অষ্টাদশ থেকে বিংশ শতাব্দীর মধ্যবর্তীকালে কেবলমাত্র বীরভূম জেলাতেই শ’ তিনেক খ্যাতনামা কবিয়াল বিদ্যমান ছিলেন। এঁদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা প্রাচীন কবিয়াল ছিলেন গোঁজলা গুঁই। তিনি ও তাঁর সমসাময়িক লালু নন্দলাল, রঘু ও রামজি অষ্টাদশ শতাব্দীতে বিদ্যমান ছিলেন। ঊনবিংশ শতাব্দীর কলকাতার বিখ্যাত কবিয়ালরা ছিলেন হরু ঠাকুর (১৭৪৯ু১৮২৪), নিতাই বৈরাগী (১৭৫১ু১৮২১), রাম বসু (১৭৮৬ু১৮২৮), ভোলা ময়রা ও অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি।
বাংলার অন্যান্য অঞ্চলের কবিয়ালরা হলেন বলহরি দে (১৭৪৩–১৮৪৯), শম্ভুনাথ মণ্ডল (১৭৭৩–১৮৩৩),তারকচন্দ্র সরকার (১৮৪৫–১৯১৪), রমেশচন্দ্র শীল (১৮৭৭–১৯৬৭), রাজেন্দ্রনাথ সরকার (১৮৯২–১৯৭৪), ও বিনয়কৃষ্ণ অধিকারী (১৯০৩–১৯৮৫)।
চারণকবি মুকুন্দ দাস প্রকৃতপক্ষে ছিলেন একজন কবিয়াল। বালিকা বধূ নামে এক বাংলা চলচ্চিত্রে তাঁর চরিত্রটি চিত্রিত হয়। স্বাধীনতা সংগ্রামে মুকুন্দ দাসের গান কিভাবে জনসাধারণকে প্রভাবিত করেছিল, তাও এই চলচ্চিত্রে প্রদর্শিত হয়েছে।
অপর এক বিখ্যাত কবিয়াল অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি ছিলেন জন্মসূত্রে পর্তুগিজ। তাঁর জীবনী অবলম্বনেও একটি জনপ্রিয় বাংলা চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। এই ছবিতে অ্যান্টনি ফিরিঙ্গির নামভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন বিশিষ্ট বাঙালি অভিনেতা উত্তম কুমার।
ঊনবিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় কবিয়াল ভোলা ময়রা গায়ক হিসেবে বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। তাঁর গানে শ্রোতারা মন্ত্রমুগ্ধের মতো হয়ে থাকত। এই জাতীয় জনপ্রিয় বিনোদন অনুষ্ঠানের গুরুত্ব অনুধাবন করে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ভোলা ময়রার বিশেষ প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাকে জাগাতে যেমন রামগোপাল ঘোষের মতো বাগ্মী, হুতোম প্যাঁচার মতো আমুদে লোকের প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন ভোলা ময়রার মতো লৌকিক গায়কদের। এঁর জীবন অবলম্বনেও ভোলা ময়রা নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়।’
বলাবাহুল্য, কবিগানের পালায় থাকতো দুটি করে দল। প্রতি দলে থাকতো একজন করে কবি। এছাড়া দুই দল মিলিয়ে পাঁচ থেকে সাতজনের মতো দোহার ও তিন–চারজন বাদক থাকতো। দুই দলের দুই কবি মুখোমুখি মঞ্চে দাঁড়িয়ে অবতীর্ণ হতেন কবিতাযুদ্ধে। এক কবি প্রথমে অপর দলের কবিকে উদ্দেশ্য করে প্রশ্নাকারে কোনো পদ্য ছুঁড়ে দিতেন। অপর কবি সে অনুযায়ী তাৎক্ষণিক একটি ছন্দ বানিয়ে পাল্টা জবাব দিতেন। প্রথম দলের কথাকে বলা হতো ‘চাপান’, আর দ্বিতীয় দলের কথাকে বলা হতো ‘উতোর’। পাঁচালি, খেউড়,আখড়াই, হাফ–আখড়াই, বসা কবিগান, দাঁড়া কবিগান, ঢপ, টপ্পা, কীর্তন, তর্জা প্রভৃতি ছিল কবিগানের বিভিন্ন ধরন। এসব পদ্যে রুচির খুব একটা চিহ্ন থাকতো না। একে অপরকে কথার আক্রমণে পর্যুদস্ত করে ক্ষণিকের আনন্দ লাভই ছিল মূল লক্ষ্য। কবিগান একাধারে গান, কবিতা, বিতর্ক, সমালোচনা ও পর্যালোচনাও বটে। সাধারণ মানুষের নানা দ্বন্দ্ব, সমস্যা ও ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতেন কবিয়ালরা।
প্রসঙ্গত, প্রাচ্যের রাণী খ্যাত চট্টগ্রামে রয়েছে লোকসঙ্গীতের অফুরন্ত ভান্ডার। চট্টগ্রামের লোকসঙ্গীতও বাংলার লোকসঙ্গীতকে করেছে সমৃদ্ধ।
গাজির গান, হালদাফাটা গান, হঁঅলা, হাইল্যা সাইর, পাইন্যা সাইর, পালাগান বা গীতিকা, মাইজভাণ্ডারি, শিব–গৌরীর গান, উল্টা বাউলের গান, কানুফকিরের গান, আসকর আলী পণ্ডিদের গান, ফুলপাট গান, ওলশা মাছের গান চট্টগ্রামের একান্ত নিজস্ব সম্পদ। অতি বর্ষীয়ান ব্যক্তিদের মুখ থেকে জানা যায়, প্রাচীন চট্টগ্রামের জনজীবনে আরও অনেক রকমের গান প্রচলিত ছিল। বিয়ে ইত্যাদি সামাজিক অনুষ্ঠানে এসব গাওয়া হতো। কালজয়ী এইসব গানের পাশাপাশি আরেকটি সঙ্গীত এতদাঞ্চলের মানুষের মনের মণিকোঠায় পাকাপোক্তভাবে ঠাঁই করে নিয়েছে; তা হলো কবিগান। কবিগান আবহমান গ্রাম–বাংলার লোকসঙ্গীতের এক ঐতিহ্যময় ধারা।
কবিগানে চট্টগ্রামের অবদান ঐতিহাসিক। বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে নাগরিক সংস্কৃতির বিকাশজনিত রুচি পরিবর্তনের কারণে কবিগান প্রায় বিবরবাসী হবার উপক্রম হয়েছিল। সেই দুঃসময়ে গণজাগরণে কবিগানের অন্তর্র্নিহিত শক্তি পুনরাবিষ্কারে ঢাকা ও চট্টগ্রামের কবিয়াল দল এক ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেন। ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে রমেশ শীলকে সভাপতি ও ফণী বড়ুয়াকে সম্পাদক করে ‘চট্টগ্রাম কবি সমিতি’ নামে গঠিত কবিয়ালদের সংগঠনই ছিল এই নতুন দিগন্ত উন্মোচনের সহায়ক শক্তি। ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে রাউজানের বাগোয়ানে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম জেলা কৃষক সম্মেলনের মণ্ডপে রমেশ শীলের নেতৃত্বে চাষি ও মজুতদার শীর্ষক এক কবির লড়াই হয়েছিল।
সম্ভবত এই সম্মেলনেই নতুন যুগের নতুন রীতির কবিগানের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। ১৯৬৯–৭০ সালে বাঙালি জাতীয়বাদী আন্দোলনে কবিয়াল এয়াকুব আলীর নেতৃত্বে কবিয়ালরা চট্টগ্রামসহ সমগ্র বাংলাদেশে কবিগান পরিবেশন করে স্বাধীনতা আন্দোলনের যে গণজোয়ার সৃষ্টি করেছিলেন তা স্বীকার না করলেই নয়।
চট্টগ্রামের কবিগানের স্বাতন্ত্র্য ও নতুনত্ব তথা কবি গানের নতুন ধারার প্রতি বঙ্গীয় সারস্বত সমাজের প্রথম দৃষ্টি আকৃষ্ট হয় ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় অনুষ্ঠিত নিখিল বঙ্গ প্রগতিশীল লেখক ও শিল্পী সম্মেলনে। এর মূলে ছিল রমেশ শীলের প্রতিভা। এই সম্মেলনে কবিয়াল রমেশ শীল ও ফণী বড়ুয়া জুটি পশ্চিমবঙ্গের শ্রেষ্ঠ কবিয়াল শেখ গোমানী ও তাঁর শিষ্য লম্বোদর চক্রবর্তীর জুটিকে কবির লড়াইতে পরাজিত করেন। যারপরনাই এই জুটির যশ–খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে।
কার্যত সন্দ্বীপের আজগর আলী ছিলেন সবচেয়ে প্রাচীন কবিয়াল। অন্য এক সূত্রমতে চট্টগ্রামের কবিগানের জনক কধুরখীলের নবীন ঠাকুর। তিনি পটিয়ায় প্রবাসজীবন যাপন করতেন এবং এই অঞ্চলেই কবিগান গেয়ে বেড়াতেন। তিনি একই এলাকার করিম বখশকে (১৮৭৯–১৯৩৮) কবিগানে দীক্ষা দিয়েছিলেন। করিম বখশ কবিয়াল হিসেবে অল্পদিনের মধ্যে খ্যাতিমান হয়ে উঠেছিলেন এবং তাঁর বহু শিষ্য হয়েছিল। কথিত আছে তিনি নাকি কখনো কবির লড়াইয়ে পরাজিত হননি । মনীন্দ্র দাশ, রসিকচন্দ্র নাথ, রমেশ চন্দ্র নাথ, দুর্গাকুমার শীল, সারদা শীল, অবর্ণ শীল, দুদু মিয়া তাঁর শিষ্যদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। তিনি যে তাঁর সমকালের সকলের শীর্ষস্থানীয় ছিলেন, এটি বোঝা যায় তাঁর উদ্দেশ্যে সমকালের অনেক কবির প্রশস্তিবাণীতে। নিচে তার কয়েকটির প্রথম চরণ এখানে উল্লেখ করছি–
১) কবিয়াল বাজারে তাঁর বাজে জয়ডঙ্কা
কবির নামেতে সবের মনে জাগে শঙ্কা।
২) গিয়ে দেখলাম সেই সভাতে করিম বক্স আসরেতে
গায়েন এমন সুন্দর কবিগান
প্রথম তাঁর রূপ দেখি তুলনাতে দেখাব কি
যেমন পূর্ণমাসীর চান। ( সাবের সরকার)
৩) আমরা যারা বর্তমানে গাই কবিগান
সবার ভিতর আছে তাঁর অযাচিত দান। (রাই মোহন বড়ুয়া )
কবিয়াল করিম বখশের কবিত্ব ও পাণ্ডিত্যপূর্ণ বহু রচনা সংরক্ষিত হয়নি বলে আজ বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে গেছে। ওহীদুল আলমের ‘চট্টগ্রামের লোকসাহিত্য’ গ্রন্থে সংকলিত তাঁর বিপুল সংখ্যক রচনার অল্প কয়েকটি চরণ আমাদের এই ধারণা দেয় যে তিনি সত্যই এক অসাধারণ প্রতিভাসম্পন্ন কবিয়াল ছিলেন। সমসাময়িক কালের খ্যাতিমান কবিদের মধ্যে রমেশ শীল ( ১৮৭৭–১৯৬৭; বোয়ালখালী থানার গোমদণ্ডী গ্রাম)- এর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। লেখাপড়ায় তিনি প্রাথমিক পর্যায় অতিক্রম করে বেশিদূর অগ্রসর হতে পারেননি এবং শৈশবকাল থেকেই তরজা আর কবিগানের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েছিলেন। রমেশ শীল সমকালীন অনেক কবিয়াল অপেক্ষা তুলনামূলকভাবে অনেক প্রাগ্রসর ছিলেন; সমকালীন রাজনৈতিক গতিধারা সম্পর্কে তাঁর যথেষ্ট সচেতনতা ছিল। অসহযোগ ও খেলাফত আন্দোলন, ১৯২২ এর বিখ্যাত রেল ধর্মঘট, বিখ্যাত চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন, ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলন ইত্যাদি বহু বিষয়ে তিনি গান রচনা করে এবং গেয়ে তিনি এদেশের সংগ্রামী মানুষের মনে সাহস যুগিয়েছেন। তাঁর সংগ্রামী ভূমিকার জন্য তাঁকে ১৯৫৪ সনে কারাবরণ করতে হয়েছিল। বুলবুল ললিত কলা একাডেমী ১৯৬২ সালে তাঁকে শ্রেষ্ঠ লোককবির সম্মানে ভূষিত করেছিল। তাঁর অসমপ্রদায়িক চেতনার জন্য তিনি এদেশের সর্বমহলে শ্রদ্ধার আসন লাভ করেছিলেন। তরুণ বয়সেই তিনি মাইজভাণ্ডারের পীরের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছিলেন। তাঁর রচিত প্রচুর মাইজভাণ্ডারি গান ভক্তদের মধ্যে বিপুলভাবে সমাদৃত।
কবিয়াল রমেশ শীলের প্রিয় শিষ্য ও অন্যতম সহযোগী কবিয়াল ফণী বড়ুয়া ছিলেন (১৯১৪–২০০১) খ্যাতিমান কবিয়াল। প্রায় ৭০ বছর ধরে ফণী বডুয়া উপমহাদেশে অবিরাম কবিগান গেয়েছেন। তাঁর অনবদ্য সৃষ্টি রচনা শৈলীগুলো এদেশের গণমানুষকে মুক্তির পথ দেখিয়েছেন। ইতিহাস ঋদ্ধতায় কবিগানকে তিনি সমৃদ্ধ করেছেন। ফণী বডুয়া গভীর দেশপ্রেম, সামাজিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির প্রেরণার প্রিয় দেশবাসীকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। তিনি কবিগানকে নিছক আনন্দ বিনোদন হিসেবে নেননি। বরঞ্চ তাঁর রচিত গানের অপরূপ সুর ও ছন্দভরা অন্ত্যমিল ছিল। তাঁর এ কবি গানের প্রতিভার বিকাশ ঘটে পরম কল্যাণ মিত্র গুরু কবিয়াল রমেশ শীলের হাত ধরে।
রমেশ শীলের অপর শিষ্য রাই গোপাল দাশ (১৯১৮–১৯৮৭) কিংবদন্তি কবিয়াল। বোয়ালখালীর ধোরলা গ্রামের এক প্রান্তিক কৃষক পরিবারের সন্তান একসময় কবিগায়ক হিসেবে যথেষ্ট নামডাকের অধিকারী হয়েছিলেন। রমেশ শীলের মৃত্যুর পরে তিনিই ফণি বড়ুয়ার প্রতিপক্ষের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন। কবিয়াল হেদায়েত ইসলামের সঙ্গে চট্টগ্রামের কবিগায়কদের সংগঠিত করার কাজে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
কবিয়াল হিসেবে রাউজানের সাবের সরকার (জন্ম আনুমানিক ১৯০৬– গশ্চি গ্রাম) ও সমসাময়িককালে বেশ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তাঁরই ছাত্র ইয়াকুব আলী(১৯৩১-?) একসময়ে চট্টগ্রামের কবিগানের জগতে যথেষ্ট যশের অধিকারী হয়েছিলেন। হাইস্কুলের কয়েকটি ক্লাসমাত্র পড়ে তরুণ বয়সে জীবিকার সন্ধানে তিনি বার্মা ও আসাম গিয়েছিলেন। কিন্তু বিফল মনোরথ হয়ে দেশে ফিরে এসে কবিয়াল সাবের সরকারের পুঁথি বিক্রির কাজ নেন এবং তাঁরই সংস্পর্শে ও অনুপ্রেরণায় তিনি কবিগান শুরু করেন। বাংলা একাডেমিসহ চট্টগ্রামের বাইরের অনেকগুলো শহরে নানা বিষয়ে কবিগান করে তিনি প্রভূত সম্মান ও স্বীকৃতি অর্জন করেছিলেন। কবিয়াল ইয়াকুব আলী বহুদিন বেতারের সঙ্গে যুক্ত থেকে বেতারেও বহু কবিগানের অনুষ্ঠান করেছেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ হলো: ১) চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় পল্লীগীতি; ২) চাটগাঁয়ের আঞ্চলিক গান; ৩) মন্দের ছন্দ ৪) বিচ্ছেদতরঙ্গ এবং ৫) কবিগান। বেতারে ও সভা সমিতিতে তিনি সরকারি প্রচারকাজ করেছেন। সমসাময়িককালে নিরঞ্জন দাশ ( জন্ম আনুমানিক ১৯১৩ ), শশাঙ্ক মোহন চৌধুরী ( ১৯১৭ ), নজু মিয়া, মনীন্দ্র সরকার (১৯০০–২০০০), নুর আহমদ সরকার (১৯১৪–১৯৮৫), রাইগোপাল দাশ (১৯১৮–১৯৮৭), আহমদুর রহমান, বিভূতিরঞ্জন নাথ, রাখাল মালাকার, রাখাল দাশ, মানিক শীল, সারদা বড়ুয়া (ফটিকছড়ি), মোহাম্মদ সৈয়দ
(জন্ম ১৯৩৬; আনোয়ারা থানার শিলাইগড়া অঞ্চল), রাই মোহন বড়ুয়া, মোহাম্মদ আবদুল মান্নান ( পটিয়ার দৌলতপুর)), মোহাম্মদ নুরুল হক ( আনোয়ারা থানার ভীমরুল অঞ্চল ), মহেন্দ্রলাল দাশ (পটিয়া থানার মহিরা), জীবনকৃষ্ণ দাশ কানুনগো প্রমুখ কবিয়াল হিসেবে কমবেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। আজ থেকে বছর বিশেক আগেও যাঁরা এই ধারার সাংস্কৃতিক কর্মের সঙ্গে নিজদেরকে যুক্ত রেখে আধুনিক যন্ত্রসংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে এই ধারাটিকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন, তাঁদের মধ্যে ডাঃ এম. আর. আলী, নুরুল আলম, চক্রপাণি ভট্টাচার্য, কল্পতরু ভট্টাচার্য, মোশতাক আহমদ, মানিক শীল, খুকীরাণী শীল ( মানিক শীলের সহধর্মিণী), দিলীপ ভট্টাচার্য, মাধুরী ভট্টাচার্য, কালামিয়া ফারুকী, বাবুল বিশ্বাস, মোহাম্মদ ইউসুফ প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য। এঁদের অনেকে আজ আর আমাদের মধ্যে নেই। এসব কালজয়ী কবিয়ালদের গান সংরক্ষণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। তাই আশির দশক থেকে বিলীয়মান হতে থাকা ঐতিহ্যময় কবিগানকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
ডেপুটি রেজিস্ট্রার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার