বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে এবার চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে অবস্থান নিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা। গতকাল রবিবার সকাল দশটা থেকে তারা ‘আমরা দিব ফুল আর ভালোবাসা, আপনারা দিন একটি দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ’ স্লোগানে চট্টগ্রাম নগরের রেলওয়ে স্টেশনে এ অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। এ সময় তারা যাত্রী হয়রানি বন্ধে ছয় দফা দাবি জানিয়েছেন। দাবি মেনে নেয়া না হলে তারা অবস্থান থেকে সরে আসবেন না বলে হুঁশিয়ারি দেন। এ সময় অবস্থানরত শিক্ষার্থী কাজী আশিকুর রহমান বলেন, রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা পরিবর্তনের দাবিতে ছয় দফা নিয়ে আমরা চারজন সকাল থেকে চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে অবস্থান নিয়েছি। আমরা আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার সুস্পষ্ট নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করে যাব। অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা হলেন, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মাহবুব হাসান, মোহাম্মদ মাসুদ, মোহাম্মদ মাহিন রুবেল এবং চতুর্থ বর্ষের ছাত্র কাজী আশিকুর রহমান।
এর আগে রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা দূরীকরণে ছয় দফা দাবিতে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে ১০ দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মহিউদ্দিন রনি। তাঁর সঙ্গে সংহতি জানিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে এ অবস্থান নিয়েছেন।
ছয় দফা দাবি হলো, টিকিট কেনার ক্ষেত্রে সহজ ডটকমের যাত্রী হয়রানি অবিলম্বে বন্ধ করা ও হয়রানির ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া। যথোপযুক্ত পদক্ষেপের মাধ্যমে টিকিটের কালোবাজারি প্রতিরোধ, অনলাইন কোটায় টিকিট ব্লক করা বা বুক করা বন্ধ করা। অনলাইন-অফলাইনে টিকিট কেনার ক্ষেত্রে সর্বসাধারণের সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা। যাত্রীর চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ রেলের অবকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া। ট্রেনের টিকিট পরীক্ষক, তত্ত্বাবধায়কসহ অন্য দায়িত্বশীল ব্যক্তির কর্মকাণ্ড সার্বক্ষণিক নজরদারি ও শক্তিশালী তথ্য সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে রেলসেবার মান বাড়ানো। ট্রেনে ন্যায্য দামে খাবার বিক্রি, বিনা মূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ এবং স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
প্রসঙ্গত, গত মাসে রেলের টিকিট কিনতে গিয়ে হয়রানির শিকার হন ঢাবি ছাত্র মহিউদ্দিন। পরে ঈদুল আজহার আগে ৭ জুলাই থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সামনে অবস্থান ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু করেন তিনি। ১০ জুলাই ঈদের দিনও তিনি অবস্থানে ছিলেন। অবস্থানের তৃতীয় দিন ৯ জুলাই পুলিশের সদস্যরা তাঁকে বাধা দেন। তখন থেকে তিনি গণস্বাক্ষর বন্ধ রেখে ২৪ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। ১১ জুলাই মহিউদ্দিনের অবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে তাঁর সঙ্গে যোগ দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্র মোহাম্মদ মাহিন রুবেল ও কাজী আশিকুর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের ছাত্রী জয়া মণ্ডল।