বিশ্ব কারখানাখ্যাত চীনে রপ্তানি হলো বাংলাদেশের ইস্পাত। সীতাকুণ্ডের জিপিএইচ ইস্পাতে উৎপাদিত বিলেটের একটি চালান গতকাল চট্টগ্রাম বন্দরে চীনে রপ্তানির জন্য জাহাজে বোঝাই করা হয়েছে। চীনে বিলেট রপ্তানি উপলক্ষে ডিজিটাল প্লাটফর্মে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এই রপ্তানির মাধ্যমে বড় ধরনের এক সম্ভাবনার দুয়ার খুলে গেল। বক্তারা আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের রফতানি বাড়ানোর জন্য দূতাবাসগুলোকে আরো সক্রিয় হওয়ারও আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, করোনাকালীন দুঃসময়ের মধ্যেও জিপিএইচ ইস্পাত বিলেট রফতানি করে দেশ ও জাতির জন্য সম্ভাবনা ও সুসংবাদ বয়ে এনেছে। তারা ইস্পাত জগতে বিশাল কর্মযজ্ঞ সৃষ্টি করেছে।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করতে গিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জিপিএইচ ইস্পাতের বিলেট রফতানির তথ্যটি পৌঁছে দেব। রফতানি বাস্কেটে জিপিএইচ ইস্পাত নতুন আইটেম সংযুক্ত করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
বাণিজ্য মন্ত্রী নিজেকে একজন রফতানিকারক উল্লেখ করে বলেন, পোশাক শিল্পের মতো উৎপাদিত ইস্পাত সামগ্রী রফতানি করে জিপিএইচ ইস্পাত বৈদেশিক মুদ্রা আয়, বিদ্যুৎ ও গ্যাসসাশ্রয়ী পরিবেশবান্ধব সবুজ কারখানা সৃজন করেছে। এ প্রেক্ষাপটে জিপিএইচ ইস্পাতকে এমএস বিলেট ও এমএস প্রোডাক্ট রফতানিতে নগদ প্রণোদনা দেওয়ার আবেদনের বিষয়টি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ বিবেচনায় রয়েছে।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবল আলম বলেন, জিপিএইচ ইস্পাত আমাদের প্রবীণ সদস্য ও উদীয়মান শিল্পপ্রতিষ্ঠান। তারা নন ট্রেডিশনাল আইটেম বিলেট রফতানি করছে। বিলেট রফতানি করে বেসরকারি খাতের জন্য আন্তর্জাতিক সম্মান বয়ে এনেছে।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, আজ শুধু জিপিএইচ ইস্পাতের নয়, চট্টগ্রাম বন্দরেরও গর্বের দিন। এতে করে নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো অনুপ্রাণিত হবে। কারখানা পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা স্মরণ করে তিনি বলেন, জিপিএইচ ইস্পাত তাদের অসাধারণ দক্ষতা ও সক্ষমতা দিয়ে ‘স্টেট অব আর্ট’ প্রযুক্তির আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন করছে। ট্রেড ও ট্র্যারিফ কমিশন চেয়ারম্যান মুনসি শাহাবুদ্দিন আহামেদ বলেন, মুজিবশতবর্ষ ও শেখ হাসিনার মিশন ও ভিশন বাস্তবায়নে এটি একটি নতুন সংযোজন।
স্বাগত বক্তব্যে জিপিএইচ গ্রুপ চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রফতানির জন্য আন্তর্জাতিক মান অর্জন পূর্বক জিপিএইচ ইস্পাত অব্যবহৃত বিলেট রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয়, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় এক লাখ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে যাচ্ছি। একই সঙ্গে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৭০-১০০ মিলিয়ন ইউএস ডলারের সমপরিমাণ রফতানি উন্নীত করার পরিকল্পনা করেছি। সরকারি নীতিমালার সহায়তা পেলে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে সক্ষম হব। আমরা আশা করবো বাংলাদেশের অন্যান্য ইস্পাত উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলো একই সঙ্গে রফতানিতে এগিয়ে আসবে। অনুষ্ঠানে জিপিএইচ ইস্পাতের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলমগীর কবির, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলমাস শিমুল পরিচালক এমএ রউফ, মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান, আব্দুল আহাদ, আজিজুল হক রাজু, স্বতন্ত্র পরিচালক মোকতার আহামদ উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনা করেন নির্বাহী পরিচালক (এফঅ্যান্ডবিডি) কামরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।