রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় যেসব প্রস্তাব বা সুপারিশে ঐকমত্য হয়েছে, সেসব প্রস্তাব নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সেইসঙ্গে পর্যায়ক্রমে এসব নিয়ে ফের রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোর সঙ্গে কথা বলা হবে বলে গতকাল রোববার কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এদিন জাতীয় সংসদ ভবনের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের একটি সভা হয়। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ তাতে সভাপতিত্ব করেন। খবর বিডিনিউজের।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো পর্যালোচনা করা হয়। সভায় আরো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ঐকমত্য হওয়া প্রস্তাব বা সুপারিশগুলোর বিষয়ে কমিশন পর্যায়ক্রমে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে এবং সেই ধারাবাহিকতায় রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোর সঙ্গে কথা বলবে। এসব প্রস্তাব বা সুপারিশ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে কমিশন, রাজনৈতিক দল ও জোট এবং সরকারের করণীয় বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইতোমধ্যে কমিশন থেকে পাঠানো জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫–এর প্রাথমিক খসড়ার ওপর অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ও জোট মতামত দিয়েছে। যেসব দল এখনও মতামত দেয়নি, তাদের দ্রুত তা দেওয়ার তাগিদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান, বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার সভায় উপস্থিত ছিলেন। বৃহস্পতিবার ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার আলোচনা শেষ হয়; সেদিন ছিল দ্বিতীয় দফা সংলাপের ২৩তম দিন। পাঁচটি সংস্কার কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে রাজনৈতিক দল ও জোটের মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে এই কমিশন, যার নেতৃত্বে আছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তিন ডজন রাজনৈতিক দলকে সহমতে আনার সাড়ে পাঁচ মাস ধরে চলা চেষ্টায় ৮১টি প্রস্তাবে মতৈক্য প্রতিষ্ঠার তথ্য দিয়েছে কমিশন। এর মধ্যে সব বিষয়ে সব দল আবার ঐকমত্যে পৌঁছেনি। এসব প্রস্তাব বাস্তবায়নে জটিলতা আছে কিনা তা নিয়েও রয়েছে শঙ্কা। এসব মাথায় রেখেই বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসবে কমিশন। তারপর ফের দলগুলোর সঙ্গে চলবে আলোচনা।
আগামী নির্বাচনের পর নতুন সরকারে যেই আসুক, ঐকমত্য হওয়া সেসব সংস্কার বাস্তবায়ন করতে লিখিত অঙ্গীকার করবে দলগুলো। সেই অঙ্গীকারনামা যুক্ত করে আগামীকাল মঙ্গলবার অভ্যুত্থানের বার্ষিকীতে জুলাই সনদ প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে।