চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী বলেছেন, জাঙ্ক ফুডে প্রচুর চিনি, চর্বি ও লবণ থাকায় খাবারে পুষ্টি কম থাকে। আর পুষ্টিহীন খাবারের কারণে আগামী প্রজন্ম স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী হচ্ছে না। জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রামের মানুষের রক্তে লৌহকণিকা শহরের মানুষের তুলনায় অনেক বেশী। কারণ গ্রামের মানুষ শাকসবজি ও সুষম খাবার পাচ্ছে। আর শহরের মানুষ মাংস বেশি খেলেও স্বাস্থ্যকর খাবার থেকে বঞ্চিত। অন্যদিকে প্রসেস ফুড, জাঙ্কফুড, বিদেশি খাবারের নামে বাইরের অস্বাস্থ্যকর ও খোলা খাবার গ্রহণের কারণে খাবারটি খাদ্য না হয়ে বিষ হয়ে মানুষের পেটে ঢুকছে। যা চূড়ান্ত পরিণতি হচ্ছে পুরো বছরই কোন না কোন রোগ শোকে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। মানুষ যা আয় করছে তার সিংহভাগই চিকিৎসাখাতে চলে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, খাদ্যে ভেজাল এখন একটি মারাত্মক সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। মানুষ এখন না খেয়ে মরছে না। খাদ্যে ভেজালের কারনে প্রাণঘাতি নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
গত ৯ নভেম্বর নগরীর ডা. খাস্তগীর সরকারি স্কুলে ক্যাব চট্টগ্রাম ও যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগরের উদ্যোগে ‘মায়ের দেয়া বাসায় তৈরী টিফিন খাবো, বাইরে খোলা ও অস্বাস্থ্যকর খাবার বর্জন করবো’ শিরোনামে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে প্রচারণা কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
ডাঃ খাস্তগীর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহেদা আকতারের সভাপতিত্বে ক্যাব যুব গ্রুপের সদস্য মিনা আকতার ও ইবতিজাম দিদার সিঞ্জার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপ-পরিচালক মোঃ ফয়েজউল্যাহ, পার্ক ভিউ হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ হাসিনা আকতার লিপি, ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালন নাসরীন আকতার, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান। আলোচনায় অংশ নেন ক্যাব জামাল খানের সভাপতি সালাহ উদ্দীন, ক্যাব পাঁচলাইশের সাধারণ সম্পাদক মোঃ সেলিম জাহাঙ্গীর, সদরঘাট থানা সভাপতি শাহীন চৌধুরী, ক্যাব চাঁন্দগাও থানা সভাপতি মোঃ জানে আলম, ক্যাব যুব গ্রুপ মহানগরের সভাপতি আবু হানিফ নোমান, ক্যাব যুব গ্রুপের সহ-সভাপতি নিলয় বর্মন, যুগ্ন সম্পাদক আমজাদুল হক আয়েজ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আবরার সুজন আয়ান, সদস্য আনিকা তাবাস্সুম, সাদিয়া ইসলাম প্রমুখ।
বক্তারা আরও বলেন কোমল পানীয়, আলুর চিপস, ক্যান্ডি, পিৎজা, বার্গার, চমুসা, সিঙ্গারা, ফুসকাতে প্রচুর পরিমাণে পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেড, চর্বি ও সোডিয়াম থাকায় অস্বাভাবিক স্থুলতা, বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদী রোগ টাইপ২ ডায়বেটিস, ক্যান্সার, কার্ডিওভাসকুলার ডিজিস, লিভার রোগের সংক্রমণের হার প্রচন্ড আকারে বাড়ছে। আর মানহীন ভেজাল ও জাঙ্কফুড জাতীয় খাবার গ্রহণের কারণে শিশুরা অমনোযোগী, বখাটে, স্থুলদেহী ও রোগাক্রান্ত হচ্ছে। আগামি প্রজন্মকে সুস্থ, সবল রাখতে ও মেধাবী হিসাবে গড়ে তুলতে ভেজালমুক্ত নিরাপদ খাদ্য গ্রহণ এবং দেশীয় ফল, শাক সবজি গ্রহণে সামাজিক আন্দোলনের দরকার। করপোরেট আগ্রাসন এখন খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও খাদ্য ব্যবসায় ঝুঁকে পড়েছে। সে কারণে বেশি লাভের আশায় মানহীন খাদ্য পরিবেশনে সবাই প্রতিযোগিতায় লিপ্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তি।