গরম বেশি পড়লেও দোষ আমাদের : ফখরুলকে কাদেরের জবাব

‘গোপন সংলাপ নয়, প্রয়োজনে ফখরুলকে ফোন করব’

| মঙ্গলবার , ৭ মার্চ, ২০২৩ at ৫:১১ পূর্বাহ্ণ

দেশে গরম বেশি পড়লেও বিএনপি সরকারকে দায়ী করবে কিনা, সে প্রশ্ন রেখেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলা এবং সীতাকুণ্ড ও ঢাকার মিরপুর রোডের বিস্ফোরণের ঘটনায় সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্য রেখেছেন তার জবাবে কাদেরের এ মন্তব্য এল। খবর বিডিনিউজের। গতকাল সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীর প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, এখন আমার কাছে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশে এই মুহূর্তে গরম বেশি পড়লে দোষ পড়বে আমাদের উপর। আগের দিন রাজধানীতে এক কর্মসূচিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সীতাকুণ্ডে এবং আজকে ঢাকায় বিস্ফোরণ হয়েছে। আমাদের প্রশ্ন এই বিস্ফোরণগুলো ঘটছে কেন? পরে নিজেই জবাব দিয়ে বলেন, সরকার যখন ব্যর্থ হয় তার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে, যারা এ বিষয়গুলোর দায়িত্বে রয়েছেসব কিছু সঠিকভাবে আছে কিনা, সরকারি সংস্থাগুলো সেই ব্যবস্থা নিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে এবং সরকারের ব্যর্থতার কারণে এই ধরনের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সদস্যদের ওপর হামলা, প্রাণহানি, বাড়িঘরে আগুন, লুটপারের ঘটনায় ফখরুল বলেন, শুধুমাত্র জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার জন্য, অন্যখাতে প্রবাহিত করার জন্য এই ধরনের সাম্প্রদায়িকতা ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন নস্যাৎ করতে চায়। এই যে সাম্প্রদায়িক সমস্যা সৃষ্টি করা, বিভেদ সৃষ্টি করাএটা সরকার সৃষ্টি করছে। আমরা মনে করি তারা অত্যন্ত অসৎ উদ্দেশ্যে করছে।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লাগল কেন? একসঙ্গে এই ঘটনাগুলো ঘটছে। আর সব দোষ আওয়ামী লীগের ওপর চাপায়। ওখানে (সীতাকুণ্ড) অঙিজেন ব্লাস্ট হয়ে অ্যাঙিডেন্ট হয়ে গেছে। দোষ কার? আওয়ামী লীগের। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কার্বন ডাই অঙাইড আর নাইট্রোজেন একই জায়গায় রাখায় সংঘর্ষ হয়ে ব্লাস্ট হয়েছে। দোষ কার? আওয়ামী লীগের। এখন আমার কাছে মনে হচ্ছেশীত বেশি, বজ্রপাতে মৃত্যুর জন্যও আওয়ামী লীগকে দায়ী করবে। তাদের অবস্থানটা কী? তাদের অবস্থান ক্ষমতায় যাওয়া নয়। তাদের অবস্থান শেখ হাসিনাকে হটানো। ক্ষমতায় যাওয়া তাদের লক্ষ্য নয়। বিএনপির লক্ষ্য একটাই, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে হটানো।

কাদের বলেন, পঞ্চগড়ের ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারা উসকানি দিয়েছে, এর মধ্যে যারা অ্যারেস্ট হয়েছে, তাদের (বিএনপি) নেতাও আছে। তারা যে স্বাভাবিক পথে যেতে চায় না, তাদের আন্দোলনে ভাটা নেমেছে, সে কারণে তারা এখন নাশকতার দিকে যাচ্ছে কি না, সেটা কিন্তু আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে।

আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেও ‘প্রয়োজনে’ কথা বলার আগ্রহের কথা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেছেন, সে ক্ষেত্রে তিনিও যেমন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ফোন করতে পারেন, তেমনি বিএনপি নেতাও তাকে কল করতে পারেন। তবে যাই হোক না কেন, সব ‘প্রকাশ্যে’ হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, ‘গোপনে’ কিছু তারা করেন না।

নির্বাচনের আগে বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসার কোনো সম্ভাবনা আছে কিনা বা ‘গোপনে’ কোনো আলোচনা হচ্ছে কিনাএমন প্রশ্নে কাদের বলেন, আমরা যা করি প্রকাশ্যে করি, গণতন্ত্রে ব্যাক ডোরে (গোপনে) আলোচনার কোনো প্রয়োজন নেই। দরকার হলে আমিই ফখরুল সাহেবকে ফোন করব, না হয় উনি দেবেন। তার কোনো সম্ভাবনা আছে কিনা এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, আমি দেখছি না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসীতাকুণ্ডে মাদ্রাসায় ছাত্রের ঝুলন্ত লাশ
পরবর্তী নিবন্ধওদের এগিয়ে যাওয়ার গল্প