কক্সবাজার সদরের পিএমখালীতে প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ৫ বছরের চাচাতো ভাইকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় মো. তারেক আজিজ (২৬) নামে এক যুবককে আটক করেছে র্যাব-১৫। তিনি মধ্যম জুমছড়ি এলাকার মোঃ আজিজের ছেলে।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টায় এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কক্সবাজার র্যাব ক্যাম্প (সিপিএসসি) এর কোম্পানি অধিনায়ক মোঃ আনোয়ার হোসেন শামীম। গত ১ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টায় কক্সবাজার সদরের পিএমখালী ইউনিয়নের পশ্চিম জুমছড়ি নামক এলাকায় আবিদ নামে ৫ বছরের এক শিশু নিখোঁজ হয়।
নিখোঁজের একদিন পরেই একটি পুকুরে ভাসমান অবস্থায় শিশুর লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। এ সময় পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে। এই ঘটনার পর নিহত আবিদের বাবা মোঃ ইসহাক বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যেখানে কয়েকজন ব্যাক্তিকে অজ্ঞাত আসামী করে।
মামলার হওয়ার পর থেকে ঘটনার ছায়া তদন্তে নামে র্যাব। পরে গেল রাত ১২টায় জুমছড়ি এলাকা হতে মোঃ তারেক আজিজ নামে এক ব্যাক্তিকে আটক করে। এ সময় অপহরণ কাজে ব্যবহৃত একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা ও একটি বাটন ফোন উদ্ধার করা হয়।
র্যাবের এ কর্মকর্তা আরও বলেন- আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞেসাবাদে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে।
আটক মোঃ তারেক আজিজ জানায় তিনি পেশায় একজন অটোরিক্সা চালক। দীর্ঘদিন ধরে তার চাচাতো বোনকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। তবে এরপর বারবার ব্যর্থ হয় তার আপন চাচাতো ভাই আবিদকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
সে লক্ষ্যে প্রায় সময় আবিদের জন্য চকলেট, আচার ও অন্যান্য খাবার নিয়ে আসতো। যাতে তার সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠে। গত ১ ফেব্রুয়ারী বিকেল সাড়ে ৩টার সময় আবিদ (ভিকটিম) বাড়ির পাশের রাস্তায় খেলাধুলা করছিল। একপর্যায়ে তারেক আজিজ ভিকটিম আবিদকে চকলেটের লোভ দেখিয়ে তার অটোরিক্সায় তুলে পিএমখালী ইউনিয়নের জুমছড়ি হিন্দুপাড়াস্থ বাঁকখালী নদীর পাড়ে নিয়ে যায় এবং সেখানে সন্ধ্যা পর্যন্ত তার সাথে খেলাধুলা করে যাতে কেউ বুঝতে না পারে। সন্ধ্যার পরে নদীর পাড়ের পার্শ্বে একটি পুকুরপাড়ে তাকে বেঁধে রেখে বাড়িতে চলে আসে।
সন্দেহ এড়াতে কৌশলে সেও বাড়ির লোকজনের সাথে আবিদকে খোঁজাখুজি করতে থাকে। খোঁজাখুজির একপর্যায়ে কোথাও না পেয়ে সবাই বাড়িতে চলে গেলে সে (তারেক আজিজ) আবার সেই পুকুরপাড়ে যায়। পুকুরপাড় থেকে আবিদের (ভিকটিম) মায়ের মোবাইলে কল দিয়ে জানায় যে, তোর ছেলেকে অপহরণ করেছি, বাঁচাতে হলে তিন লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। না দিলে তোর ছেলেকে প্রাণে মেরে ফেলব। এই বলে ফোনটা কেটে দেয়। পরে সে আবিদকে পুকুরে নিয়ে গিয়ে পানিতে চেপে ধরে মেরে ফেলে এবং তাকে পুকুরে ফেলে দিয়ে চলে আসে বলে জানায়।
মোঃ তারেক আজিজ কিছুদিন আগে একটি বিয়েও করেছিল। তারপরও চাচাতো বোনকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে প্রায় সময় উত্যক্ত করত।
আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানায় র্যাব।