত্তর অংশে এ জাতের ধান কাটা শুরু করেছেন কৃষকরা। উপজেলার অন্যান্য কৃষি জমিতেও চলছে পাকা ধান কাটা। এই জাতের ধানের আশানুরূপ ফলন হওয়ায় কৃষকের চোখে–মুখে আনন্দ। তবে তীব্র গরম, সাথে শ্রমিকের চড়া দামে কিছুটা অস্বস্তিতে কৃষক। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গুমাইবিলে গত আমন মৌসুমে ৩ হাজার ৪৩৫ হেক্টর জমিতে গড়ে সাড়ে ৫ টন ধান পাওয়া গেছে। বিক্রি করে ভালো দাম পেয়েছেন কৃষকরা। এবার ৮ হাজার ৩৪৫ হেক্টরেরও বেশি জমিতে বোরো চাষাবাদ হয়েছে। আবাদকৃত জাতের মধ্যে রয়েছে ব্রীধান–৮৮, ৮৯, ৯২, ১০০ (বঙ্গবন্ধু), ব্রীধান–৭৪, বিভিন্ন হাইব্রিড ও স্থানীয় উন্নত জাতের মধ্যে কাটারি ধান আবাদ হয়েছে।
কৃষকরা জানান, অন্যান্য জাতের বোরো ধান কাটতে আরও ৭–১০ দিন লাগবে। তবে গুমাইবিলে ব্রি ধান–৮৮ জাতের চাষাবাদ বেশি হওয়ায় কৃষকরা বোরো ধান কাটতে পারছেন। এতে হেক্টর প্রতি ৬ মেট্রিক টন ফলন পাচ্ছেন কৃষকরা।
মরিয়মনগরের কৃষক মো. ফরিদ উদ্দীন বলেন, ৬০ কানি জমিতে বোরো ধান চাষ করেছি। যার বেশিরভাগই ব্রি ধান–৮৮। ইতোমধ্যে ১০ কানি জমির ধান কেটেছি। ফলন কানিপ্রতি ১ মেট্রিক টন। এ ধান সরু হওয়ায় বাজারমূল্যও বেশি।
উপ–সহকারী কৃষি কর্মকর্তা উত্তম কুমার বলেন, কৃষকদেরকে বোরো ধান চাষে ব্রিধান–৮৮, ৮৯, ৯২, ১০০, ১০১ সহ বিভিন্ন জাতের হাইব্রিড ধান চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করেছি। কৃষকরা এ জাতগুলো এবার বেশি চাষাবাদ করেছেন। ব্রি ধান–৮৮ জাত অন্যান্য জাতের চেয়ে ১০–১৫ দিন আগাম হওয়ায় এখন গুমাইবিলে এ জাতটির ধান কাটা শুরু হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস বলেন, গুমাইবিল সহ পুরো উপজেলায় হাইব্রিড বোরো ধানের ফলন ভাল হয়েছে। রাঙ্গুনিয়ায় আগাম জাতের ধান কাটা চলছে। আর ১০–১৫ দিনের মধ্যে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হবে। এবারও ধানের উৎপাদন বরাবরের মতো রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে।