ছাত্রদের সাথে নিয়ে চট্টগ্রামকে ক্লিন, গ্রীন, হেলদি সিটি হিসেবে গড়তে চান চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর আন্দরকিল্লা কদম মোবারক সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণ ও কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র চট্টগ্রামের উন্নয়নে ছাত্রদের সহায়তা চান।
মেয়র বলেন, আমি মেয়র হিসেবে চট্টগ্রামবাসীকে একটা সুন্দর, পরিচ্ছন্ন, গ্রীন, হেলদি সিটি উপহার দিতে চাই। কিন্তু এটা আমার একার পক্ষে সম্ভব নয়। এই যুদ্ধে আমি চাই আমার ছাত্র ভাইয়েরা আমার সাথে থাকবে। আমি ছাত্রদের প্রশংসা করছি। গত বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ছাত্ররা ট্রাফিক বিভাগের কাজ করেছে। ছাত্ররা স্বৈরাচারী সরকার পতনের জন্য রাস্তায় যুদ্ধ করেছে। এই চট্টগ্রাম শহরকে সুন্দর করার জন্য প্রয়োজনে ছাত্রদেরকে আরেকবার প্রস্তুত হতে হবে। ইনশাল্লাহ আমি আশা করছি ছাত্রদেরকে নিয়ে আমি একটি ক্লিন, গ্রীন, হেলদি সিটি চট্টগ্রামবাসীকে উপহার দিব।
নৈতিক শিক্ষার উপর জোর দিয়ে মেয়র বলেন, জ্ঞান অন্বেষণ করো। জ্ঞানের জন্য কোন বয়স নেই। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমাদের শিখতে হবে। মানে পুরা জীবনেই আমাদের জ্ঞান অন্বেষণের জন্য সংগ্রাম করতে হয়। পুরা জীবনটাই আমাদের একটা সংগ্রাম। তবে এর মধ্যে যে জিনিসটি দরকার সেটি হচ্ছে ‘নৈতিক’ শিক্ষা। আমি একজন ডাক্তার হয়ে যখন একজন গরিব রোগীকে চিকিৎসা দেওয়ার মনোবৃত্তি থাকবে না, তখন আমার এ শিক্ষার কোন দাম থাকবে না। ওটা কোন আলোকিত শিক্ষা নয়। আলোকিত শিক্ষা হচ্ছে সেটা, যখন আমি ডাক্তার হয়ে একজন রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দিলাম, তাকে কিছু ওষুধ দিলাম, সেটাই হলো আলোকিত শিক্ষা এবং এই শিক্ষাটাই আমাদের দরকার। শিক্ষার্থীদের শুধু এটুকুই বলব যে, সবাইকে এ ধরনের আলোকিত ও নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। তাহলেই আমরা একদিন দুর্নীতিমুক্ত, সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়তে পারবো।
পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে ছাত্রদের প্রশিক্ষণ দিতে শিক্ষকদের ভূমিকা প্রত্যাশা করে মেয়র বলেন, আমি যেটার উপর জোর দিব সেটা হচ্ছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা। পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। আপনারা ছাত্রদেরকে শিখাতে পারেন সবাইকে একটা চকলেট দিয়ে, চকলেটের কাভারটা তারা কোথায় ফেলছে তা পর্যবেক্ষণ করলেন। কাভারটা সে নিচে ফেলল না, ডাস্টবিনে ফেলল। যারা ডাস্টবিনে ফেলেছে তাদেরকে একটা শ্রেণি। আর যারা ডাস্টবিনে ফেলল না তাদেরকে আরেকটা শ্রেণি রাখবেন। যারা ডাস্টবিনের বাইরে ফেলছে তাদের শিক্ষা দিতে হবে যেন সে পরবর্তীতে সেটা আর ডাস্টবিনের বাইরে না ফেলে। কারণ তারা স্কুল থেকে এই শিক্ষা নিবে। স্কুল এমন একটি জায়গা যেটার প্রতিচ্ছবি বা রিফলেকশন স্থায়ী।
নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখতে দোকানগুলোতে বিন রাখা বাধ্যতামূলক করা হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, আমি অনতিবিলম্বে চট্টগ্রামের যতটি দোকান আছে যতটি প্রতিষ্ঠান আছে তারা ময়লার বিন বাধ্যতামূলকভাবে রাখছে কীনা তা দেখব। আমি অলরেডি বিন কালেকশন করছি সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে। ময়লা যাতে তারা যেখানে সেখানে না ফেলে। ফেললে তাদেরকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনা হবে। আইন শুধু পকেটে নিয়ে ঘুরলে হবে না। মাঝে মধ্যে আইনের প্রয়োগ করতে হবে দেশকে বাঁচানোর জন্য, দেশকে সুন্দর করার জন্য এবং পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য।
অনুষ্ঠানের পর মেয়র স্কুল প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখেন এবং স্কুলের বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে অবগত হয়ে সমস্যাগুলো সমাধানের আশ্বাস দেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চসিক শিক্ষা কর্মকর্তা রাশেদা আক্তার, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক টিংকু কুমার ভৌমিক, আলাউদ্দিন আল নুর, এম. এ. হালিম বাবুল, সাজ্জাদ শরীফ, ইমরান জুয়েলসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা।