ছোট হয়ে আসা আমাদের মানসিকতা থেকে মুক্তি চাই

জিল্লুর রহমান | মঙ্গলবার , ৬ এপ্রিল, ২০২১ at ১০:২০ পূর্বাহ্ণ

দুনিয়াটা সত্যি অনেক ছোট হয়ে আসছে যেমন আমাদের মন। মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব যেমন চলে যাচ্ছে তেমনি আত্মীয়তা আর দায়বদ্ধতা কমে যাচ্ছে হুরহুর করে অথচ একসময় সবাই সবাইকে আপন ভাবত, জগড়া করত আবার একসাথে খেত, সবাই সবার খবরাখবর রাখত। আজ দুপুরে খাওয়ার টেবিলে বাচ্চাদের যৌথ পরিবারের কথা বললাম। আমাদের বাচ্চারা কোন শাসন পায়নি এমন কি আদরও না আবার উপদেশও না। আমি ডিগ্রি পড়ার সময়ও মায়ের মার খেয়েছি। বাপের সামনে কখনো দাঁড়াতে পারিনি। আত্মীয় স্বজন সবাই শাসন করত আবার আদর করত আর এখন আমাদের বাচ্চারা শুধু মা বাবা। কতইনা আমরা ছোট হয়ে আসছি। গত দুইদিন আমার মা বাবার সাথে রাগারাগি করছি কিন্ত তারা ঢাকা তে চাকা ফেলবে না দরকার হলে রোদে পুড়বে অসুখে ভোগবে তাও না। একসময় মনে হচ্ছে সব ছেড়ে ছুঁড়ে গ্রামে যাই কিন্ত ওখানেও নোংরা রাজনীতি। আবার ওখানে তো আমাদের কর্মও নেই। কত অসহায় আসলে আমরা। মরলে কান্নার লোকও হারিয়ে যাচ্ছে।এখন খুব আপনজন মরলে যেমন কেউ ব্যথিত হয়না তেমনি কোন আপন জনের সুসংবাদেও কেউ উচ্ছ্বসিত হয়না। পরিবারগুলো থেকে আমরা এক এক করে দূরে যেতে যেতে এখন সবাই মুক্ত স্বাধীনতার এক শেকলে বন্দি হয়ে পড়ছি। আমরা ভাবছি আমাদের কেউ বলার নেই আমরা মুক্ত অথচ আমরা হারাচ্ছি আমাদের ঐতিহ্য আর আমাদের স্বকীয়তা। পারিবারিক বন্ধন মুক্ত হচ্ছি একে একে। হিংসা আর প্রতিযোগিতার নোংরামিতে আসক্ত হয়ে পড়ছি প্রতিনিয়ত। আগে আমরা সবাই সবার ভাল কামনা করতাম আর এখন ভাবি আমার চেয়ে ওর ভাল যেন না হয়। আমাদর সন্তানরা এই তথাকথিত মুক্ত সমাজে অবমুক্ত করতে শিখছে তাদের শিকড়ের। আসক্ত হয়ে পড়ছে স্বল্প দিনের পরিচয়ের বন্ধুদের ভাল খারাপ পথ অনুসরণে। অল্পতে তুষ্ট আবার বেশীতে আসক্ত হতে গিয়ে তারা মাদক সহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে সেইসাথে টিকটিক আর স্যোসাল মিডিয়ার অনিয়ন্ত্রিত পথে ছুটতে ছুটতে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। আসুন এ থেকে পরিত্রাণের উপায় বের করি অন্যথায় একদিন আমাদের সবার জায়গা বৃদ্ধাশ্রমেও খুঁজে পাওয়া দায় হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইপিজেড এলাকার মসজিদ, মন্দির ও প্যাগোডায় মাক্স বিতরণ
পরবর্তী নিবন্ধনিঃশর্ত ভালোবাসা