ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করার কয়েক ঘণ্টা পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাম–পরিচয়সহ এক সন্দেহভাজনের ছবি ঘুরছিল। গতকাল শনিবার ওই ব্যক্তির ছবি প্রকাশ করে তার তথ্য চেয়ে হন্যে হয়ে খোঁজার কথা বলেছে পুলিশ।
অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তির নাম ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান। দাউদ খান ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক নেতা। গত বছর একটি স্কুলে চাঁদাবাজির মামলায় তিনি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদসহ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার সঙ্গে ফয়সাল করিমের ছবি ফেসবুকে ছড়িয়েছে। সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তিকে কয়েকদিন আগে ইনকিলাব সেন্টারেও দেখা যায়। সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে দেখা যায় তিনি ইনকিলাব সেন্টারে হাদির পাশে বসে আলোচনায় অংশ নেন। এ থেকে অনেকে ধারণা করছেন, হাদিকে কিছুদিন ধরেই অনুসরণ করছিলেন ফয়সাল। খবর বিডিনিউজের।
সন্দেহভাজন ফয়সালের বিষয়ে মামলার তথ্য পর্যালোচনা করে জানা গেছে, গেল বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের একটি স্কুলে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের মামলার আসামি ছিলেন ফয়সাল।
৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সালকে গ্রেপ্তার করে র্যাব, তখন তার কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, পাঁচটি গুলি, তিনটি মুঠোফোন ও পাঁচ হাজার টাকা উদ্ধারের তথ্য দিয়েছিল র্যাব। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল, এর মধ্যে হাদিকে গুলি করা প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে তার নাম এল।
গতকাল ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বলেন, ‘যে ছেলেটা গুলি করেছে, শুনতে পাচ্ছি সে একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিল, কোন প্রক্রিয়ায় সে জামিন পেয়েছে, সেটা তদন্ত করুন।’
বাংলানিউজের এক খবরে বলা হয়, ফয়সাল করিমের পরিবার প্রায় ৩৫ বছর আগে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কেশবপুর গ্রাম ছেড়ে ঢাকায় চলে যায়।
স্থানীয় সূত্র ও স্বজনদের বরাতে জানা গেছে, সন্দেহভাজনের বাবা হুমায়ূন কবির ওরফে মালেক পুরো পরিবার নিয়ে দীর্ঘদিন আগে ঢাকায় বসবাস শুরু করেন। ফয়সাল করিমের জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঢাকায় হওয়ায় তিনি কখনো গ্রামের বাড়িতে আসেননি। ফলে গ্রামের কেউ তাকে চেনে না বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
গ্রামবাসীরা জানান, কেশবপুর গ্রামে তাদের যেসব জমিজমা ও ঘরবাড়ি ছিল, তা বহু আগেই বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ওই এলাকায় তাদের কোনো সম্পত্তি বা বসতভিটা নেই। এমনকি আত্মীয়–স্বজনদের সঙ্গেও তাদের দীর্ঘদিন কোনো যোগাযোগ নেই।












