৩০০ বর্গমাইল এলাকা পরিবেষ্টিত কাপ্তাই লেকের সাথে সংযুক্ত রয়েছে ৬টি খাল। স্থানীয় পর্যায়ে এই খালগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য এই ৬টি খাল বিশেষ ভূমিকা রাখছে। তবে পাহাড় ধস এবং পলি জমে ৬টি খালের বেশির ভাগ এলাকাই বর্তমানে ভরাট হয়ে গেছে। খাল ভরাট থাকায় পানি নিষ্কাশন যথাযথভাবে হচ্ছে না।
এর ফলে খাল সংলগ্ন এলাকায় বৃষ্টির সময় একদিকে যেমন দ্রুত বৃষ্টির পানি সরতে পারছে না অপরদিকে শুষ্ক মৌসুমে খালে পানি থাকে না। যার ফলে সারা বছরই স্থানীয় মানুষ কষ্ট ভোগ করে আসছেন। সমস্যা উত্তরণে জরুরি ভিত্তিতে খাল খনন করা একান্ত প্রয়োজন বলে স্থানীয় জনগণ অভিমতে জানান।
এ ব্যাপারে রাঙ্গামাটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ৬টি খাল খনন বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে। সেগুলো হলো কোদালা খাল, বগাছড়ি খাল, যৌথ খামার খাল, শুভলং খাল, চেংগি খাল ও নানিয়ারচর খাল। এগুলো ছাড়াও আরো কয়েকটি খাল রয়েছে যেগুলোও খনন করা প্রয়োজন। এই বিষয়ে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনেরও তাগাদা রয়েছে। খাল খননের জন্য ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় জরিপ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এই কাজে মোট কত টাকা ব্যয় হবে তার একটি খসড়াও তৈরি করা হয়েছে। বিষয়টি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশীদ বলেন, কাপ্তাই লেক পরিচালনা কমিটির একটি গুরুত্বপূর্ণ সভা সমপ্রতি জেলা প্রশাসক মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সেই সভায় উল্লেখিত ৬টি খাল খনন বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে আলোচনা হয়েছে। খালগুলো খননের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। আমরাও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাল খনন বিষয়ে একাধিকবার তাগাদা দিয়েছি। অচিরেই খাল খনন কাজ শুরু হবে।
কাপ্তাই লেক পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন, নৌ চলাচল, মৎস্য চাষ, ইরিগেশনসহ বিভিন্নভাবে কাপ্তাই লেক রাঙ্গামাটিবাসীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। গুরুত্ব বিবেচনায় উল্লেখিত খালগুলো খননেরও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তবে খাল খনন কাজের পাশাপাশি কাপ্তাই লেকের খনন করাও জরুরি। গত ৬০ বছর ধরে কাপ্তাই লেকে অনবরত পলি জমছে। এর ফলে লেকের বিভিন্ন পয়েন্ট ভরাট হয়ে গেছে। যার ফলে অল্প বৃষ্টিতেই লেকের পানি উপচে পড়ছে। আবার দ্রুত লেকের পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ নৌ চলাচল এবং অন্যান্য কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানে কাপ্তাই লেক খনন করা প্রয়োজন।