ফায়ার গেমসে আসক্ত হয়ে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে গাজীপুরের ছয় বছরের শিশু রাফিয়া মুনতাহা। পরে নিজেই আবার আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। এতে তার শরীরের ১২ শতাংশ পুড়ে গেছে। শিশুটি এখন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছে। খবর বাংলানিউজের।
গতকাল শনিবার বিকেলে বার্ন ইনস্টিটিউটে জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখা যায় এক হাতসহ বুক ও পেট পুরোটাই ব্যান্ডেজ করা অবস্থায় শুয়ে আছে শিশু মুনতাহা। বেডের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তার মা জিন্নাত জাহান জানান, তার মেয়ে স্মার্ট টিভিতে সার্চ করে ও পাশাপাশি স্মার্টফোনে বিভিন্ন ওয়েব সিরিজের কার্টুন দেখে থাকে। যেমন ফায়ার গেমসসহ অন্যান্য আরও অনেক কার্টুন দেখে থাকে। সেই সব ওয়েব সিরিজের কার্টুনগুলোতে দেখা যায় নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে আবার নিভিয়ে ফেলে। কার্টুন তো কার্টুনই। ছোট শিশু না বুঝে সেসব কার্টুন দেখে চুলার সামনে গিয়ে তার শরীরের সুতির জামার এক অংশ তার দুই হাত দিয়ে মুট করে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে আবার নেভানোর চেষ্টা করে কিন্তু নেভাতে পারে না। দাউ দাউ করে শরীরে আগুন ধরে যায়। পরে বাসার লোকজন তাকে জাপটে ধরে আগুন নিভিয়ে ফেলে। ততক্ষণে তার শরীরের অনেক অংশ পুড়ে যায়।
রাফিয়া মুনতাহা পরিবারের সঙ্গে গাজীপুর সদর উত্তর ছায়াবীথি এলাকায় থাকে। তার বাবার নাম এসএম মাহমুদুল হাসান। তিনি একজন ফার্মাসিস্ট। মুনতাহার ছোট আরেকটি বোন আছে। তবে আগুনের ঘটনাটি বুধবার (২৭ মার্চ) ঘটেছে তার নানার বাসায় গাজীপুর সদর ২৮ নম্বর ওয়ার্ড আড়িনাল এলাকায়। গাজীপুর নবারন বিদ্যাপীঠ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্লেতে পড়াশোনা করে শিশুটি।
ঘটনার পরপরই মুনতাহাকে দগ্ধ অবস্থায় গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে আজকে তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। এদিকে বিকেলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হঠাৎ ওই ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের ভিজিট করেন। জরুরি বিভাগে বেশ কয়েকটা রোগীর পাশাপাশি দগ্ধ মুনতাহার চিকিৎসার খোঁজখবর নেন এবং তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন।
বার্ন ইনস্টিটিউটের সহকারী পরিচালক ডা. হোসাইন ইমাম ইমু জানান, শিশুটির ১২ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।