চসিকের পৌরকর আদায়ে গতি

চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে শত কোটি টাকা আদায়

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ৫ জানুয়ারি, ২০২১ at ৬:২৯ পূর্বাহ্ণ

গতি পেয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পৌরকর (গৃহকর ও রেইট) আদায়ে। চলতি ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের ছয় মাস শেষে ৯৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা পৌরকর আদায় হয়েছে। যা গত ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের একই সময়ের চেয়ে ১২ কোটি ৯১ লাখ ৫৭ হাজার ১৬৭ টাকা বেশি। অর্থ বছরের শুরুতে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নে জোর দেয়াসহ বিভিন্ন উদ্যোগের কারণেই পৌরকর আদায়ে গতি এসেছে বলে জানিয়েছেন চসিকের রাজস্ব শাখার কর্মকর্তরা। অবশ্য টাকার অংকে পৌরকর আদায়ের পরিমাণ বাড়লেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেকে পিছিয়ে আছে সংস্থাটি। আদায় হওয়া পৌরকর লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ২৯ শতাংশ। চলতি অর্থ বছরে লক্ষ্যমাত্রা আছে ৩৪৮ কোটি ৪০ লাখ ৪৮ হাজার ৭৫০ হাজার টাকা। এর মধ্যে সরকারি হোল্ডিংয়ের বিপরীতে ১৬০ কোটি ৪৯ লাখ ৯৭ হাজার ৩৪৯ টাকা এবং বেসরকারি হোল্ডিংয়ের বিপরীতে ১৮৭ কোটি ৯০ লাখ ৫১ হাজার ৪০১ টাকা ধার্য করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, নগরে ১ লাখ ৯৫ হাজার ৭৬৬ টি হোল্ডিং আছে। এর মধ্যে সরকারি এর মধ্যে সরকারি হোল্ডিংয়ের সংখ্যা এক হাজার ৫১৬টি এবং বেসরকারি হোল্ডিং আছে এক লাখ ৯৪ হাজার ২৫০টি। সিটি কর্পোরেশন অ্যাক্ট ২০০৯ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতেই চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মোট ১৭ শতাংশ পৌরকর আদায় করে থাকে। তার মধ্যে ৭ শতাংশ হোল্ডিং ট্যাঙ (গৃহকর), ৩ শতাংশ বিদ্যুতায়ন রেইট এবং ৭ শতাংশ আর্বজনা অপসারণ রেইট রয়েছে।
পৌরকর আদায়ের লক্ষ্যেমাত্রা পূরণে পিছিয়ে থাকা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মুফিদুল আলম দৈনিক আজাদীকে বলেন, ডিমান্ড বৃদ্ধি করার কারণে আদায়ের পার্সেন্টিজ কম হয়েছে। কিন্তু আদায়ের পরিমাণ তো আগের চেয়ে বেড়েছে। আশা করছি, অর্থ বছর শেষে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।
আদায় বৃদ্ধির কারণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে সব সার্কেলের কর্মকর্তা ও আদায়কারী দুর্বল ছিল তাদের সেখান থেকে অন্যত্র বদলি করেছি। সকল শূন্য পদগুলো পূরণ করেছি। আমাদের যারা উপ-কর কর্মকর্তা আছেন তাদের প্রতিও নির্দেশনা ছিল আদায় করার জন্য। মনিটরিং জোরদার করেছি। করদাতাদের জন্য সুবিধা দিয়েছি। সারচার্জ মওকুফ করায় তারাও পৌরকর প্রদানে এগিয়ে এসেছে। এছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে দফায় দফায় যোগাযোগ করেছি। তারাও সাড়া দিয়েছে।
সেপ্টেম্বর মাসে সর্বোচ্চ আদায় : অর্থ বছরের গত জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত আদায়ের হার পর্যালোচনায় জানা গেছে, গত সেপ্টেম্বর মাসে সর্বোচ্চ ২২ কোটি ৭ লাখ ৪২ হাজার ৬৩৭ টাকা আদায় হয়েছে। এ ছাড়া গত ডিসেম্বর মাসে ৯ কোটি ৮৫ লাখ ১৬ হাজার ৪৫৮ টাকা, নভেম্বর মাসে ৮ কোটি ৭৭ লাখ ২১ হাজার ৯৫৬ টাকা এবং অক্টোবর মাসে ৯ কোটি ৫৭ লাখ ৫৩ হাজার ৯৮৬ টাকা আদায় হয়েছে।
চসিকের রাজস্ব শাখা সূত্রে জানা গেছে, সংস্থাটির নিজস্ব আয়ের মূল উৎস পৌরকর। নগরবাসীর সার্বিক সেবা প্রদান নিশ্চিতকল্পে সিটি কর্পোরেশনে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাৎসরিক বেতন-ভাতাদি পরিশোধ, নগরীর আবর্জনা অপসারণ, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতকরণ, সড়ক আলোকায়ন, শিক্ষা সেবা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদান, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ইত্যাদি বহুমুখী কর্মকাণ্ডের সিংহভাগ ব্যয় পৌরকর থেকে নির্বাহ করা হয়।
সংশ্লিরা বলছেন, পৌরকর আদায় কমে গেলে খাতটির আয়ের উপর নির্ভরশীল সেক্টরগুলো থমকে যায়। যেমন করোনা পরিস্থিতির কারণে গত ২৫ মার্চ থেকে ৪ মে পর্যন্ত পৌরকর আদায় সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। এরপর ৫ মে থেকে আদায় শুরু হলেও পরবর্তী দুই মাস আদায়ের হারও ছিল কম। এর প্রভাবে এপ্রিল ও মে মাসে নির্দিষ্ট তারিখে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকুতুবদিয়া চ্যানেলে ১০ জেলেকে অপহরণের অভিযোগ
পরবর্তী নিবন্ধটিকা আসা নিয়ে শঙ্কা নেই