তিন মণ ওজনের ডোরাকাটা ছাগল

| শনিবার , ২ অক্টোবর, ২০২১ at ৫:৩৪ পূর্বাহ্ণ

ভরদুপুরে খামারে একপাতে খাবার খেতে ব্যস্ত ক্ষুধার্ত ছাগলের পাল। এতে হাঁটু গেড়ে অংশ নেওয়া গায়ে ডোরাকাটা বিশালাকার একটি ছাগলকে বাঘ ভেবে ভুল করতে পারেন যে কেউ। গাইবান্ধার পলাশবাড়ী পৌর শহরের হরিনমারী গ্রামে ‘সেভ গট’ নামে খামারে দেখা মেলে যমুনা পাড়ি জাতের বাঘাকৃতির এ ছাগলটির। এর ওজন ১২০ কেজি। উচ্চতা প্রায় চার ফুট। এখানে আরো রয়েছে ৮০ কেজি ওজন ও তিন ফুট উচ্চতার হরিয়ানা, একই ওজন-উচ্চতার তোঁতাপাড়ি ছাড়াও বয়ার ও ব্ল্যাক বেঙ্গলসহ নানা জাতের ছাগল। খবর বাংলানিউজের।
খামারের বিশাল ছাগলটি মূলত প্রজন্মের কাজে ব্যবহৃত হয়। এর বাজার মূল্য এক লাখ ২০ হাজার টাকা। এর দৈনিক খাদ্য তালিকায় রয়েছে এক কেজি ছোলা, ভুষি আধা কেজি ও পাঁচ কেজি কাচা ঘাস। দিনবদলের চেষ্টায় ওই খামারে দিন-রাত লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন রেজাউল করিম রতন (৪০) ও মাসুমা আক্তার দম্পতি। পরিপাটি করে সাজানো হয়েছে খামারটি। মূলফটক দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই বাঁয়ে উচু মাচাং করে তৈরি করা হয়েছে বিশাল ছাগল রাখার ঘর। ভেতরে রয়েছে বেশ কিছু শেড। সামনে রয়েছে চারপাশে ঘেরা চারণভূমি। এর ডান পাশে আলাদা শেডে রয়েছে খামার ও বিশ্রামের স্থান। কোনো ছাগল অসুস্থ হলে পাশের একটি ঘরে নেওয়া হয় চিকিৎসার জন্য। এ খামারেরই এক কোণে ছোট্ট একটি ঘরে স্ত্রী-সন্তানসহ বসবাস করেন রতন মিয়া।
রেজাউল করিম রতন জানান, এসএসসি পাশ করার পর আর লেখাপড়া চালানো সম্ভব হয়নি। জীবিকার সন্ধানে মুদি দোকান, ফলের দোকান করেও সফলতা মেলেনি। এর আগে গার্মেন্টসে কাজ করেও ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। শেষে ছাগল পালন করে দিনবদলের স্বপ্ন দেখছেন। ছোট ভাই রহমাতুল্লাহ আল আমিন লিটুর অর্থায়নে ২০১৮ সালে যাত্রা শুরু করে দেশি-বিদেশি ছাগলের খামারটি।
বাৎসরিক ছয় হাজার টাকা ভাড়ায় এক বিঘা জমি লিজ নিয়ে খামারটি শুরু করেন রতন। এতে শুরুতে ছাগলের সংখ্যা ছিল ১৭। বর্তমানে ছাগলের সংখ্যা অর্ধশত। ছাগল একটি লাভজনক প্রাণী। এদের বছরে দু’বার প্রজনন ক্ষমতা রয়েছে। আমরা ২০২৮ সাল পর্যন্ত ১০ বছরের একটি পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। সে সময় আমাদের খামারে ছাগলের সংখ্যা হবে অন্তত ৫০০টি। বর্তমানে ছাগলের খাবার-চিকিৎসা বাবদ দৈনিক গড়ে এক হাজার থেকে ১২০০ টাকা খরচ হচ্ছে বলে জানান রতন।
পলাশবাড়ী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আলতাফ হোসেন জানান, নিয়মিত ওই দম্পতির ছাগলের খামার পরিদর্শনের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পরামর্শ-চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধলেখক ফরহাদ খান আর নেই
পরবর্তী নিবন্ধদখল-দূষণে বিপন্ন ত্রিপুরা সুন্দরী ছড়া