খেলাপি মামলা হয় প্রতিদিন গড়ে পাঁচটি, নিষ্পত্তি তিনটি

চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালত

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৫:৫১ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতে খেলাপি মামলা নিষ্পত্তির চেয়ে দায়েরের সংখ্যাই বেশি। আদালত থেকে পাওয়া গত বছরের বার্ষিক হিসাব বিশ্লেষণে উঠে এসেছে এ তথ্য।
আদালত থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, গত বছরের ২৪৬ দিনে (১০৪ টি সাপ্তাহিক ছুটি এবং ১৫ টি সাধারণ ছুটি ও নির্বাহী আদেশের ছুটি বাদে) মোট ১ হাজার ২৩৪ টি মামলা দায়ের হয়। আর নিষ্পত্তি হয় ৭৯৯ টি। অর্থাৎ প্রতি কর্ম দিবসে গড়ে পাঁচটির বেশি খেলাপি মামলা দায়ের হয় অর্থঋণ আদালতে। বিপরীতে নিষ্পত্তি হচ্ছে মাত্র তিনটির কিছু বেশি মামলা।
আদালত সূত্র জানায়, গত বছর দায়ের হওয়া ১ হাজার ২৩৪ টি মামলার মধ্যে অর্থঋণ মামলা রয়েছে ৯০৫ টি, অর্থ জারি মামলা ২৬৯ টি এবং অর্থ মিস মামলা রয়েছে ৬০ টি। অন্য দিকে নিষ্পত্তি হওয়া মামলার মধ্যে অর্থঋণ মামলা রয়েছে ৫১৯ টি, জারি মামলা ২৩০ টি এবং মিস মামলা রয়েছে ৫০ টি।
আদালতসূত্র আরো জানায়, চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতে বর্তমানে ঝুলে আছে ৫ হাজার ১৬২ টি মামলা। এর মধ্যে তিন থেকে ছয় মাস ধরে ঝুলে রয়েছে ১ হাজার ৫৪৭ টি মামলা। ছয় মাস থেকে ১২ মাস ধরে ৬৬৬ টি মামলা, এক বছর ধরে ৩৫৩ টি মামলা এবং দুই বছর ধরে ঝুলছে ৩৭৬ টি মামলা। এ ছাড়া অন্যান্যভাবে ঝুলে রয়েছে ২ হাজার ২২০ টি মামলা। অর্থঋণ আদালতের সেরেস্তাদার মোক্তাদির মাওলা আজাদীকে জানান, গত বছর মোট ১৯০ কোটি ৪৯ লাখ ১৩ হাজার ২৫ টাকা খেলাপি ঋণ আদায় করা হয়েছে। ঋণ গ্রহীতাদের বন্ধকী সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করাসহ অন্যান্যভাবে এ পরিমাণ টাকা আদায় হয়। শুধু ডিসেম্বর মাসের হিসাব তুলে ধরে তিনি আরো বলেন, ডিসেম্বরে কোর্ট বন্ধই থাকে। তবে এবার ১৫ দিনের জন্য খোলা ছিল। এ সময়ের মধ্যে ২৫ টি মামলা নিষ্পত্তি করা হয়েছে। বিপরীতে আদায় করা হয়েছে ৩ কোটি ৮৫ লাখ ৬৯ হাজার ৯০৪ টাকা।
আইনজীবীরা বলছেন, চট্টগ্রামে মাত্র একটি কোর্ট। এ একটি কোর্ট থেকে বেশি কিছু আশা করার নেই। দিনে দিনে মামলা জট কমে আসবে বা নিষ্পত্তি সংখ্যা বেড়ে যাবে সে চিন্তা করা হবে বোকামি। কোর্টের সংখ্যা অবশ্যই বাড়াতে হবে। অন্যথায় এ সমস্যার সমাধান হবে না। নিষ্পত্তি যতই হোক মামলা জমতে থাকবে। সিনিয়র আইনজীবী জিয়া হাবীব আহসান আজাদীকে বলেন, ঢাকায় অর্থঋণ আদালত রয়েছে পাঁচটি।
আমাদের এখানে মাত্র একটি। অথচ ঢাকার পরেই
আমাদের অবস্থান। এর বাইরে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ নেই চট্টগ্রামে। সব মিলে সমস্যা অনেক বড়। এ সব সমস্যার সমাধান হওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, গত বছর সাতশ’র বেশি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা উদ্যোগী হয়ে আদালতের সংখ্যা বাড়ালে সংকট কেটে যাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধলোকাল বাস নেই, অবৈধ সিএনজি টেক্সির দৌরাত্ম্য
পরবর্তী নিবন্ধবোয়ালখালীর জৈষ্ঠ্যপুরা রাত নামলেই হাতির ভয়