প্রতি তিন মাস পর একটি করে সভা অনুষ্ঠানের কথা। তবে বন্দর উপদেষ্টা কমিটির সভা হয়নি গত এক বছরেও। এক বছর পর আগামী ২০ ডিসেম্বর বৈঠকে বসছে কমিটি। গত সেপ্টেম্বরে কমিটির ১৪তম সভা হওয়ার কথা থাকলেও নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী করোনা আক্রান্ত হওয়ায় সভাটি বাতিল করতে হয়েছিল।
চট্টগ্রাম বন্দরের সার্বিক উন্নয়নের জন্য নৌ পরিবহন মন্ত্রীকে প্রধান করে ২০১০ সালে বন্দর উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়। বন্দরে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমস্যা চিহ্নিত করে উত্তরণের উপায় বাতলে দেওয়াসহ প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান এবং বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংস্থার মাঝে সমন্বয় করাই এই কমিটির প্রধান কাজ বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।
২০১০ সালের অক্টোবর মাসে কমিটির প্রথম সভা হয়। ওই সভায় সিদ্ধান্ত ছিল, তিন মাস পর কমিটি বৈঠকে বসে সংকট চিহ্নিত এবং সুরাহায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। কন্টেনার হ্যান্ডলিংসহ বন্দরের সার্বিক কার্যক্রমে গতি আনার ক্ষেত্রে এই কমিটি পরামর্শ দেবে। এসব পরামর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে তাও এই কমিটি মনিটরিং করবে। উৎসাহ এবং আশা নিয়ে কমিটির কার্যক্রম শুরু হলেও পরবর্তীতে সবকিছু ঝিমিয়ে পড়ে।
গত দশ বছরে ৪০টি সভা হওয়ার কথা থাকলেও হয়েছে ১৩টি। ৬০ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটিতে নৌপরিবহন মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী সভাপতি এবং বন্দর চেয়ারম্যান সদস্য সচিব। চট্টগ্রামের ১৬ আসনের সংসদ সদস্য, সংরক্ষিত আসনের দুই মহিলা সংসদ সদস্য, সিটি মেয়র, সরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি কমিটিতে সদস্য হিসাবে রয়েছেন।
২০১৯ সালের ৪ সেপ্টেম্বর উপদেষ্টা কমিটির ১৩তম সভা হয়। নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে বন্দর প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত ওই সভায় বে টার্মিনাল, পতেঙ্গা কন্টেনার টার্মিনাল, বন্দরের কন্টেনার জট, নিলামযোগ্য কন্টেনার দ্রুত স্থানান্তরসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করে বন্দর ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে বেশ কিছু সুপারিশ প্রণয়ন করা হয়। এগুলোর মধ্যে ছিল বে-টার্মিনালকে সরকারের ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব প্রেরণ, বে-টার্মিনালে ডেলিভারি ইয়ার্ড স্থাপন, নিলামযোগ্য পণ্য ও কন্টেনার নিলামের জন্য ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নেওয়া, সপ্তাহের প্রতিদিন ডেলিভারি অর্ডার পাওয়া নিশ্চিত করা, আইসিডি ও অফডক সিটি কর্পোরেশনের ২০ কিলোমিটারের বাইরে এক বছরের মধ্যে স্থানান্তরের ব্যবস্থা নেওয়া, কর্ণফুলীর দুই তীরে নতুন কোনো প্রতিষ্ঠানকে ইজারা না দেয়া, পতেঙ্গা কন্টেনার টার্মিনাল ২০২১ সালের মধ্যে চালু করা, সীতাকুণ্ডে পোর্ট স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই কার্যক্রম দ্রুততর করা, ক্যাপিটাল ড্রেজিং সম্পন্ন করা, যানজট নিরসনে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ প্রণয়ন করা হয়েছিল। এসব সিদ্ধান্ত ও সুপারিশের সর্বশেষ পরিস্থিতি ১৪তম বৈঠকে আলোচনা করা হবে।
বন্দর সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, ২০ ডিসেম্বর বন্দর উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। বৈঠকে কেউ স্বশরীরে অংশ নেবেন, কেউ নেবেন জুম অ্যাপসের মাধ্যমে। আমরা দুই ধরনের প্রস্তুতি নেব।