রাউজানের হলদিয়া ইউনিয়নে নুর জাহান আকতার নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল ১ অক্টোবর রোববার দুপুরে নুরজাহানকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছে এলাকার মানুষ। তার স্বামী এনাম (২২) সহ পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে গেলে বিষয়টি জানাজানি হয় সন্ধ্যার দিকে। এর আগে ওই পরিবারের সদস্যরা নুরজাহান বিষপানে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচারণা চালিয়েছিল। নুরজাহানের পিতা হাসান আলী থানায় হত্যা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, এই ঘটনার পর থেকে স্বামী এনামসহ পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে গেলেও এনামের মা ঘরে ছিলেন। জানা যায়, খবর পেয়ে সন্ধ্যার পর পুলিশ ঘর থেকে ওই নারীর নিথর দেহের সুরতহাল রির্পোট করার পর উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঘরে থাকা এনামের মাকেও সাথে নেয়া হয়।
গৃহবধূ নুর জাহান ফটিকছড়ি উপজেলার লেলাং ইউনিয়নের হাসান আলী কন্যা। আর তার স্বামী মো. এনাম হলদিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জানিপাথর এলাকার জাবেদ আলীর পুত্র।
স্থানীয়রা জানান, এনাম এক সময় প্রবাসে ছিলেন। গত কয়েক বছর আগে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে নুর জাহানকে বিয়ে করেন। পরবর্তীতে সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন সময় নুর জাহানের ওপর শারীরিক নির্যাতনও চালানো হতো। বিষয়টি নিয়ে কথা বললে হলদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি দুপুর ২টার দিকে স্থানীয় মেম্বার ফিরোজের কাছে এই ঘটনা শুনেছি। ফিরোজ ওই পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে ওই নারী বিষপান করেছেন বলে জানান। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি ওই গৃহবধূর নিস্তেজ দেহ বিছানায় পড়ে আছে। মহিলাদের কাছে জানতে পারি তার শরীরের বিভিন্নস্থানে দাগ রয়েছে। মরদেহ যেই বিছানায় ছিল সেই বিছানার বালিশ ও বেড উল্টানো অবস্থায় দেখা গেছে। চেয়ারম্যানের ধারণা মারধর করার পর বালিশ চাপা দিয়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হতে পারে।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, গৃহবধূকে তার স্বামী হত্যা করেছে এমন অভিযোগ পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠাতে থানায় আনা হয়েছে। ওই পরিবারের সব সদস্য পালিয়ে গেলেও ঘরে অবস্থানকারী এনামের মাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। এই ঘটনায় নিহত গৃহবধূর পিতা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে তিনি জানান।