চলতি একাদশ জাতীয় সংসদ অধিবেশনে কোরাম সংকটের কারণে ৫৪ ঘণ্টা ৩৮ মিনিট ব্যয় হয়েছে। ব্যয়িত সময়ে সরকারের অপচয় হয়েছে ৮৯ কোটি ২৮ লাখ ৮ হাজার টাকা। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল রাজধানীর ধানমন্ডিতে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে ‘পার্লামেন্ট ওয়াচ : প্রথম থেকে ২২তম অধিবেশন (জানুয়ারি ২০২৯–এপ্রিল ২০২৩)’ পর্যন্ত সময়ের সংসদের অধিবেশনের কার্যাবলি পর্যালোচনা নির্ভর এ গবেষণাপত্রটি উপস্থাপন করা হয়। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানের সঞ্চালনায় গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন রাবেয়া আক্তার। এতে বলা হয়, একাদশ সংসদে অধিবেশন চলাকালে অধিকাংশ সংসদ সদস্য অতিরিক্ত মাত্রায় মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। অধিবেশনে মনোযোগ না দিয়ে ফোন ব্যবহার, খোশগল্পে মাতেন অথবা ঘুমান। খবর বাংলানিউজের।
টিআইবির পর্যালোচনায় উঠে আসে, চলতি একাদশ জাতীয় সংসদে অধিবেশনে কোরাম সংকটে ৮৪ শতাংশ কর্মদিবসে যথাসময়ে সংসদ কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। বিরতির পর কোনোদিনই নির্ধারিত সময়ে অধিবেশন শুরু করা যায়নি। এটা আগের বছর সংসদ অধিবেশনগুলোর চেয়ে কম। তবে এ সময়ে শক্তিশালী বিরোধী দল না থাকার কারণে সংসদ প্রাণবন্ত ও কার্যকর হতে পারেনি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, কার্যকর বিরোধী দল না থাকার কারণে বর্তমান সংসদ কার্যকর হয়নি। সংসদীয় কার্যক্রমে বিষয়ভিত্তিক, প্রাসঙ্গিক ও গঠনমূলক আলোচনার পরিবর্তে সরকার ও দলীয় অর্জন ও প্রশংসা এবং প্রতিপক্ষ দলের প্রতি আক্রমণাত্মক সমালোচনার প্রাধান্য দেখা গেছে। বরাবরের মতোই প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর বিশ্লেষণ ও জবাবদিহি অনুপস্থিত ছিল। স্বল্প সময়ের মধ্যে নামমাত্র পরিবর্তন–পরিমার্জন করে বাজেট ও অর্থবিল করা হয়েছে। প্রকৃত পক্ষে সংসদে বাজেট নিয়ে কার্যকর আলোচনা দেখা যায়নি।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাস্তবিক অর্থে অংশগ্রহণমূলক, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করা; বিরোধী দলের শক্তিশালী ভূমিকা পালন; সদস্যদের স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের জন্য সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেন সংশোধন করা, যেখানে নিজ দলের বিরুদ্ধে অনাস্থার ভোট এবং বাজেট ব্যতীত অন্য সকল ক্ষেত্রে সদস্যদের নিজ বিবেচনা অনুযায়ী ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকাসহ বেশ কিছু সুপারিশ করেছে টিআইবি।