ভাঙা রাস্তা সংস্কারে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে সমগ্র বাংলাদেশ নতুন যুগে প্রবেশ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রথম এ প্রযুক্তি আমরা চট্টগ্রাম থেকে শুরু করেছি। গতকাল সকালে নগরের সিআরবি সাত রাস্তার মোড়ে আধুনিক ‘পোট হোল পেচার’ বা ‘রোড মেনটেনেন্স ট্রাক উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, রাস্তায় ছোট-খাট যেসব ভাঙা ও গর্ত থাকে সেগুলো এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে মেরামত করতে পারব। প্যাচওয়ার্ক করতে পারব। কাজে গতি বাড়বে। আগে বৃষ্টির সময় বিটুমিন ব্যবহার করে রাস্তায় কাজ করতে পারতাম না। এখন প্রযুক্তি ব্যবহার করে বৃষ্টির মধ্যেও কাজ করতে পারব। বলা যায়, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বর্ষা মৌসুমেও রোড মেনটেনেন্স কাজ করার সক্ষমতা অর্জন করেছে সিটি কর্পোরেশন।
তিনি বলেন, সড়ক সংস্কারে আধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত রোড মেনটেনেন্স ট্রাক ব্যবহারের ফলে সময় ও অর্থ দুটিই বাঁচবে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন ট্রাকগুলো অত্যন্ত জনপ্রিয়। রাস্তায় গর্ত বা ফাটল দেখা দিলে এই ট্রাকের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক মেরামতের ফলে আরো বড় গর্ত বা ফাটল থেকে রাস্তাকে রক্ষা করা যাবে।
মেয়র বলেন, ট্রাকগুলো ব্যবহারের ফলে আলাদা এসফল্ট প্লান্টের প্রয়োজন হবে না। তাৎক্ষণিক মিক্সার তৈরি করা যাবে। তাই বৃষ্টি-বাদল বা দুর্যোগের কারণে মেরামত কাজ স্থগিত হলে মিঙার নষ্ট হবে না। রোড মেনটেনেন্স ট্রাকগুলোতে উন্নতমানের ইমালশন ব্যবহারের ফলে কাজের গুণগত মান বজায় থাকবে এবং দীর্ঘস্থায়ী হবে।
নালা-নর্দমা থেকে ময়লা-আবর্জনা অপসারণেও আধুনিক প্রযুক্তি সংগ্রহ করার পরিকল্পনা আছে জানিয়ে তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে। আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। এরপরও আমরা চেষ্টা করছি। এখন রাস্তার জন্য আধুনিক প্রযুক্তি সংগ্রহ করেছি। ধীরে ধীরে নালা-নর্দমার ময়লা অপসারণের জন্যও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে মনোযোগী হচ্ছি। তিনি বলেন, অনেক খাল আছে খানে স্কেভেটর যেতে পারে না। যারা শ্রমিক আছে তারাও যেতে পারে না। সেখানে যদি উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ময়লা-আর্বজনা, মাটি উত্তোলন করা সহজ হবে। সেভাবেই আমাদের চিন্তা আছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিডিএ’র মেগা প্রকল্পভুক্ত ৩৬ টি’র বাইরে যেসব খাল আছে সেগুলোতে ইতোমধ্যে পরিষ্কার কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছি। ৪১ ওয়ার্ডে স্কেভেটর দিয়ে এবং ম্যানুয়ালি কাজ করছি। বর্ষার আগে যদি সেখানে কাজ শেষ করতে পারি তাহলে কিছুটা হলেও মানুষের ভোগান্তি কম হবে। তিনি বলেন, চট্টগ্রামে যত সেবাসংস্থা আছে সবাইকে নিয়ে, সবার সাথে সমন্বয় করে চট্টগ্রামের উন্নয়ন করব। পলিথিন ও ককসিট নিয়ন্ত্রণে আমরা কাজ করছি। তিনটি বাজারে পলিথিন নিষিদ্ধ করেছি। আগামী বছর থেকে পলিথিন ও ককসিটের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান থাকবে আমাদের।
এসময় উপস্থিত ছিলেন চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) সুদীপ বসাক, নির্বাহী প্রকৌশলী বিপ্লব দাশ, মির্জা ফজলুল কাদের, জয়সেন বড়ুয়া, তৌহিদুল আলম, পরিচ্ছন্ন পরিদর্শক প্রণব শর্মা, সিবিএ’র সভাপতি ফরিদ আহমদ, সহ-সভাপতি জাহেদুল আলম চৌধুরী।
উল্লেখ্য, ৪২০ কোটি ৯৪ লাখ টাকায় গৃহীত ‘চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এবং ব্রিজ সমূহের উন্নয়নসহ আধুনিক যান যন্ত্রপাতি ও সড়ক আলোকায়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ১২ কোটি ১০ লাখ টাকায় চারটি ‘পোট হোল পেচার’ সংগ্রহ করা হয়।